শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী বিশ্ব

জাতীয়তাবাদের জোয়ার থেকে শিক্ষা গ্রহণ

মোহাম্মদ বিন সালমান ৫

নিউইয়র্ক টাইম্স | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

এমবিএস-এর দাদা ৮ দশক আগে সউদী আরব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের মূল সহযোগীতে পরিণত করেছিলেন। এ কারণে এমবিএস সউদী আরবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাসক হিসাবে প্রতিপন্ন হতে পারেন।

এমবিএসের উত্থান তার দাদার মৃত্যুর ৬ দশক পর, যখন আরব বিশ্বের এই ধনীতম দেশটি মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। তেলের দরপতন দেশটির অর্থনৈতিক নাব্য শুকিয়ে দিয়েছে। দেশের ৩০ বছরের কম বয়সী ২ তৃতীয়াংশ নাগরিক কর্ম সংস্থানের ঝুঁকি এবং কঠোর সামাজিক বিধিনিষেধের যাঁতাকলে পিষ্ট। এরই মধ্যে বিশাল মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামিক স্টেটের জিহাদিরা ইরাক ও সিরিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং সউদী আরবে বোমার বিষ্ফোরণ ঘটায় এবং প্রতিপক্ষ রাষ্ট্র ইরান এই অঞ্চলে তার প্রভাব বিস্তারের জন্য সউদী আরবের অস্থিতিশীল অবস্থার সুযোগ নেয় ।

অতীতে তিক্ত সমস্যাগুলো মোকাবেলায় রাজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়। সাবেক মার্কিন বারাক ওবামা সউদী আরবের ব্যাপারে খুব সামন্যই আগ্রহ পোষণ করতেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে তিনি দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত মিত্র হিসাবে নাকচ করেছিলেন এবং মুসলিম বিশ্বে অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধির জন্য দেশটির ওহাবীবাদ রফতানির সমালোচনা করেছিলেন।

ওবামা প্রশাসন যখন ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তির প্রস্ততি নেয় তখন মার্কিন কংগ্রেস ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে সউদী আরবের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দিয়ে আইন পাস করে। সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত ১৯ ছিনতাইকারীর মধ্যে তাদের নেতা ওসামা বিন লাদেনসহ ১৫ জনই ছিলেন সউদী। উভয় পদক্ষেপই সউদী আরবের গালে চপেটাঘা করার শামিল ছিল। কারণ দেশটি তার সুরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল ছিল। সউদী আরব মার্কিন অস্ত্রের জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল এবং এর বিনিময়ে একটি নিশ্চিত আনুগত্যের প্রত্যাশা করেছিল।

সউদী আরবকে ইয়েমেনের যুদ্ধে জড়ানো, অর্থনীতিকে ঢেলে সাজানোর জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ, ওয়াল স্ট্রিট, হলিউড এবং সিলিকন ভ্যালি থেকে আকর্ষণীয় নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিয়োগ, অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অপহরণ এবং রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার জামাতা জ্যারেড কুশনারের সাথে অনন্য সম্পর্কটি জোরদার করার মাধ্যমে এমবিএস তার সমস্যাগুলিসহ আরো অনেক বিষয়েই পাল্টা আঘাত হানবেন।

রাজ্যের অভ্যন্তরে তিনি আলেমদের নিষ্ক্রিয় করবেন, চলচ্চিত্র ও কনসার্টের জন্য বিভিন্ন ভেন্যু খুলবেন, ঐতিহ্য ভাঙবেন এবং তার নিজের মাসহ অন্যান্য জ্ঞাাতিদের বন্দী করে রাখবেন এবং এমন একটি প্রযুক্তিগত স্বৈরাচারবাদ স্থাপন করবেন যা অন্যদের ফোনে তার গুপ্তচরদের কান পাততে সাহায্য করবে। পাশাপাশি সামাজিক গণমাধ্যমকে ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রণ করবেন এবং এমন এক ভয়াবহ হত্যার নেতৃত্ব দেবেন যা বিশ্বকে হতবাক করে দেবে।

পশ্চিমা দেশগুলিতেও জাতীয়তাবাদের জোয়ার বেড়ে গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার জন্য ব্রিটেনের ভোট এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচন স্ব স্ব দেশের নাগরিক এবং সরকারকে মিত্রদেশগুলির সাথে বন্ধন শিথিল করে রাষ্ট্রমুখী করেছে। এই দুটি ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে যে, রাজনীতিতে সামাজিক গণমাধ্যমে উগরে দেয়া আবেগের থেকে সত্যটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সত্যটি এমবিএস ভালভাবে শিখেছেন এবং নিজের রাষ্ট্রে এর প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। (চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Mike Rundle ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:৪৬ এএম says : 0
সৌদীর নিজস্ব কোন খেল-চাল বা পররাষ্ট্র নীতি নেই, সবকিছুই যুক্তরাষ্ট্রের কলকাঠি । যেদিন সৌদী সত্যিকারের স্বাধীন-সার্বভৌম হতে চাইবে তার পরিণতি লিবিয়া, ইরাকের মতই হবে । লিবিয়া, ইরাক এক সময় পশ্চিমের খুবই ভালো বন্ধু ছিল ।
Total Reply(0)
jack ali ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:৪৭ এএম says : 0
O Allah save Saudi Arabia from the hand of master of Iblees ......
Total Reply(0)
Monjur Rashed ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:৪৭ এএম says : 0
USA & Israel will eradicate Saudi Monarchy if they betray
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:৪৮ এএম says : 0
রাজতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে তারা সবই করতে পারে। আল্লাহ তাদের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করুক।
Total Reply(0)
Monjur Rashed ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:৪৮ এএম says : 0
It is very amazing that monarchy is still prevailing in this modern age. Western world raise their voice for democracy & human rights in third-world countries. But they remain silent in case of Gulf countries due to obedient governance.
Total Reply(0)
ash ১৬ মার্চ, ২০২০, ৭:১৯ এএম says : 0
THIS MAN SHOWING TO THE WORLD, HOW MUSLIMS HUNGRY FOR POWER !
Total Reply(0)
Monjur Rashed ১৬ মার্চ, ২০২০, ২:১৭ পিএম says : 0
Saudi Monarchy is a curse for Muslim Ummah. They are doing nothing except patronizing Wahhabi anarchy all over the world. President Obama, having Muslim paternal background, was able to recognize them prudentially.
Total Reply(0)
Monjur Rashed ১৬ মার্চ, ২০২০, ৩:২৬ পিএম says : 0
President Barak Obama, originating from Muslim paternal background, was able to recognize the Saudis prudentially.
Total Reply(0)
Mohammed Khan ১৭ মার্চ, ২০২০, ১০:৪১ এএম says : 0
Kind Attn: Respected Editor Do you know why your MBS arrested them. Please don't write about him again. Allah SWT will not forget you. Be careful. With best regards. সৌদিতে এবার ৩০০ সরকারি কর্মকর্তা আটক
Total Reply(0)
জামসেদ ১৭ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৭ পিএম says : 0
সউদী আরব আমেরিকা ও ইসরাইলের কথায় উঠে-বসে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন