আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার না করার জন্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, কোন প্রার্থী বা পরিবারের প্রভাব পড়বে না নির্বাচনে। কারণ, দেশটা কারো পারিবারিক সম্পত্তি না।
আজ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) গোপীবাগের নিজ বাসায় নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন,‘আমি যতটুক জানি উনি (তাপস) একজন সজ্জন ব্যক্তি। আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থক এবং আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীর প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, নির্বাচনে কোন প্রকার ইনফ্লুয়েন্স করবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকবেন তারা নিরপেক্ষভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। এরপরে নির্বাচনী ফলাফল যা হবে আমরা তা মেনে নেব। কিন্তু এতে কারচুপি হলে জনগণ কোনভাবেই সেটা মেনে নেব না।’
আপনাদের শারীরিকভাবে বা প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ প্রতিপক্ষ বলছেন সঠিক নয়- এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইশরাক হোসেন বলেন, আমার পাশে এখনো মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে একজন দাঁড়িয়ে আছেন। উনার নাম আমিনুল ইসলাম উনি ৫৬ ওয়ার্ডের কামরাঙ্গীরচর এলাকার আমাদের একজন কর্মী। সে গতকাল শুক্রবার আধানের শীষ প্রতীকের প্রচারণা চালানোর সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালায়। আর কে অস্বীকার করল না করল সেটাতে কিছু যায় আসে না। বাস্তবতাতো থেকেই যায়। তার মত আরো অনেককেই আহত করা হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে আমাদের ৪১ নম্বর কাউন্সিলর প্রার্থীকেও ফিজিক্যালি আহত করা হয়েছে। আমি এবিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি । তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। তারপরও বলবেন সঠিক নয়!
দেশটা কারো জমিদারি নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরাও কারো কথায় পরোয়া করিনা। উনারা কি বললেন, না বললেন সেটা তো কিছু যায় আসে না। যেটা দৃশ্যমান সেটা আপনারাতো দেখতেছেন। এটা কারো নিজের দেশ না। এটা আমাদেরও দেশ। এখানে কারো জমিদারি চলবে না। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সবার সমান অধিকার।
আপনার প্রতিপক্ষ মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগ পরিবারের সস্তান, তার দল ক্ষমতায়, তার ফুফু দেশের প্রধানমন্ত্রী, তিনি কি ফুফুর ক্ষমতার জোরে প্রভাবে জয়ী হবেন কিনা এমন প্রশ্নে ইশরাক বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। আমার প্রতিপক্ষ কোন পরিবারের সেটা আমি বড় করে দেখতে চাই না। কারণ এই দল থেকে যারা মনোনয়ন পাবে সবাই তো দলের অবৈধ সুযোগ সুবিধা পাবে। আর এটাই স্বাভাবিক। কারণ তারা তো রাষ্ট্রযন্ত্র দলীয়করণ করেছে। আর কে কোন পরিবারের সেটা আমার দেখার বিষয় না। এই দেশটার মালিক হচ্ছে জনগণ। এ দেশটা কারো পরিবারের সম্পত্তি নয়। আমি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবো। জনগণকে সাথে নিয়ে এই স্বৈরাচারকে বিদায় করব।
অনেকদিন হয়ে গেল নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন, জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাবে কিনা এ বিষয়ে তাদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পেয়েছেন জানতে চাইলে ইশরাক হোসেন বলেন, খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। প্রথম দিকে প্রচারণায় তারা আমাদের বলেছিলেন, আমরা কি ভোট দিতে পারব? তারা গত নির্বাচনের আলোকে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এবার যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তারা নিজেরাই সংকল্পবদ্ধ হয়েছেন এবার ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং ধানের শীষে ভোট দিবেন।
ভোট কেন্দ্রে পাহারা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্র পাহারা বলতে কোন কিছু নেই। কেউ যদি বলে থাকে সেটা ইনফরমাল ল্যাঙ্গুয়েজে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হয়। এবারও আমরা সেটা করব। এবার নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যারা নিযুক্ত থাকবেন তারা সততার সঙ্গে এবং জনগণের সঙ্গে কাজ করবেন বলে আমি আশা করি। কারণ তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে জনগণের প্রতি। তারা কোনো দলীয় ক্যাডার বাহিনী নয়। আমরা তাদের সহযোগিতা করব। আমরা আশা করছি সবার সার্বিক সহযোগিতায় একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন