শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের হতাশা

আলু চাষিদের মুখে হাসি

ইসমাইল খন্দকার, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে আলু চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। মৌসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়া আলু চাষিদের অনুক‚লে থাকায় চাষিরা এখন সোনায় সোহাগা। যদিও নির্দিষ্ট সময় আলু বপন করতে না পারা এবং আলু উৎপাদন কম হওয়া সত্যেও কৃষক আলুর ন্যায্য দাম পেয়ে খুশি। অন্যদিকে কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা হতাশায় ভোগছেন।
জানা যায়, গত কয়েক বছর লোকসানের কারণে এবছর কোল্ডস্টোরে আলু রাখতে চাচ্ছে না কৃষক। কোল্ড স্টোরেজে রাখার জন্য বস্তা, সুতলী, লেবার খরচ, গাড়ি ভাড়া ও স্টোরেজের ভাড়া দিয়ে আলুর মূল্য অনেক বেড়ে যায়। আর এ কারণে এবছর ন্যায্য দাম পাওয়ায় চাষিরা জমি থেকেই আলু বিক্রি করছে। আবার কিছু কৃষক দাম বেশি পাবার আশায় আলু গোলাতে (দেশিয় পদ্ধতিতে) রাখছে। তাই কৃষক স্টোরেজে আলু রাখতে আগ্রহী নন। আর এ কারনে কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা এখন হতাশ।
মৌসুমের শুরুতে যখন সেচের প্রয়োজন তখন বৃষ্টি হওয়া ও শীত বেশি থাকায় রোগবালাই কম লেগেছে তাই খরচের পরিমান কমে গেছে। অন্যদিকে ঔষধ কোম্পানিগুলো তেমন কোন ঔষধ বিক্রি করতে পারেনি। গত কয়েক বছর আলু চাষে লোকসানে কৃষক। তাই কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের মোটা অংকের লোকসান গুনতে হয়েছে।
উপজেলার ভূইরা গ্রামের ইদ্্িরস দেওয়ান বলেন, কোল্ডস্টোরেজে আলু রাখলে লস হয়। এবছর আলুর ভালো দাম পাওয়ায় জমি থেকেই ২ হাজার মন আলু ৪১৫ টাকা মন দরে বিক্রি করেছি। তবে এবছর আলুর ফলন কম হয়েছে। জমিতে বিক্রি করায় আমি ভালো দাম পেয়েছি। কোল্ড স্টোরেজে রাখলে আনুষাঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে লস হয়। তাই কিছু আলু স্টোরে না রেখে গোলায় রাখবো।
উপজেলার খিদিরপুর গ্রামের আশরাফ হোসেন জন্টু বলেন, গত ৪ বছর আমার প্রায় ১ কোটি টাকার মত লোকসান হয়েছে। লাভের আশায় এবছরও ১শ’ ৮০ বিঘা জমিতে আলু রোপন করেছি। জমি থেকেই ৪শ’ থেকে ৪২০ টাকা মন দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। তাই আমি এখন বিক্রি না করে অধিক লাভের আশায় কোল্ড স্টোরেজে রাখছি।
নেপচুর কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জিয়াউল ইসমাম বলেন, কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসা এখন বন্ধ হওয়ার পথে। কোল্ড স্টোরেজ ভাড়া ২০১৩ সালে ৮০ কেজির বস্তা ৩০০ টাকা ২০২০ সালে ছোট বস্তা ৫০ কেজি একি দামে আছে। ২০১৩ সালে আমাদের বিদ্যুৎ বিল ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে বিদ্যুৎ বিল বেড়ে ৬৫ থেকে ৭০ লাখ টাকা হয়েছে। ২০১৩ সালে লেবার বিল দিয়েছিলাম ১৮ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে দিয়েছি ৩৩ লাখ টাকা। এছাড়া স্টাফের বেতনসহ আনুষাঙ্গিক খরচ রয়েছে। আমাদের লভ্যাংশ থেকে প্রতিবছর খরচ হওয়ায় স্টোর চালানোই এখন কষ্ট হচ্ছে। যেখানে (৫০ কেজি) প্রতি বস্তা সরকারি মূল্য ৩২০/- টাকা সেখানে ১৮০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত রাখতে হচ্ছে। তাই আমরা দিন দিন লোকসানের কবলে পরছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, মৌসমের শুরুতে বৃষ্টি হওয়া ও শীত বেশি থাকা এবং ইউরিয়া সার কম ব্যবহার করায় কৃষক লাভবান হবে। আশা করা যাচ্ছে এবছর আলুর ফলন ভালো হবে এবং কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন