শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

কয়রায় বেড়িবাঁধে ধস

মোস্তফা শফিক, কয়রা (খুলনা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের গাজীপাড়া অংশে বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে নদে বিলীন হয়েছে তীরবর্তী কয়েকটি পরিবারের বসতঘর। আতঙ্কে বাসিন্দারা অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে গাজীপাড়া গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার এলাকা ছেড়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৩ ও ১৪/২ নম্বর পোল্ডারের গাজীপাড়া বেড়িবাঁধের ২০০ মিটার জায়গাজুড়ে ধস দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধের ওই অংশে কোথাও কোথাও মাত্র এক-দেড় হাত মাটি রয়েছে। অধিকাংশ জায়গায় বাঁধের গোড়ায় মাটি না থাকায় বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গাজীপাড়া গ্রামের কামাল হোসেন তাঁর বাড়ির উঠানে লাগানো মেহগনি গাছ কাটছিলেন। তিনি জানালেন, ৬০-৭০ বছরের পুরনো বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই গাছ কাটছেন। ইতোমধ্যে জায়গাজমি যা ছিল তার প্রায় সবই নদীতে গেছে। এখন পানির দরে গাছপালা বিক্রি করে কিছু টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করছেন।
পাশেই বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাক গাজী ও তার স্ত্রী মিলে বাঁধের কাছ থেকে ঘরের চালা ও আসবাবপত্র সরাচ্ছিলেন। পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে নতুন করে ঘর বাঁধবেন বলে জানালেন। আবদুর রাজ্জাক গাজীর পরিবার আগেও তিনবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে স্থানান্তরিত হয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক গাজী বেশ হতাশার সঙ্গে বলেন, ‘আমরা কোথায় যাব? কোথাও জমি কিনে ঘর বানানোর সাধ্য আমাদের নাই। নদী ভাঙে, আমরাও পিছাই। ওই নদীর মাঝখানে আমাগো বাড়ি ছিল। পিছাতে পিছাতে এই পর্যন্ত আইছি। তিনডা বাঁধ দেকছি। এই জনমে আরো কয়ডা দেকতে হবে, জানি না।’ এলাকাবাসী জানায়, গাজীপাড়ার বেড়িবাঁধটি কয়েক মাস আগেও সংস্কার করা হয়েছিল। আগে আরো তিনবার একই স্থান থেকে বেড়িবাঁধ ধসে গিয়েছিল। প্রথমবার বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর আর টেকসই বাঁধ তৈরি হয়নি। ফলে বারবার ভাঙছে। বর্তমানে ধসে যাওয়া ২০০ মিটারের মতো বেড়িবাঁধ নিয়ে তাই এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।
বাঁধ না ভাঙলে পাউবোর ঘুম ভাঙে না বলে মন্তব্য করেন উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান গনেশ চন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, একবার বাঁধ ভাঙলে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন তলিয়ে যায়। অবকাঠামো নাজুক হয়ে পড়ে। বাঁধ ভাঙার পর সংস্কার করা হয়, ভাঙার আগে তাদের কোনো উদ্যোগ থাকে না। উত্তর বেদকাশী ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম বলেন, শুষ্ক মৌসুমেই গাজীপাড়ায় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এলাকার দরিদ্র মানুষ বসতবাড়িসহ ফসলি জমি হারিয়ে আরো নিঃস্ব হয়ে পড়বে। তিনি দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কারের দাবি করেন। এ ব্যাপারে পাউবোর সেকশন কর্মকর্তা মশিউল আবেদিন জানান, গাজীপাড়া বেড়িবাঁধের সার্বিক অবস্থা উল্লেখ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। দ্রুততম সময়ে বাঁধটি সংস্কার করা হবে বলে তিনি আশা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ash ২০ মার্চ, ২০২০, ১:১৪ এএম says : 0
MATI BALUR BAD KI VABE TIKE??
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন