‘ফুয়াদ বাংলাদেশ’ নামক একটি এনজিও সংস্থা গ্রাহকদেরকে ১৬ ভাগ লভ্যাংশের লোভ দেখিয়ে কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। এ সংস্থার দু’ প্রধান নির্বাহীর বাড়ি হচ্ছে, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘুনিয়া গ্রামে। ওই গ্রামের আলী আকবরের পুত্র ইব্রাহিম ও মাষ্টার আনোয়ার হোসেনের পুত্র আবদুল মন্নান। তারা ৫-৬ বছর দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে কাতারের দোহা মাইজার নামক স্থানে অবস্থান করে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছে বলে ভূক্তভোগিরা অভিযোগ করেছেন। এনজিও সংস্থাটি ব্যাংকের আদলে ডিপিএস, এসডিপিএস, ঋণ প্রদানসহ বিভিন্ন লাভজনক পদ্ধতি দেখিয়ে গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এ বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেয়। গতকাল শনিবার বিকালে প্রতারিত বেশ কজন গ্রাহক স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারির মধ্যে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের রাজার বিল গ্রামের মৃত ফতেহ্ ইউনুছ আহমেদ’র পুত্র শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, পত্রিকার হকার সমিতির সভাপতি মনির আহমদ অভিযোগ করেছেন, তাদের কাছ থেকে ওই দু’ প্রতারক বিভিন্ন লাভজনক ব্যবসা দেখিয়ে ৪০ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ব্যপারে শহিদুল ইসলাম চৌধুরী ইতিপূর্বে চকরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর থানা পুলিশ বেশ ক’বার অভিযুক্তদের বাড়িতে হানা দিলেও অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থাকায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ভুক্তভোগিরা আরো অভিযোগ করেন, এনজিও সংস্থা ফুয়াদ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫ কোটি টাকার জমি ক্রয় করে নিজের সংস্থার নামে। বর্তমানে এসব জমি দেখভাল করছে তার ছোট ভাই ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি মৌলানা এহেচানুল করিম। গ্রাহকরা ওই জমি বিক্রয় করে তাদের পাওনা পরিশোধের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে প্রতারক ইব্রাহিমের ছোট ভাই এহেচানুল করিম গ্রাহকরা টাকা ফেরত চাওয়ায় উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগকারিরা বলেন, ফুয়াদ বাংলাদেশ চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট, লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ, কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও, কক্সবাজার সদর ও চকরিয়া উপজেলায় অস্থায়ী ভাড়া অফিস খুলে কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পলাতক রয়েছেন। বর্তমানে অর্থলগ্নকারি কয়েক হাজার পরিবার তাদের মূলধন হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এ ব্যাপারে গ্রাহকরা ওই এনজিও সংস্থার কর্ণধার ইব্রাহিম ও আবদুল মন্নানকে খুঁজে বের করে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করে দেয়ার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাসহ পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অভিযুক্তদের না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন