গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা
স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দ্বারগোড়ায় পৌঁছে দিতে মহাজোট সরকার নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের আড়াই লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবার প্রধান কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স। এ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫১ শয্যায় উন্নীত করলেও শুধু নেই নেই আর নেই হাহাকার। কখনো যন্ত্র থাকলে জনবল নেই, আবার কখনো জনবল থাকলে যন্ত্র নষ্ট। এসব নেই নেই এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি জনগুরুত্বপূর্ণ সংকট হচ্ছে- অ্যাম্বুলেন্স। যেটি এখন চলাচলের জন্য অনুপোযোগী। চালক থাকলে অ্যাম্বুলেন্স নেই, অ্যাম্বুলেন্স নেই অবস্থার মধ্যে চলছে আজ ১০ বছর। অ্যাম্বুলেন্স না থাকার কারণে প্রসূতিসহ এলাকার হতদরিদ্র মানুষের অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে মাইক্রো অথবা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে অন্যত্র যেতে হয়। জানা গেছে, বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন যাবত নানা অব্যবস্থাপনা, লোকবল সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল। উপজেলার প্রায় ২ লক্ষ মানুষের খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম চলত। হাসপাতালটিতে সরকারি উদ্যোগে ৩১ শয্যা থেকে ৫১ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। ১-২ জন ডাক্তারের স্থলে এখন রয়েছে পর্যাপ্ত ডাক্তার। আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন যাবৎ চালকের অভাবে পড়ে থাকার ফলে নষ্ট হয়ে এখন গ্যারেজে। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্স না থাকার কারণে রোগীদেরকে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তবে ইতোমধ্যেই হাসপাতালে চালকের পদায়ন হলেও চলাচলের জন্য অনুপোযোগী অ্যাম্বুলেন্স থাকার কারণে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এলাকাবাসী জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্স মেরামত করে সচলের দাবি জানিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ২৩ মে রাজবাড়ী-ছ- ৭১-০০০২ একটি অ্যাম্বুলেন্স সরকার থেকে দেয়া হয়। কয়েক বছর উপজেলার রোগী পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিল। এরপর দফায় দফায় অ্যাম্বুলেন্সের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে থাকে। কমপ্লেক্সের অর্থে মেরামতও করা হয়। পরে অ্যা¤ু^লেন্সের মালামাল-যন্ত্রপাতি বেশি নষ্ট হতে থাকলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রণালয়ের নিকট মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া মেলেনি। সর্বশেষ মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয় ২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর। পরে সারা দেশে গর্ভবর্তী মায়েদের জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্সের চাহিদা চাওয়া হলে এ বছর ২০ জানুয়ারি নতুন অ্যাম্বুলেন্সের জন্য চাহিদা প্রেরণ করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুফিয়া ইয়াসমিন জানান, বালিয়াকান্দি উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা বিশেষ করে দুর্গম এলাকা থেকে গর্ভবর্তী মায়েদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে একটি ভালো মানের অ্যাম্বুলেন্স খুবই প্রয়োজন। বিপদগ্রস্ত মানুষেরা অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে বিড়ম্বনার স্বীকার হয়। অপরদিকে ব্যক্তি মালিকানার গাড়ি নিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে রোগী নিয়ে যেতে বেশি ভাড়া গুনতে হয়। এতে মানুষের স্বাস্থ্য খাতে দরিদ্র মানুষের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন