কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা
শ্রেণীকক্ষ সংকট, পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণের অভাব আর নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি না পাওয়ার বেদনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের ঘোড়াগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। প্রতি বছরই শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যালয়টিতে শ্রেণীকক্ষের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে। কাজিপুরে চরাঞ্চলে নাটুয়ারপাড়ার ঐতিহ্যবাহী এবং পুরনো চরের নাম ঘোড়াগাছা। এই চরের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য ছিল না কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এরই প্রেক্ষাপটে ১৯৯৯ সালে ঘোড়াগাছা নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এরপর নি¤œ মাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার কথা বিবেচনায় এনে ২০০৩ সাল থেকে নবম ও দশম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে এটি ২০০৪ সালে এমপিওভুক্ত হয়। কয়েক বছর পরে ২০০৯ সালে মেলে এই বিদ্যালয়ের নবম-দশম শ্রেণীর একাডেমিক স্বীকৃতি। প্রতি বছরই জেএসসি ও এসএসসিতে ভালো ফলাফলের কারণে অনেক শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। বর্তমানে বিদ্যায়টিতে ৬৫৮ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। বিগত জেএসসি পরীক্ষায় ৮২ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৮০ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ জন। আর এসএসসি পরীক্ষায় ৬২ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ৬০ জন শিক্ষার্থী। ৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু যমুনা ভাঙনজনিত কারণে বিদ্যালয়টির বর্তমানে নিজস্ব জায়গার পরিমাণ অনেক কম। আর প্রতিটি ক্লাসে শাখা খোলার কারণে শ্রেণীকক্ষ সংকটে পড়েছে বিদ্যালয়টি। ফলে বিভিন্ন বিষয়ের ঐচ্ছিক বিষয়গুলোর পাঠদান চলেছে খোলা আকাশের নিচে। ঘোড়াগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতি বছরই শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়ছে। ফলে স্থানের সংকুলান হচ্ছে না। এই মুহূর্তে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন একটি একাডেমিক দ্বিতল ভবন। তিনি আরো জানান, অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে শ্রেণীকক্ষের অভাবে আগামী বছর আর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিই করানো সম্ভব হবে না। সেইসাথে নবম-দশম শ্রেণীতে পাঠদানরত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির আশু প্রয়োজন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান জানান, ভালো ফলাফলের জন্য আমাদের শিক্ষকরা নিবেদিতপ্রাণ। তারা বিদ্যালয়ের পাঠদানের বাইরেও বিশেষ কোচিং করান। ফলে ফলাফলে আমরা চরাঞ্চলের মধ্যে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছি। ঘোড়াগাছা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওমর আলী জানান, আমি সবেমাত্র দায়িত্ব নিলাম। শুনেছি অনেক সমস্যা আছে। যেহেতু বিদ্যালয়টির রেজাল্ট ভালো তাই এর উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সকলের এগিয়ে আসা উচিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন