মহানগরীর কদমতলী ও শ্যামপুর এলাকার জন দুর্ভোগসহ বিরাজমান সমস্যার উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, দুর্নীতি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সূচিত আন্দলোনের মাধ্যমে দেশকে আবার স্বাধীন করা হবে। জনগণের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতিবাজ, লুটেরাদের দুঃশাসন চলছে। জনগণের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে আগামী ৩০ তারিখ ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান ইশরাক হোসেন।
শুক্রবার কদমতলী থানাধীন ৬০ নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে বর্ণমালা স্কুলের সামনে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে ইশরাক হোসেন বলেন, গত নয় বছর যাদের অধীনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত হয়েছিল তাদের অবহেলা আর দুর্নীতির কারণে ঢাকা আজ বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলছে। বিশ্বের সবচেয়ে অবসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকা এখন এক নম্বরে রয়েছে। এছাড়া গত তিন দিন যাবত বায়ু দূষণের তালিকায়ও ঢাকার অবস্থান এক নম্বরে। সম্প্রতি নারী ও শিশুদের জন্য সব থেকে অনিরাপদ শহরের যে তালিকা করা হয়েছিল, সেখানেও ঢাকা এক নম্বর। এ থেকে উত্তরণের জন্য এবং ঢাকাকে বাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নির্ভয়ে ধানের শীষের প্রতীকে ভোট দিতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।
এসময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সালাউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা নবীউল্লাহ নবী, এসএম জিলানী, তানভির আহমেদ রবিন, শরিফ হোসেনসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী গণসংযোগে অংশ নেন।
সকাল সাড়ে দলটায় বর্ণমালা স্কুল থেকে গণসংযোগ শুরু হয়ে জাপানী মার্কেট, কদমতলা, মুরদপুর, পূর্ব জুরাইন, পোস্তগোলা আলম মার্কেট রোড, শ্যামপুর রোড, শ্যামপুর বাজার, শ্যামপুর সরকারি মডেল কলেজ হয়ে শ্যামপুর লাল মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, সরকার সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে যে বুলি আওড়াচ্ছে বাস্তবে তার কিছুই দেখতে পাচ্ছিনা। এলাকায় বিরাজমান সমস্যাগুলো ঘুরে দেখেছি। এলাকাবাসিও জানিয়েছে তাদের সমস্যাগুলোর কথা। বিশাল একটা নর্দমা রয়েছে, যে নর্দমার মধ্যে দিয়ে ময়লা-পচা পনি বয়ে যাচ্ছে। তার পাশে ঘনবসতি, কাঁচা বাজার রয়েছে। এটাই পুরো ঢাকা শহরের চিত্র। আমাদের প্রাণপ্রিয় ঢাকা নগরীকে এ সরকারে আমলে তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। তারা দেখাচ্ছে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি আসলেই ঢাকার অলিগলি পানির জোয়ারে ভেসে যায়। গত ১৩ বছরে এমন কোন অপকর্ম নেই যা এই সরকার করেনি। শেয়ার মার্কেট লুট, বাংলাদেশ ব্যাংকে লুট, ব্যাংকের ভল্ট থেকে সোনা লুট, সরকারি বাংকে লুট, বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় লুট করা হয়েছে। ভোটের ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন করা হয়েছিলো তা এই চিত্র দেখার জন্য নয়। সরকার এমনই উন্নয়ন করছে যে, পদ্মা সেতুর একটা করে পিলার বসিয়েই বিশাল প্রচারনা চালায়। আর অন্যটি কবে বসবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হয় কয়েক মাস। এই পদ্মা সেতু কবে শেষ হবে, কবে আমরা ব্যবহার করতে পারব সেটা আমরা কেউ জানি না। এই সেতু নির্মাণে এক টাকার জিনিস বিশ টাকায় কেনা হয়েছে। জনগণের টাকা অপচয় করা হয়েছে।
ইশরাক হোসেন বলেন, সরকারে অপশাসনে আমরা একদিকে দুঃখ দুর্দশায় র্জজরিত, অন্য দিকে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা সিংগাপুর, সুইজারল্যান্ড, ক্যানাডা, আমেরিকার ব্যাংকে পাচার করছে। জনগণের টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথানত না করার শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আপনারাও কারো কাছে মাথানত করবেন না। আমরা নির্বাচিত হলে জনগণের অধিকার জনগণকে ফিরিয়ে দিবো। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবো। বাংলাদেশকে আবার স্বাধীন করবো। আগামী ৩০ তারখে আপনারা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। কোন বাধা বিপত্তি মানবেন না। বিএনপি যে আন্দলনের সুচনা করেছে সে আন্দলনের শরিক হবেন। আগামি ৩০ তারিখে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ধানের শীষকে জয়যুক্ত করবেন। জনগণই দেশের মালিক। জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের মালিকানা ফিরিয়ে দিবো ইনশাল্লাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন