সৈয়দ নাজমুল ইসলাম, উজিরপুর (বরিশাল) থেকে
বরিশালের উজিরপুরে তাপদাহের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের তীব্র লোডশেডিং। লোডশেডিংয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লো-ভোল্টেজ আর বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিদ্যুতের এহেন যন্ত্রণায় আর আষাঢ়ের দিনের বেলায় তীব্র রোদ আর রাতের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ উজিরপুরবাসী। বিদ্যুতের
লাগামহীন সঙ্কট দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই সাথে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। বিদ্যুতের ভেলকিবাজির কারণে গণহারে নষ্ট হচ্ছে বাসা-বাড়ি ও দোকানে রাখা ফ্রিজের রাখা মূল্যবান খাবার। নষ্ট হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী। দিনরাত ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার মধ্যে ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া গেলেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। এসময় নামাজিদের কষ্টের শেষ থাকে না। আষাঢ়ের কাঠফাটা রোদ আর ভ্যাপসা গরম অপরদিকে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে বয়স্ক মুসল্লিরা নামাজের সময় প্রায় মসজিদে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা ও শোনা যায়। পবিত্র মাহে রমজানে রোজা রেখে বিদ্যুৎ নিয়ে অসহনীয় ভোগান্তির কারণে এতটাই অসন্তষ্ট যে, ক্ষোভের কথাগুলো উজিরপুরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুসল্লিরা ইনকিলাবকে জানান, বছরে একমাস মুসলমানদের মহাপবিত্র মাহে রমজান প্রায় ১৬ ঘণ্টা সিয়াম সাধনার পর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইফতারের সময় ইফতার ও নামাজের সময় লাগে ৪০ মিনিট। তারাবি নামাজে প্রায় ১ ঘণ্টা, সাহরির সময় ৩০ মিনিট, জুমার নামাজ ১.৩০ মিনিট, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে তিন ঘণ্টা লাগে, এ সময়টুকুও বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। তারা বলেন, রমজানের পূর্বে বিভিন্ন পত্রিকার খবরে দেখেছিলাম বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে মিটিং করে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল যে, মাহে রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখা হবে। কিন্তু বাস্তবে হচ্ছে কি? তারা আরো বলেন, বিদ্যুৎমন্ত্রীর কাছে আমরা জানতে চাই, জনগণের কষ্টের কথা না ভেবে খেয়ালখুশি মতো দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আর আমরা নিরুপায় হয়ে বর্ধিত দামেই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছি। তারপরও বিল দিতে দেরি হলেই বিলম্বমাশুল ৫% দিতে হয়, এরপরেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। পুনরায় সংযোগ পেতে টাকা দিয়েও কাঠখড় পোড়াতে হয়। ট্রান্সফারমার কোনো কারণে বিকল বা চুরি হলে টাকা দিতে হয় গ্রাহককে। ভ্যাট, মিটার ভাড়া, সার্ভিস ও ডিমান্ড চার্জসহ কত কি দিতে হয়। এমনকি বিদ্যুৎ পেতে আবেদন করা থেকে শুরু করে খুটি, তার ও আনুষঙ্গিক মালামালের দাম, লেবার ও ক্যারিং খরচসহ বিদ্যুতের আলো জলা পর্যন্ত সকল খরচের টাকা অগ্রিম অফিসে জমা দেয়ার পরও বিদ্যুতের আলো দেখতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। অসহনীয় লোডশেডিং সম্পর্কে জানতে বরিশাল পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর প্রধান প্রকৌশলী হেম চন্দ্র বৈদ্য কে তার ০১৭৬৯৪০০০১৩ এই নাম্বারে একাধিকবার ফোন করার পরেও সে ফোনটি রিসিভ করেনি। অভিযোগ দফতরের প্রধান আরিফুর হক শামীম কে ০১৭৬৯৪০০৮৬৯ নাম্বারে বহুবার ফোন করে পাওয়া যায়নি। দায়িত্বে থাকা জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দুর্যোধন বালাকে তার ব্যক্তিগত ফোনে লোডশেডিং সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যেভাবে বিদ্যুৎ পাই সেভাবেই শিডিউল মতো সাপ্লাই দিয়ে থাকি। এখানে আমাদের কিছু করার নাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন