শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুজিব শতবর্ষ সংখ্যা

অখন্ড ভারতে মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে না

শেখ মুজিবুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

অখন্ড ভারতে যে মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে না, এটা আমি মন প্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করতাম। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হিন্দু নেতারা ক্ষেপে গেছেন কেন? ভারতবর্ষেও মুসলমান থাকবে এবং পাকিস্তানেও হিন্দুরা থাকবে। সকলেই সমান অধিকার পাবে। পাকিস্তানের হিন্দুরাও স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বাস করবে। ভারতবর্ষের মুসলমানরাও সমান অধিকার পাবে। পাকিস্তানের মুসলমানরা যেমন হিন্দুদের ভাই হিসাবে গ্রহণ করবে, ভারতবর্ষের হিন্দুরাও মুসলমানদের ভাই হিসাবে গ্রহণ করবে। এই সময় আমাদের বক্তৃতার ধারাও বদলে গেছে। অনেক সময় হিন্দু বন্ধুদের সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ নিয়ে আলোচনা হত। কিছুতেই তারা বুঝতে চাইত না। ১৯৪৪-৪৫ সালে ট্রেনে, স্টিমারে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হত। সময় সময় এমন পর্যায়ে আসত যে, মুখ থেকে হাতের ব্যবহার হবার উপক্রম হয়ে উঠত। এখন আর মুসলমান ছেলেদের মধ্যে মতবিরোধ নাই। পাকিস্তান আনতে হবে এই একটাই স্লোগান সকল জায়গায়।
একদিন হক সাহেব আমাদের ইসলামিয়া কলেজের কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধিকে খাওয়ার দাওয়াত করলেন। দাওয়াত নিব কি নিব না এই নিয়ে দুই দল হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত আমি বললাম, ‘কেন যাব না, নিশ্চয়ই যাব। হক সাহেবকে অনুরোধ করব মুসলিম লীগে ফিরে আসতে। আমাদের আদর্শ যদি এত হালকা হয় যে, তার কাছে গেলেই আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চলে যাব। তাহলে সে পাকিস্তান আন্দোলন আমাদের না করাই উচিত।’ আমি খুলনার একরামুল হককে সাথে নিলাম, যদিও সে ইসলামিয়ায় পড়ে না। তথাপি তার একটা প্রভাব আছে। আমাকে সে মিয়াভাই বলত। আমরা ছয়-সাতজন গিয়েছিলাম। শেরে বাংলা আমাদের নিয়ে খেতে বসলেন এবং বললেন, ‘আমি কি লীগ ত্যাগ করেছি? না, আমাকে বের করে দেয়া হয়েছে? জিন্নাহ সাহেব আমাকে ও আমার জনপ্রিয়তাকে সহ্য করতে পারেন না। আমি বাঙালি মুসলমানদের জন্য যা করেছি জিন্নাহ সাহেব সারা জীবনে তা করতে পারবেন না। বাঙালিদের স্থান কোথাও নাই, আমাকে বাদ দিয়ে নাজিমুদ্দীনকে নেতা করার ষড়যন্ত্র।’ আমরাও আমাদের মতামত বললাম। একরামুল হক বলল ‘স্যার, আপনি মুসলিম লীগে থাকলে আর পাকিস্তান সমর্থন করলে আমরা বাংলার ছাত্ররা আপনার সাথে না থেকে অন্য কারও সাথে থাকতে পারি না। পাকিস্তান না হলে মুসলমানদের কি হবে?’ শেরে বাংলা বলেছিলেন, ‘১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব কে করেছিল, আমিই তো করেছিলাম! জিন্নাহকে চিনত কে?’ আমরা তাঁকে আবার অনুরোধ করে সালাম করে চলে আসলাম। আরও অনেক আলাপ হয়েছিল, আমার ঠিক মনে নাই। তবে যেটুকু মনে আছে সেটুকু বললাম। তাঁর সঙ্গে স্কুল জীবনে একবার ১৯৩৮ সালে দেখা হয়েছিল ও সামান্য কথা হয়েছিল গোপালগঞ্জে। আজ শেরে বাংলার সামনে বসে আলাপ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।
এদিকে মুসলিম লীগ অফিসে ও শহীদ সাহেবের কানে পৌঁছে গিয়েছে আমরা শেরে বাংলার বাড়িতে যাওয়া-আসা করি। তাঁর দলে চলে যেতে পারি। কয়েকদিন পরে যখন আমি শহীদ সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে যাই তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ‘কি হে, আজকাল খুব হক সাহেবের বাড়িতে যাও, খানাপিনা কর?’ বললাম, ‘একবার গিয়েছি জীবনে।’ তাঁকে সমস্ত ঘটনা বললাম। তিনি বললেন, ‘ভালই করছ, তিনি যখন ডেকেছেন কেন যাবে না?’ আরও বললাম, ‘আমরা তাঁকে অনুরোধ করেছি মুসলিম লীগে আসতে।’ শহীদ সাহেব বললেন, ‘ভালই তো হত যদি তিনি আসতেন। কিন্তু আসবেন না, আর আসতে দিবেও না। তাঁর সাথে কয়েকজন লোক আছে, তিনি আসলে সেই লোকগুলির জায়গা হবে না কোথাও। তাই তাঁকে মুসলিম লীগের বাইরে রাখতে চেষ্টা করছে।’

শহীদ সাহেব ছিলেন উদার, কোন সংকীর্ণতার স্থান ছিল না তাঁর কাছে। কিন্তু অন্য নেতারা কয়েকদিন খুব হাসি তামাশা করেছেন আমাদের সাথে। আমি খুব রাগী ও একগুঁয়ে ছিলাম, কিছু বললে কড়া কথা বলে দিতাম। কারও বেশি ধার ধারতাম না। আমাকে যে কাজ দেওয়া হত আমি নিষ্ঠার সাথে সে কাজ করতাম। কোনোদিন ফাঁকি দিতাম না। ভীষণভাবে পরিশ্রম করতে পারতাম। সেইজন্য আমি কড়া কথা বললেও কেউ আমাকে কিছুই বলত না। ছাত্রদের আপদে-বিপদে আমি তাদের পাশে দাঁড়াতাম। কোন ছাত্রের কি অসুবিধা হচ্ছে, কোন ছাত্র হোস্টেলে জায়গা পায় না, কার ফ্রি সিট দরকার, আমাকে বললেই প্রিন্সিপাল ড. জুবেরী সাহেবের কাছে হাজির হতাম। আমি অন্যায় আবদার করতাম না। তাই শিক্ষকরা আমার কথা শুনতেন। ছাত্ররাও আমাকে ভালবাসত। হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্ট সাইদুর রহমান সাহেব জানতেন, আমার অনেক অতিথি আসত। বিভিন্ন জেলার ছাত্রনেতারা আসলে কোথায় রাখব, একজন না একজন ছাত্র আমার সিটে থাকতই। কারণ, সিট না পাওয়া পর্যন্ত আমার রুমই তাদের জন্য ফ্রি রুম। একদিন বললাম, ‘স্যার, কোনো ছাত্র রোগগ্রস্ত হলে যে কামরায় থাকে, সেই কামরাটা আমাকে দিয়ে দেন। সেটা অনেক বড় কামরা দশ-পনেরজন লোক থাকতে পারে।’ বড় কামরাটায় একটা বিজলি পাখাও ছিল। নিজের কামরাটা তো থাকলই। তিনি বললেন, ‘ঠিক আছে, দখল করে নাও। কোনো ছাত্র যেন নালিশ না করে।’ বললাম, ‘কেউই কিছু বলবে না। দু’একজন আমার বিরুদ্ধে থাকলেও সাহস পাবে না।’
বেকার হোস্টেলে কতগুলি ফ্রি রুম ছিল, গরিব ছাত্রদের জন্য। তখনকার দিনে সত্যিকার যার প্রয়োজন তাকেই তা দেওয়া হত। আজকালকার মত টেলিফোনে দলীয় ছাত্রদের রুম দেয়ার জন্য অনুরোধ আসত না। ইসলামিয়া কলেজে গরিব ছেলেদের সাহায্য করবার জন্য একটা ফান্ড ছিল। সেই ফান্ড দেখাশোনা করার ভার ছিল বিজ্ঞানের শিক্ষক নারায়ণ বাবুর। আমি আর্টসের ছাত্র ছিলাম, তবু নারায়ণ বাবু আমাকে খুব ভালবাসতেন। তিনি যদিও জানতেন, আমি প্রায় সকল সময়ই ‘পাকিস্তান, পাকিস্তান’ করে বেড়াই। ইসলামিয়া কলেজের সকল ছাত্রই মুসলমান। একজন হিন্দু শিক্ষককে সকলে এই কাজের ভার দিত কেন? কারণ, তিনি সত্যিকারের একজন শিক্ষক ছিলেন। হিন্দুও না, মুসলমানও না। যে টাকা ছাত্রদের কাছ থেকে উঠত এবং সরকার যা দিত, তা ছাড়াও তিনি অনেক দানশীল হিন্দু-মুসলমানদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে জমা করতেন এবং ছাত্রদের সাহায্য করতেন। এই রকম সহানুভ‚তিপরায়ণ শিক্ষক আমার চোখে খুব কমই পড়েছে।

এই সময় আমি বাধ্য হয়ে কিছুদিনের জন্য ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হই। অনেক চেষ্টা করেও দুই গ্রুপের মধ্যে আপোস করতে পারলাম না। দুই গ্রুপই অনুরোধ করল, আমাকে সাধারণ সম্পাদক হতে, নতুবা তাদের ইলেকশন করতে দেয়া হোক। পূর্বের দুই বৎসর নির্বাচন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় করেছি। ইলেকশন আবার শুরু হলে আর বন্ধ করা যাবে না। মিছামিছি গোলমাল, লেখাপড়া নষ্ট, টাকা খরচ হতে থাকবে। আমি বাধ্য হয়ে রাজি হলাম এবং বলে দিলাম তিন মাসের বেশি আমি থাকব না। কারণ, পাকিস্তান ইস্যুর ওপর ইলেকশন আসছে, আমাকে বাইরে বাইরে কাজ করতে হবে। কলেজে আসতেও সময় পাব না। আমি তিন মাসের পদত্যাগপত্র দিয়ে আরেকজনকে সাধারণ সম্পাদক করে দেই।

১৯৪৫ সালের গোড়ার থেকেই ইলেকশনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ১৯৪৬ সালের মার্চ মাসে ইলেকশন হবে, সমস্ত ভারতবর্ষব্যাপী মুসলমানরা ‘পাকিস্তান’ চায় কি চায় না তা নির্ধারণ করতে। কারণ, কংগ্রেস দাবি করে যে, তারা হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন। নজির হিসাবে তারা বলেন, মওলানা আবুল কালাম আজাদ কংগ্রেসের সভাপতি। এ কথা সত্য যে, কয়েকজন খ্যাতনামা মুসলমান নেতা তখন পর্যন্ত কংগ্রেসে ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল যে, ভারতবর্ষ এক থাকলে দশ কোটি মুসলমানের উপর হিন্দুরা অত্যাচার করতে সাহস পাবে না। তাছাড়া কতগুলি প্রদেশে মুসলমান সংখ্যাগুরু আছে। আর যদি পাকিস্তান ও হিন্দুস্থান দুইটা রাষ্ট্র হয়, তবে হিন্দুস্থানে যে সমস্ত মুসলমানরা থাকবে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। অন্যদিকে মুসলিম লীগের বক্তব্য পরিষ্কার, পাকিস্তানের হিন্দুরাও সমান নাগরিক অধিকার পাবে। আর হিন্দুস্থানের মুসলমানরা সমান নাগরিক অধিকার পাবে। লাহোর প্রস্তাবে একথা পরিষ্কার করে লেখা আছে।
দৈনিক আজাদই ছিল একমাত্র বাংলা খবরের কাগজ, যা মুসলিম লীগ ও পাকিস্তান আন্দোলনকে সমর্থন করত। এই কাগজের প্রতিষ্ঠাতা ও মালিক মওলানা আকরম খাঁ সাহেব ছিলেন বাংলা প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি। তিনি আবুল হাশিম সাহেবকে দেখতে পারতেন না। আবুল হাশিম সাহেবকে শহীদ সাহেব সমর্থন করতেন বলে মওলানা সাহেব তাঁর উপর ক্ষেপে গিয়েছিলেন। আমাদেরও ঐ একই দশা। তাই আমাদের কোনো সংবাদ সহজে ছাপা হত না। মাঝে মাঝে জনাব মোহাম্মদ মোদাব্বের সাহেবের মারফতে কিছু সংবাদ উঠত। পরে সিরাজুদ্দিন হোসেন (পরবর্তীতে দৈনিক ইত্তেফাক-এর বার্তা সম্পাদক) এবং আরও দু’একজন বন্ধু আজাদ অফিসে চাকরি করত। তারা ফাঁকে ফাঁকে দুই একটা সংবাদ ছাপাত। দৈনিক মর্নিং নিউজের কথা বাদই দিলাম। ঐ পত্রিকা যদিও পাকিস্তান আন্দোলনকে পুরোপুরি সমর্থন করত, তবুও ওটা একটা গোষ্ঠির সম্পত্তি ছিল, যাদের শোষক শ্রেণী বলা যায়। আমাদের সংবাদ দিতেই চাইত না। ঐ পত্রিকা হাশিম সাহেবকে মোটেই পছন্দ করত না। ছাত্র ও লীগ কর্মীরা হাশিম সাহেবকে সমর্থন করত, তাই বাধ্য হয়ে মাঝে মাঝে সংবাদ দিত। আমরা বুঝতে পারলাম, অন্ততপক্ষে একটা সাপ্তাহিক খবরের কাগজ হলেও আমাদের বের করতে হবে, বিশেষ করে কর্মীদের মধ্যে নতুন ভাবধারার প্রচার করার জন্য। হাশিম সাহেবের পক্ষে কাগজ বের করা কষ্টকর। কারণ টাকা পয়সার অভাব। শহীদ সাহেব হাইকোর্টে ওকালতি করতে শুরু করেছেন। তিনি যথেষ্ট উপার্জন করতেন, ভাল ব্যারিস্টার হিসাবে কলকাতায় নামও ছিল। কলকাতায় গরিবরাও যেমন শহীদ সাহেবকে ভালবাসতেন, মুসলমান ধনীক শ্রেণীকেও শহীদ সাহেব যা বলতেন, শুনত। টাকা পয়সার দরকার হলে কোনোদিন অসুবিধা হতে দেখি নাই। হাশিম সাহেব শহীদ সাহেবের কাছে প্রস্তাব করলেন কাগজটা প্রকাশ করতে এবং বললেন যে একবার যে খরচ লাগে তা পেলে পরে আর জোগাড় করতে অসুবিধা হবে না। নুরুদ্দিন ও আমি এই দুইজনই শহীদ সাহেবকে রাজি করতে পারব, এই ধারণা অনেকরই ছিল।
আমরা দুইজন একদিন সময় ঠিক করে তাঁর সাথে দেখা করতে যাই এবং বুঝিয়ে বলি বেশি টাকা লাগবে না, কারণ সাপ্তাহিক কাগজ। আমাদের মধ্যে ভাল ভাল লেখার হাত আছে, যারা সামান্য হাত খরচ পেলেই কাজ করবে। অনেককে কিছু না দিলেও চলবে। আরও দু’একবার দেখা করার পরে শহীদ সাহেব রাজি হলেন।

মুসলিম লীগ অফিসে নিচের তলায় অনেক খালি ঘর ছিল। তাই জায়গার অসিুবিধা হবে না। হাশিম সাহেব নিজেই সম্পাদক হলেন এবং কাগজ বের হল। আমরা অনেক কর্মীই রাস্তায় হকারী করে কাগজ বিক্রি করতে শুরু করলাম। কাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস সাহেবই কাগজের লেখাপড়ার ভার নিলেন। সাংবাদিক হিসাবে তাঁর যথেষ্ট নাম ছিল। ব্যবহারও অমায়িক ছিল। সমস্ত বাংলাদেশই আমাদের প্রতিনিধি ছিল। তারা কাগজ চালাতে শুরু করল। বুদ্ধিজীবী স¤প্রদায়ের কাছে কাগজটা খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করতে লাগল। হিন্দুদের মধ্যেও অনেকে কাগজটা পড়তেন। এর নাম ছিল ‘মিল্লাত’।

হাশিম সাহেবের গ্রুপকে অন্য দল কমিউনিস্ট বলতে শুরু করল, কিন্তু হাশিম সাহেব ছিলেন মওলানা আজাদ সোবহানীর একজন ভক্ত। তিনি বিখ্যাত ফিলোসফার ছিলেন। মওলানা আজাদ সোবহানী সাহেবকে হাশিম সাহেব আমন্ত্রণ করে এনেছিলেন কলকাতায়। আমাদের নিয়ে তিনি ক্লাস করেছিলেন। আমার সহকর্মীরা অধিক রাত পর্যন্ত তার আলোচনা শুনতেন। আমার পক্ষে ধৈর্য ধরে বসে থাকা কষ্টকর। কিছু সময় যোগদান করেই ভাগতাম। আমি আমার বন্ধুদের বলতাম, ‘তোমরা পন্ডিত হও, আমার অনেক কাজ। আগে পাকিস্তান আনতে দাও, তারপরে বসে বসে আলোচনা করা যাবে।’ হাশিম সাহেব তখন চোখে খুব কম দেখতেন বলে রক্ষা। আমি পিছন থেকে ভাগতাম, তিনি কিন্তু বুঝতে পারতেন! পরের দিন দেখা করতে গেলেই জিজ্ঞাসা করতেন, ‘কি হে, তুমি তো গতরাতে চলে গিয়েছিলে।’ আমি উত্তর দিতাম, ‘কি করব, অনেক কাজ ছিল।’ কাজ তো থাকতই ছাত্রদের সাথে, দল তো ঠিক রাখতে হবে।
[‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে]

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Ashraful Islam Ashraf ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:১৩ এএম says : 1
অখন্ড ভারতে যে মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে না এটা আমি মন প্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করতাম। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হিন্দু নেতারা ক্ষেপে গেছেন কেন? ভারতবর্ষেও মুসলমান থাকবে এবং পাকিস্তানেও হিন্দুরা থাকবে। সকলেই সমান অধিকার পাবে। পাকিস্তানের হিন্দুরাও স্বাধীন নাগরিক হিসাবে বাস করবে। ভারতবর্ষের মুসলমানরাও সমান অধিকার পাবে। পাকিস্তানের মুসলমানরা যেমন হিন্দুদের ভাই হিসাবে গ্রহণ করবে, ভারতবর্ষের হিন্দুরাও মুসলমানদের ভাই হিসাবে গ্রহণ করবে। অনেক সময় হিন্দু বন্ধুদের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা এ নিয়ে আলোচনা হত। কিছুতেই তারা বুঝতে চাইত না। ১৯৪৪-৪৫ সালে ট্রেন, স্টিমারে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হত। সময় সময় এমন পর্যায় আসত যে, মুখ থেকে হাতের ব্যবহার হবার উপক্রম হয়ে উঠত। এখন আর মুসলমান ছেলেদের মধ্যে মতবিরোধ নাই। পাকিস্তান আনতে হবে, এই একটাই স্লোগান সকল জায়গায়।---- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা- ৩৬।
Total Reply(0)
Md Shobuz ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:১৫ এএম says : 1
শেখ সাহেব ঠিকি বোঝেছিলো আর তা এখনো ভারতে বাস্তবে চলছে মুসলিম নিধন কিন্তু তার ....
Total Reply(0)
Mollah Zahir ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:১৬ এএম says : 1
কেউ বন্ধু নয়। তবে, 'কুল্লু মুসলেমিন ইখওয়াতুন' প্রত্যেক মুসলমান ভাই ভাই।অতএব, আমরা সব সময় কাশ্মীরি মুসলমানদের পক্ষে থাকব। এটি মুসলমান হিসেবে ঈমানী দায়িত্ব।
Total Reply(0)
Md Nurul Ansar ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:১৭ এএম says : 1
৭১ সালের মুক্তি যুদ্বের পরাজিত পাকিস্তান, আমরা বিজয়ী, তবে আমরা দুটোই মুসলীম রাষ্ট,তখন কার বিষয়ের কারনে তো আমরা দুটো মুসলীম রাস্ট চিরদিন বিভক্ত থাকতে পারিনা,মুসলীম স্বার্থ সমুহের জন্য তো আমরা বাংলাদেশ,পাকিস্তান একই, সুতারাং এ পর্যায়ে তারা আমাদের নিকটতম মুসলীম রাস্ট, তাদের সাথে আমরা সম্পর্ক রাখতে না চাইলে ও আল্লাহর বিধান মানতে বাধ্য- এক মুসলীম অপর মুসলীম এর ভাই ভাই, পৃথিবীর যে প্রান্ত হইক না কেন কোন মুসলীমের শরীরে আঘাত হলে তোমার শরীর ও ব্যাথা পাবে, কারন তোমরা একই অঙ্গ, সে হিসেবে তারা আমার নিকটতম মুসলীম বন্দু রাষ্ট,
Total Reply(0)
Momin Bapari ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:১৭ এএম says : 1
পাকিস্তান আমাদের ভাই।এবং ভারত হল সংসার ভাগ করাইননা শতরু তাই ভারত কখনো আমাদের বনদু হতে পারেনা।১০০%সঠিক
Total Reply(0)
R N Belal ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:১৭ এএম says : 1
ভারতকে বাংলাদেশ বন্ধু ভাবলেও ভারত কিন্তু সম্পুর্ন ব্যতিক্রম, তবে আমাদের মাথায় কাঠাল ভেঙে খাওয়ায় বেশ পারদর্শী ভারত।
Total Reply(0)
Shariful Alam ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:১৮ এএম says : 1
বাংলাদেশের কেহ বন্ধু নেই! ভারত তার নিজের দরকারে,সাহায্য করেছে! পাকিস্তানের বোকামির ফসল!
Total Reply(0)
Abdullah Faruk Abdullah ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:১৮ এএম says : 1
বর্তমান বিশ্ব রাজনী‌তি চল‌ছে মুস‌লিম বনাম কা‌ফে‌রের সা‌থে। কোন দে‌শের সা‌থে নয়। মায়ানমায় ,ইরাক, লি‌বিয়া , সি‌রিয়া , ই‌য়ে‌মেন , ভারত , ফি‌লি‌স্তিন প্র‌ত্যেক দে‌শেই মুস‌লিম হত্যা ও মুস‌লিম‌দের অর্থ সম্পদ লুন্ঠন চল‌ছে।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:২০ এএম says : 1
স্যালুট হে শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী। আপনাকে মুসলিম বিশ্ব নেতা হিসেবে মেনে আর দ্বিধাবোধ করার কথা নেই। আল্লাহ আপনাকে শান্তিতে রাখুন।
Total Reply(0)
Hajarat Nur Ahammed Karim ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:২১ এএম says : 0
প্রত্যক জাতিকে অত্যাচারী শাসক হতে উদ্বারের জন্য আল্লাহ তায়ালা একজন আলোবর্তিতা ফেরন করেন। জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমান তাদের একজন। জাতি যতদিন পর্যন্ত এই আলোকে বুকে ধারন করবে ততদিন কোন শয়তানের বিধান হায়নার মানসিকতার দল সামনে এগিয়ে যাওয়া থেকে বাধা দিতে পারবে না। জয় বাংলা আমি জাতির পিতার রূহের মাগফিরাত কামনা করি। আল্লাহ যেন তার রুহকে বেহেসতের নূরের শান্তির মধ্য রাখে।
Total Reply(0)
Hajarat Nur Ahammed Karim ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:২১ এএম says : 1
প্রত্যক জাতিকে অত্যাচারী শাসক হতে উদ্বারের জন্য আল্লাহ তায়ালা একজন আলোবর্তিতা ফেরন করেন। জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমান তাদের একজন। জাতি যতদিন পর্যন্ত এই আলোকে বুকে ধারন করবে ততদিন কোন শয়তানের বিধান হায়নার মানসিকতার দল সামনে এগিয়ে যাওয়া থেকে বাধা দিতে পারবে না। জয় বাংলা আমি জাতির পিতার রূহের মাগফিরাত কামনা করি। আল্লাহ যেন তার রুহকে বেহেসতের নূরের শান্তির মধ্য রাখে।
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ১৭ মার্চ, ২০২০, ১১:৫৯ এএম says : 0
জাতীয় বেঈমানরা নিকৃষ্ট। ভারতীয় বড় দালাল চুট দালাল সকল দালালকে আমি ঘৃণা করি। ইনশাআল্লাহ। আমাদের দেশের, বাংলাদেশের পতাকা একদিন সম্মুন্নত হইবে। ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন