শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বিএসএফের আপত্তিতে পদ্মায় খেয়া চলাচল বন্ধ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তিতে রাজশাহীর পবা উপজেলায় পদ্মা নদীতে খেয়া পারাপার বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল শনিবার বিজিবির পক্ষ থেকে মাইকিং করে ওই এলাকা দিয়ে নৌকা না নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এখন উপজেলার চরখিদিরপুর, তারানগর ও নবীনগরে আর সরাসরি খেয়ানৌকা যেতে পারছে না। এর আগে বিএসএফের আপত্তির কারণে পবার চরমাঝারদিয়াড়ে সরাসরি খেয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বিএসএফের দাবি, ভারতের সীমানার ভেতর দিয়ে এসব নৌকা যাচ্ছে।
সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন বলছেন, এর আগে বিএসএফ এসব ছোটখাটো বিষয়ে নজর দেয়নি। তাদের মাঠেই বাংলাদেশি রাখাল গরু চরালেও তারা আপত্তি করেনি। গত অক্টোবরে রাজশাহীর চারঘাট সীমান্তের বড়াল নদের মোহনায় বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে গুলিবিনিময়ে বিএসএফের এক সদস্য মারা যান। তার পর থেকে বিএসএফ রাজশাহী সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু করেছে।

গত ৩০ জানুয়ারি বিএসএফ বাংলাদেশে গোদাগাড়ী সীমান্ত এলাকা থেকে পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। প্রথম দিন বিজিবির সঙ্গে পতাকা বৈঠকের পর বিএসএফ তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে। পরের দিন দুই দফা পতাকা বৈঠকের সময় পরিবর্তন করে। অবশেষে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছিল। অবশ্য তার আগেই পাঁচ বাংলাদেশিকে তারা থানায় সোপর্দ করেছে। এই পতাকা বৈঠকে বিজিবি গুগল মানচিত্র দেখিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে যে বিএসএফ বাংলাদেশের সীমানার ভেতর থেকে তাদের ধরে নিয়ে গেছে। তার পরও তারা মানতে চায়নি। একপর্যায়ে বিজিবিকে জানিয়েছে এমন ঘটনা ঘটলে তারা দুঃখিত।

গত ২২ জানুয়ারি রাজশাহীর পবা উপজেলার ১০ নম্বর চর এলাকা থেকে বিএসএফ ৪০০ বাংলাদেশি গরু ও ভেড়া ধরে নিয়ে যায়। এর চার দিন পরে তিন দফা পতাকা বৈঠক করে তারা গরু-ভেড়াগুলো ছেড়ে দেয়। এর আগে গোদাগাড়ী খরচাকা এলাকা থেকে ১৮টি মহিষ ধরে নিয়ে যায়। চার দিন পরে পতাকা বৈঠক করে সেগুলো ছেড়ে দেয়। এর কিছুদিন আগে বাঘা সীমান্ত থেকে দুই দফায় চারজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পতাকা বৈঠকের পর দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয় আর বাকি দুজনকে ভারতের থানায় সোপর্দ করা হয়।

পবার চরখিদিরপুরে প্রতিদিন খেয়ানৌকায় যাত্রী পারাপার করেন মাঝি আলমগীর হোসেন। তাঁর বাড়ি চরখিদিরপুর গ্রামেই। তিনি বলেন, নদীভাঙনের কারণে চরতারানগরের বিরাট অংশ পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে কয়েটি সীমানা পিলারও ভেঙে পড়েছে। নদী খানিকটা ভারতীয় সীমানায় ঢুকে পড়েছে। এবার নদীর মাঝে একটু বেশি চর পড়ার কারণে ভারতীয় সীমানার ওই জলসীমা দিয়েই এত দিন তাঁরা খেয়া নৌকা পারাপার করেছেন। এখন ওই এলাকায় যেতে না পারলে সরাসরি খেয়া নৌকায় শহর থেকে চরে যাওয়ার আর কোনো পথ নেই।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাজশাহীর-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিএসএফ একটি পত্র দিয়ে তাদের জানিয়েছে, খেয়ানৌকা তাদের ক্যাম্পের খুব কাছ দিয়ে পার হচ্ছে। তাদের দেশের জলসীমার ভেতর দিয়ে তারা কোনো বাংলাদেশের নৌচলাচল করতে দেবে না।
অধিনায়ক ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, একেবারে ক্যাম্পের পাশ দিয়ে নৌকা যাওয়ার কারণে ওরা একটু ভয়ও পাচ্ছে। তা ছাড়া স¤প্রতি বিএসএফ সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে। এখন তাদের সঙ্গে পত্রালাপ করে বিষয়টি মীমাংসা না করে বিজিবি চাচ্ছে না যে কেউ সেখানে দিয়ে পার হতে গিয়ে বিপদে পড়–ক। আর গরু-ছাগল এখন তাদের মাঠে গেলে তারা অভিযোগ করছে যে বাংলাদেশের গরু-ছাগল ভারতের খেত খেয়ে ফেলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন