ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা
নদী দখল করে, বাঁধ দিয়ে অবাধে চলছে মাছ নিধন। নদীর মধ্যে পুকুর কেটে করা হচ্ছে মাছ চাষ। আবার নদীর জমি দখল করে মার্কেট তৈরি করা হচ্ছে। আর প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিনিয়ত এই কাজটি করে চলেছে প্রভাবশালী একটি মহল। এতে করে একদিকে যেমন পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি মাছের প্রজননও হুমকির মুখে পড়েছে। এমনই এক অসহায় নদী হচ্ছে ঝিনাইদহের চিত্রা। সদরের গোবিন্দপুর, মোহাম্মদপুর, বংকিরা, ওয়াড়িয়া, চোরকোল, শ্রীপুর, কোটচাঁদপুরের লক্ষ্মীপুর, ইকড়া, ফাজিলপুর, জালালপুর, কালীগঞ্জের শালিখা, মস্তবাপুর, ফরাসপুর, বারইপাড়া, সিংগী, গোমরাইল, নগর চাপরাইল, একতারপুর, বনখির্দ্দা, ইছাখালীসহ একাধিক গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, নদীর মধ্যে শতাধিক পুকুর কাটা হয়েছে। পুকুর কাটার ফলে নদী একবারেই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার অনেকেই নদীর মধ্যে বাঁধ দিয়ে ডিমওয়ালা মাছ ধরছেন। বিষয়টি সম্পূর্ণ অবৈধ হলেও দেখার কেউ নেই। মৎস্য কর্মকর্তারা কোনো দায়িত্ব পালন করেন না। তারা অফিসে আসেন, সরকারি টাকায় কিছু ট্রেনিং করান। মাস শেষে বেতন নিয়ে চলে যান। তাদের কোনো সামাজিক দায়িত্ব নেই। ধোপাবিলা গ্রামের মানুষ অভিযোগ করেন, বংকিরার কিছু মানুষ নদী দখল করে পুকুর কেটেছে। পুকুর কাটার ফলে নদী ছোট হয়ে গেছে। কিন্তু প্রশাসনের কোনো নজর নেই। কালীগঞ্জের চাপরাইল গ্রামের নাজমুল ইসলাম জানান, দেশে অনেক আইন আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। গত বছর ভ্রাম্যমাণ আদালত সোনাতন মালোকে এক হাজার ও বারইপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তিকে ১৫শ টাকা জরিমানা করেন। অথচ জরিমানা দেয়ার কয়েকদিন পর থেকে তারা আবারও নদীতে বাঁধ দেয়। আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাস জানান, বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এক-দুই হাজার টাকা জরিমানা করে কোনো লাভ নেই। কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইদুর রহমান রেজা জানান, নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা আইনত দ-নীয় অপরাধ। নদীতে যদি বাঁশ ও মশারি দিয়ে বাঁধ দেয়ায় মাছের প্রজননে সমস্যা হয়, রেণুু পোনা মারা যায় তাহলে আপানারা তথ্য দিয়ে সহায়তায় করলে ইউএনও স্যারকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হবে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানোয়ার হোসেন জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা খুব শিগগিরই এব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন