শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফতুল্লায় শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ

ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সহায়তা ও ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দেওয়ায় যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:৫৩ পিএম

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, ধর্ষক মোঃ তুর্য এবং যুব লীগ নেতা আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে দর্জি শ্যামল। দর্জি শ্যামল ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়ন যুব লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তাকে ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে কাশীপুর খিলমার্কেট এলাকার নিজ বাসা থেকে শ্যামলকে এবং একই এলাকার অপর একটি বাসায় পালিয়ে থাকা অবস্থায় তুর্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধর্ষক তুর্য কাশীপুর খিল মার্কেট এলাকার মৃত মনির হোসেনের ছেলে এবং শ্যামল একই এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে।
এদিকে গতকাল দুপুরে যুব লীগ নেতা দর্জি শ্যামলকে থানা থেকে আদালতে পাঠানোর সময় ফটো সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে শ্যামলের সহযোগিরা ৩ ফটো সাংবাদিকের উপর চড়াও হয় এবং ক্যামেরা কেড়ে নেয়।
গত রোববার বিকেলে নিজ বাসা থেকে প্রতিবেশির বাসায় আরবি পড়তে যাবার সময় ওই কিশোরীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় তুর্য ও তার সহযোগিরা। পরে নিজের বাসায় আটকে রেখে ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে তুর্য। খবর পেয়ে কিশোরীর পরিবার তুর্যর বাসা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে। ওই সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে যুব লীগ নেতা দর্জি শ্যামল বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে ধর্ষক তুর্যকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। কিশোরীর মা এ ঘটনায় মামলা করতে চাইলে শ্যামল তাদের হুমকি ধমকি দেয়। একারণে মামলায় ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সহায়তা করা ও ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে শ্যামলকেও আসামী করা হয়।
এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা বাদি হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় সোমবার ধর্ষক তুর্য ও তাকে সহায়তাকারী শ্যামলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২-৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, ধর্ষণের শিকার কিশোরী জন্মগত ভাবেই কিছুটা শারীরিক প্রতিবন্ধী। প্রতিবেশির বাড়িতে সে প্রতিদিন বিকেলে আরবি পড়তে যায়। ওই সময় তুর্য কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। মেয়েটি সেই প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিতো তুর্য। এ ব্যাপারে প্রতিকার পাওয়ার জন্য যুব লীগ নেতা শ্যামলের দ্বারস্থ হয় মেয়েটির পরিবার।
এদিকে গত রোববার বিকেলে আরবি পড়ার জন্য বাসা থেকে বের হয় কিশোরীটি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ফিরে না আসায় মেয়ের খোঁজ শুরু করেন তার পরিবার। জানতে পারেন যে, মেয়েটি ঘটনার দিন প্রতিবেশির বাড়িতে আরবিই পড়তে যায়নি। এক পর্যায়ে জানতে পারেন মেয়েটিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গেছে তুর্য ও তার কয়েকজন সহযোগি। এ খবর পেয়ে ওইদিন রাত ৯টার দিকে তুর্যর বাড়িতে গিয়ে দেখেন বাসাটি বাইরে থেকে তালা লাগানো। তবে দরজার সামনে তুর্যর কয়েকজন সহযোগি দাঁড়ানো। ওই সময় তুর্যর সহযোগিরা চলে গেলে মেয়েটের পরিবার স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে বাসার দরজায় টোকা দিলে ভেতর থেকে মেয়েটির কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। ওই সময় বাসার দরজা খোলা হলে সেখানে পৌঁছেন যুবলীগ নেতা শ্যামল। তিনি এ ঘটনার আপোষ মিমাংসার জন্য বললে মেয়েটির পরিবার তাতে রাজি না হয়ে মামলার করার কথা জানালে শ্যামল ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েটির পরিবারকে গালিগালাজ করে এবং হুমকি ধমকি দিতে থাকে। ওই সময় শ্যামলের প্রশ্রয়ে তুর্য ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত শ্যামলের বিরুদ্বে চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই,মাদক সহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি সন্ত্রাসী ও বখাটেদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন