বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

করোনাভাইরাস শনাক্তকারী কিট বিক্রি করবে তুরস্ক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৪:৪৫ পিএম

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত করোনাভাইরাস শনাক্তকারী কিট রফতানি করতে যাচ্ছে তুরস্ক। গতকাল শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, এই কিট দিয়ে দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব হবে। কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তানে এসব কিট রফতানি করা হবে।

করোনাভাইরাসে কোনো লক্ষণ দেখা দেয় না। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে দেড় হাজারের বেশি লোক মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ হাজার। -খবর রয়টার্সের

চলতি মাসের শুরুতে চীনের উহান থেকে ৪২ তুর্কি নাগরিককে ফিরিয়ে নিয়ে আসে তুরস্ক। তাদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন করে রাখার সময় পরীক্ষাও করা হয়েছে। উহানফেরতদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার সময় পার হয়ে যাওয়ার পর তুর্কি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেট্টিন কোকা বলেন, করোনাভাইরাস নির্ণয়ে তুর্কি কিটের নির্ভুলতার হার ৯৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপাত্ত অনুসারে এসব কিট উৎপাদন করা হয়েছে। এতে ৯০ থেকে ১২০ মিনিটের মধ্যে এতে ফল যাওয়া হয়। যেটা জার্মানি ও ফ্রান্সের তুলনায় কম সময়ে ভাইরাস শনাক্তে সক্ষম হচ্ছে।

তুরস্কের কাছে দশ হাজার কিট চেয়ে আবেদন করেছে কিরগিজস্তান ও উজবেকিস্তান। কোকা বলেন, আসছে দিনগুলোতে তারা এই কিট রফতানি শুরু করবেন। চাহিদা অনুসারেই আমরা এসব পণ্য উৎপাদন করবো।

জানা মতে, তুরস্কে কোনো করোনাভাইরাস রোগী নেই। বিমানবন্দরে থার্মাল ক্যামেরাসহ বিভিন্ন সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি।
এদিকে চীনে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য চিকিৎসক, ওষুধ এমনকি প্রয়োজনীয় ‘কীট’ও পাওয়া যাচ্ছে না। আর এভাবেই চীনের অসংখ্য কোয়ারান্টাইনে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সপ্তাহদুয়েক আগে উহানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ ফুটে উঠেছিল দুই ভাই জিয়াংগাই এবং জিয়াংইউ ওয়াং-এর শরীরে। কিন্তু, কিটের অভাবে রক্তপরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি, তাই ঠাঁই হয়নি কোনও হাসপাতালে। অগত্যা একটি হস্টেলে তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু, সেখানে না ছিলেন কোনও চিকিৎসক না চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা। একদিন সকালে উঠে জিয়াংগাই দেখেন, পাশে পড়ে রয়েছে দাদার প্রাণহীন দেহ। বিনা চিকিৎসাতেই চলে যান তিনি। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে একটি শকট ভ্যান পাঠানো হয়েছিল মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য। সৎকার করা গেলেও কোনও আচার পালনের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন।

দাদার মৃতুর পর হস্টেলে থাকতে অস্বীকার করেন জিয়াংগাই। তখন এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। সেখানে শুধু তাঁর স্ত্রী যেতেন তাঁকে খাবার দিতে, সম্প্রতি তিনিও আক্রান্ত হয়েছেন। তার পর থেকে কার্যত অনাহারে দিন কাটছে জিয়াংগাই-এর। দুর্দশার কথা জানিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে ইমেল করেন তাঁর মেয়ে। তারাই হাসপাতালের বন্দোবস্ত করে দেয়। হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয়, ‘একটি বেড খালি আছে।’ এবার বিপত্তি বাধে যানবাহন নিয়ে! রাস্তাঘাট তো সুনসান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে কীভাবে? ওয়াং পরিবারের বক্তব্য, তাঁদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, হাসপাতালে পৌঁছতে হবে নিজেদের দায়িত্বেই। শেষ পর্যন্ত একটি হুইলচেয়ারে বসিয়ে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার পথ নিয়ে যাওয়া হয় জিয়াংগাই-কে। এভাবেই হাসপাতালে পৌঁছান তিনি। সিটি স্ক্যান করার পর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা একেবারেই ভালো নয়। জিয়াংগাই-এর একমাত্র কন্যার কাতর প্রশ্ন, ‘আমাদের কী দোষ? কেন এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে আমাদের?’ প্রশ্ন আছে কিন্তু জিনপিং-এর দেশে এর উত্তর দেওয়ার লোক নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন