বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত ওয়ার্ড চান কাউন্সিলর প্রার্থী মোজাম্মেল

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:৪২ পিএম | আপডেট : ৬:৫৭ পিএম, ৩১ জানুয়ারি, ২০২০

রাত পোহালেই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোটাধিকারের মাধ্যমে দুই সিটির জনগণ বেছে নেবেন তাদের নগরপিতা এবং নিজ নিজ এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসিসি) গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র মতিঝিল, দিলকুশা, ফকিরেরপুল, আরামবাগ ও বঙ্গভবন এলাকা নিয়ে গঠিত ৯ নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. মোজাম্মেল হকের লক্ষ্য সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড গড়ে তোলা। শুধু তাই নয়, ক্লাবপাড়া খ্যাত তার ওয়ার্ডের আরামবাগ, ফকিরেরপুলকে ক্যাসিনোমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

ব্যবসায়ীক এলাকা হিসেবে ৯ নং ওয়ার্ডের সুখ্যাতি থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে মতিঝিল ক্লাব পাড়ার ক্যাসিনো কর্মকান্ড নতুনভাবে এখানকার পরিচিতি এনে দিয়েছে। মতিঝিলের ক্লাবগুলোতে বেশ ক’বছর ধরে ক্যাসিনো বা জুয়ার আড্ডা পরিচালিত হওয়ায় এখানকার পরিবেশ যেমন হয়েছে দুষিত, ঠিক তেমনি বছরের পর বছর ব্যবসায়ীরা জিম্মি থেকেছেন একশ্রেণীর অসাধু রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হাতে।

কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে এলাকার পরিবেশ বদলে দিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড গড়ে তুলবেন বলে ইনকিলাবকে জানান মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন,‘ক্লাবকেন্দ্রিক ক্যাসিনোকে ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে এই এলাকার যে বদনাম হয়েছে আমি নির্বাচিত হলে তা ঘোচানো হবে। ক্লাবগুলো ফিরিয়ে আনা হবে খেলাধুলার পরিবেশ। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ীরা যাতে নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারেন তার নিশ্চয়তাও দেয়া হবে। দূর করবো চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস। মাদক ব্যবসায়ীরা যাতে আমার এলকায় প্রভাব খাটাতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।’

৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরিচ্ছন্ন ইমেজের ত্যাগী রাজনীতিবিদ মোজাম্মেল হক দলীয় মনোনয়ন পেয়েই কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে তার প্রতীক ঘুড়ি।

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন,‘সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে বর্তমানে যে উৎসবমুখর পরিবেশ রয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত বজায় রাখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরাট ভূমিকা রয়েছে। কেউ যাতে ভয়-ভীতি বা হুমকি-ধমকি দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশে বিঘœ ঘটাতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে। কোনো অপশক্তি যাতে বিতর্কিত কারও পক্ষে নীরবে বা সরবে কাজ করতে না পারে, সেটিও নিশ্চিত করা জরুরি। মোজাম্মেল হক আরো বলেন, ‘আমি এই ওয়ার্ডের জনগণকে কথা দিচ্ছি, নির্বাচিত হতে পারলে আমার এলাকায় কোনো চাঁদাবাজি থাকবে না। প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে মাদক ও ছিনতাইমুক্ত এলাকা গড়ে তুলব। যারা মাদকসেবী তাদের পরিবারকে নিয়ে বসব। সন্তানদের মাদক থেকে দূরে রাখতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। যারা মাদক ব্যবসায়ী তাদের অনুরোধ করব এখন এই পথ ছাড়ূন। আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী যোগ করেন, ‘এলাকায় যেসব রাস্তা ভালো নেই, তা সংস্কার করা হবে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এলাকা গড়তে বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতাবোধ তৈরি করব আমি। ডেঙ্গুমুক্ত এলাকা গড়ে তুলতে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা আছে। এ কাজে তাদেরও এগিয়ে আসার অনুরোধ করব।’

ফকিরেরপুল এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মোজাম্মেল হক আরো বলেন,‘আমি নির্বাচিত হলে এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবী একটি কমিউনিটি সেন্টার ও শিশুদের খেলাধুলার জন্য একটি মিনি পার্ক তৈরি করব। তৈরি করা হবে একটি পাঠাগার। আরামবাগ ও ফকিরেরপুল এলাকায় একটি মাত্র হাইস্কুল রয়েছে। এই সংখ্যা যাতে বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা করব। এলাকায় শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করব। কিশোর গ্যাং কালচার সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হবে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমৃত্যু এলকার মানুষের সেবা করে যেতে চাই আমি। আমার নির্বাচনী এলাকাকে মডেল ওয়ার্ড হিসেবে তৈরি করব আমি। সব কাজ হবে জাবাবদিহীতার মাধ্যমে। দায়িত্বপালনকালে এলাকার মুরুব্বি ও যুব সমাজকে নিয়ে যে কোন সমস্যা সমাধানে কাজ করব আমি।’

এই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা একেএম মমিনুল হক সাঈদ ক্যাসিনো কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কিছুদিন আগে বরখাস্ত হয়েছেন। ক্লাবপাড়ায় ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা সহ নানা অভিযোগ উঠেছে তাকে ঘিরে। যে কারণে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি সাঈদ। বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করলেও সিটি নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

কিন্তু গেল একমাসে ফকিরেরপুল-আরামবাগ এলাকাসহ ওয়ার্ডের কোথাও সাঈদের কোন প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়েনি। সাঈদ ছাড়াও তার স্ত্রী ফারহানা আহম্মেদ বৈশাখী ঠেলা গাড়ি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। প্রচার-প্রচারণাও করেছেন বেশ জোরেসরে। ব্যাডন্টিন র‌্যাকেট প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ফকিরেরপুল এলাকার আরেক স্থায়ী বাসিন্দা আসলাম মানিক। আর বিএনপি এই ওয়ার্ডে মনোনয়ন দিয়েছে আনোয়ার হোসেন আনুকে। তার প্রতীক রেডিও। স্থানীয়দের মতে সবদিক বিবেচনায় মো. মোজাম্মেল হক এগিয়ে রয়েছেন অন্যসব প্রার্থীর চেয়ে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন