মালিকের প্রতি জার্মান শেফার্ডের ভক্তি নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। মালিকের জীবন বাঁচাতে অনেক সময় নিজের জীবনও বিলিয়ে দেয় শেফার্ডা। কিন্তু মালিকের স্তন ক্যানসার শনাক্ত করেছে শেফার্ড। এমন কথা আগে কখনো শুনেছেন? অবাক হলেও এটাই বাস্তব।
পোষা দুই শেফার্ডের সাহায্যেই যথা সময়ে ধরা পড়ল মালিক মহিলার স্তন ক্যানসার। তাদের সৌজন্যে চিকিৎসা করিয়ে মহিলা পেলেন নতুন জীবন। শেফার্ড নিয়েই চলাফেরা করেন ইংল্যান্ডের ওয়েলসের লিন্ডা মাংকল (৬৫)। চারটি জার্মান শেফার্ডের দেখাশোনা করতেই তার সময় কেটে যায়। এর মধ্যে দুই শেফার্ড বিয়া ও তার সন্তান ইনিয়া মালিকের যেন কোলছাড়া হতেই চায় না।
লিন্ডা মাংকল স¤প্রতি বিয়া ও ইনিয়ার আচরণে অনেকটা ঘাবড়ে যান। কিন্তু সারাক্ষণ কী এমন আচরণ করেছিল? মহিলা জানান, একদিন বাড়ির সোফায় বসে থাকা অবস্থায় তার কোলে এক সঙ্গে উঠে যায় শেফার্ড মা ও মেয়ে। তিনি খেয়াল করেন তারা নাক দিয়ে তার স্তন শুঁকতে শুরু করেছে। মাথা দিয়ে স্তনে ধাক্কা দিচ্ছে। বারবার বারণ করা সত্তে¡ও তারা একই কাজ করে যাচ্ছিল। দিন যতই যেতে থাকে, ততই যেন স্তন নিয়ে তাদের মাথাব্যথা বাড়তে থাকে।
একদিন পোশাক বদল করতে গিয়ে অবাক হয়ে যান লিন্ডা। তিনি খেয়াল করেন তার স্তনে একটি মাংসপিন্ড তৈরি হয়েছে। যা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। দ্রুত ছুটে যান চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক এক মিনিট সময়ও নষ্ট না করে বেশ কয়েকটি পরীক্ষার কথা প্রেসক্রিপশনে লিখে দেন।
প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তিনি ম্যামোগ্রাফি করান। আর রিপোর্ট হাতে আসতেই জানা যায়, ওই মহিলার শরীরে বাসা বেঁধেছে ক্যানসার। কর্কট রোগ স্তনেই থাবা বসিয়েছে বলেই জানান চিকিৎসকেরা। শুরু হয় চিকিৎসা। কেমোথেরাপিও করাতে শুরু করেন লিন্ডা।
চিকিৎসা চলাকালেও বদলায়নি শেফার্ড বিয়া ও ইনিয়ার আচরণ। মুখে কিছু বলতে না পারলেও প্রতিনিয়ত তারা মালিকের স্তনে ধাক্কা দিয়ে ওই মাংসল পিন্ডের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে খবর নিতে থাকে। তবে তিনবার কেমোথেরাপি করানোর পর আপাতত সুস্থ লিন্ডা।
দুই শেফার্ডের ওমন আচরণের কথা লিন্ডা চিকিৎসককে জানান। এই কথা জানার পর প্রথম পর্যায়ে চিকিৎসকও হতবাক হয়ে যান। তবে পরে তিনি ওই মহিলাকে বলেন, ‘একটি বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে শুধুমাত্র গন্ধ শুঁকেই দুই শেফার্ড বুঝতে পারে মালিকের শরীরে কোনও কঠিন রোগ বাসা বেঁধেছে কি না। ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ ধরে ফেলাও অসম্ভব কিছু নয়।’
চিকিৎসক লিন্ডাকে মরণ ক্যান্সার থেকে নতুন জীবন ফিরে পাওয়ায় অবশ্যই বাড়ি গিয়ে দুই শেফার্ডকে ধন্যবাদ জানানোর পরামর্শ দেন। তিনি তার পোষা দুই শেফার্ডের জন্য নতুন জীবন পেয়ে অত্যন্ত খুশি। সূত্র : দ্য মিরর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন