ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, বর্তমান সিলেবাস থেকে নবী-রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামগণের জীবনরচিত বাদ দিয়ে রামকৃঞ্চ ও রামায়ণের ইতিহাস সংযোজন করা হয়েছে যা ৯৫% মুসলমানের ঈমান ও আমলে চরম আঘাত। তিনি বলেন, গরুকে মা সম্বোধন করে কোমলমতি শিশুদের হিন্দুত্বাদ শিখানো হচ্ছে। দেবদেবির নামে বলি দেয়া গরু বা পাঠা হালাল বলে শিখানো হচ্ছে। এভাবে সরকারের ছত্রছায়ায় মুসলমানিত্ব ধ্বংস করে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায় সময়ই বলে থাকেন আমি মুসলমান। আমি নামাজ পড়ি, কুরআন তেলাওয়াত করি এবং নাস্তিকদের ব্যাপারে বলেছেন ধর্মের উপর আঘাত করলে আমারও গায়ে লাগে। কাজেই ধর্ম ও ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করলে ছাড় দেয়া হবে না। অপরদিকে শিক্ষা আইন, শিক্ষানীতির মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হিন্দুত্ববাদের দিকে নিয়ে যাওয়া কার স্বার্থে। এসব অবিলম্বে বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে উঠলে সরকারের আখের রক্ষা হবে না।
সম্প্রতি রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে আয়োজিত বিশাল গণমিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন বাতিলের দাবিতে নগর সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিনের সভাপতিত্বে নগর সেক্রেটারী আহমদ আবদুল কাইয়ূম ও এইচ এম সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, আলহাজ আমিনুল ইসলাম, নগর সহ-সভাপতি আলহাজ আলতাফ হোসেন, শিক্ষক নেতা এবিএম জাকারিয়া, ছাত্রনেতা জিএম রুহুল আমীন, শ্রমিকনেতা মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, সৈয়দ ওমর ফারুক প্রমুখ।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ক্ষমতাসীন ধর্মনিরপেক্ষ মতাদর্শ বাস্তবায়নে ইসলাম ও ইসলামই একমাত্র বাধা। তাই তারা সিলেবাসের মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদের ঈমান ধ্বংস করে হিন্দুত্ববাদে ধাবিত করতেই নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। তিনি বলেন, কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের যৌনাচার শিক্ষার নামে অবাধ যৌনাচারে উদ্বুদ্ধ করছে।
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, শিক্ষামন্ত্রী নাস্তিক হওয়ায় তিনি কৌশলে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য সিলেবাসে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে চান। তিনি শিক্ষামন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেন।
অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, মুসলমানিত্ব ধ্বংসের চক্রান্ত বন্ধ এবং হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। মুসলমানিত্ব ধ্বংস করতে দিতে পারি না। কাজেই অবিলম্বে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ না করলে ঈমানদার জনতা মুসলমানিত্ব রক্ষায় রাজপথে নেমে আসবে। সরকারের মদদে এবার নাস্তিক্যবাদীরা পাঠ্য সিলেবাসে হাত দিয়েছে। তারা কৌশলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বেঈমান বানাতে চেষ্টা করছে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, স্কুল-কলেজ, মাদরাসার বিভিন্ন শ্রেণীর সিলেবাস থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম ইসলাম ও মুসলমানদের ঐতিহ্য ও চেতনা সমৃদ্ধ বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা ইত্যাদি বাদ দিয়ে তদস্থলে নাস্তিক ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের ভাবধারা সমৃদ্ধ বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা সংযুক্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র এদেশের মুসলমানরা মেনে নিবে না। সিলেবাসে যে সমস্ত অবাঞ্চিত বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে তা পঁচাব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে অপ্রয়োজনীয়। তিনি বলেন, সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা বাদ দিয়ে ৯৫% মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। নাস্তিক্যবাদীদের চক্রান্তে ইসলামী শিক্ষা, মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস তাহযীব, তামাদ্দুন বাদ দেয়া বা সংকোচন করা চলবে না। শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামী ও মুসলিম ঐতিহ্য বাদ দেয়ার চক্রান্ত দেশপ্রেমিক তাওহীদি জনতা বরদাশত করবে না। জীবনের বিনিময়ে হলেও নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন