তানোর (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা
রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় লোকালয় হুমকিতে ফেলে চাতাল মিল নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত ২০১১ সালে এলাকাবাসীর পক্ষে মুন্ডুমালা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলার মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তানোর থানা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার (ওসি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন বন্ধ রাখার পর আবারো ওই চাতাল চালু করা হয়েছে। এতে এলাকার শতাধিক পরিবারের মানুষদের চরম মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। এলাকাবাসী সরেজমিন পরিদর্শন করে চাতালটি অন্যত্র স্থানান্তর বা বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা গেছে, তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কামালপুর গ্রামে রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাবশালী শামসুল হক এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে চাতাল মিল স্থাপন করেছেন। এতে আশপাশের প্রায় শতাধিক পরিবারের মানুষের মাঝে বিরাজ করছে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। এদিকে সীমানা প্রাচীর ছাড়াই লোকালয়ের একটি ব্যস্ততম রাস্তার ধারে ও বিদ্যুতের ১১ হাজার ভোল্টেজ তারের সংস্পর্শে চাতাল করায় সাধারণ মানুষের উদ্বগ ও উৎকণ্ঠার মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। সীমানা প্রাচীর ছাড়াই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চাতাল মিলটি চালু করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভিন্ন দফতরে লিখিতভাবে জানানো হলেও বন্ধ হয়নি চাতাল মিলের কার্যক্রম। অবৈধভাবে নির্মিত ওই চাতাল নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। উল্লেখ, কামালপুর গ্রামের শামসুল হকের স্থাপিত ওই চাতালে গত ২০১১ সালের ২০ আগস্ট গ্যাসের ট্যাংক বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে ঘটনাস্থলেই দু’জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এরা হলেন চাতালের শ্রমিক বাগমারা উপজেলার বড়বিয়ানালী গ্রামের সখিন রাজের স্ত্রী ফরিদা (৩৫) ও মেয়ে শরিফা খাতুন (১০)। এ সময় গ্যাসের ট্যাংক বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এলাকায় প্রচ- কম্পনের সৃষ্টি হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গ্যাসের ট্যাংক বিস্ফোরিত হয়ে প্রায় ১০০ হাত দূরে ধান ক্ষেতে গিয়ে পড়ে। এতে পুরো জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। অবৈধভাবে নির্মিত ওই চাতাল বন্ধ ও দুর্ঘটনায় নিহতদের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে স্থানীয় রাজনৈতিক পরিচয়ের একটি প্রভাবশালী মহল আপোষ-মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে কালক্ষেপণ শুরু করে। এদিকে দীর্ঘদিন পর আবারও ওই চাতালের কার্যক্রম শুরু করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে চাতাল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৈধভাবে সকল নিয়মকানুন মেনে চাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটছে তাই বলে কি বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। মিল-কারখানায় দুর্ঘটনা ঘটবে সেটাই স্বাভাবিক কিন্তু দুর্ঘটনায় মালিকের কোন হাত থাকে না এটা সকলকে বুঝতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন