আমরা জানি, বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রোগের আগমন ঘটে। কিন্তু আল্লাহ এতই মেহেরবান যে, ওইসব মওসুমি রোগ প্রতিরোধের জন্য হরেক রকম শাকসবজি ও ফলমূলও দান করেন, যাতে তার প্রিয় বান্দারা সুস্থ থাকতে পারে ওইসব শাকসবজি, ফলমূল খেয়ে। কিন্তু যারা এসব শাকসবজি, ফলমূল না খেয়ে অন্য কিছু খায় তারা নানা রোগের শিকার হয়। আসুন আমরা জেনে নিই অ্যাজমা প্রতিরোধী খাবার সম্পর্কে -
পালং শাক- ম্যাগনেশিয়ামের ভালো উৎস পালং শাক। আর এই ম্যাগনেশিয়াম অ্যাজমার কষ্ট লাঘবে কাজ করে। অ্যাজমার বেশকিছু উপসর্গ উপশম করে। অ্যাজমায় আক্রান্ত তাদের রক্ত ও টিস্যুতে ম্যাগনেশিয়ামের উপস্থিতির হার কমে যায়। দেখা গেছে, নিয়মিত ম্যাগনেশিয়াম প্রয়োগ করলে বা ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে রক্ত ও টিস্যুতে এর উপস্থিতি বাড়ে এবং অ্যাজমা অ্যাটাকের প্রবণতাও হ্রাস পায়। এছাড়া পালং শাকে থাকে ভিটামিন বি। এটিও অ্যাজমার প্রকোপ কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
লাল মরিচ- লাল মরিচে ভিটামিন সি থাকে প্রচুর পরিমাণে। এই সি ভিটামিন ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। লাল মরিচে থাকা ভিটামিন সি শরীরে ফসফোডলেস্টারেজ নামের এনজাইম তৈরি হতে বাধা দেয়। অ্যাজমার কিছু ওষুধও একই পদ্ধতিতে শরীরে কাজ করে।
পেঁয়াজ-এটি ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ ও অ্যাজমা নিরোধী হিসেবে কাজ করতে পারে। পেঁয়াজ খেলে শরীরে হিস্টামিন নিঃসরণের হার কমে যায়। এতে শ্বাসনালির সংকোচনজনিত জটিলতাও কমে। ফলে শ্বাসকষ্ট কম হয়। পেঁয়াজে আছে প্রোস্টগ্লোনডিন, যা শ্বাসনালি দিয়ে নিঃশ্বাসের বাতাস চলাচলের কাজ সহজ করে দেয়। অ্যালার্জি প্রতিরোধেও পেঁয়াজের ভূমিকা আছে।
লেবু ও কমলা - ভিটামিন সিযুক্ত যেকোনো খাবারই আসলে অ্যাজমার কষ্ট লাঘবে ভালো কাজ করে। বিশেষ করে শিশুদের অ্যাজমায়। লেবু ও কমলায় ভিটামিন সি আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। ইতালিতে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব অ্যাজমা আক্রান্ত শিশু প্রতিদিনই ভিটামিন সি যুক্ত ফল খায় তাদের অ্যাজমা অ্যাটাকের হার, যেসব অ্যাজমা আক্রান্ত শিশু নিয়মিত ফল খায় না তাদের চেয়ে অনেক কম। এ কারণে যাদের অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্ট সংক্রান্ত জটিলতা আছে তাদের প্রতিদিন লেবু, কমলা জাতীয় ভিটামিন সি যুক্ত ফল খাওয়া উচিত।
আপেল- আপেলে আছে ফাইটোকেমিক্যাল। ফুসফুসকে কার্যকরী রাখতে দারুণ কার্যকর এই ফাইটোকেমিক্যাল। তাই যাদের অ্যাজমার সমস্যা আছে তাদের জন্য আপেল শুধু ফল নয়, ওষুধও। শিশুকালে সপ্তাহে অন্তত চারটি আপেল খেলে পরবর্তী সময় অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অর্ধেকে নেমে আসে। এমনকি গর্ভকালীন কোনো মা যদি সপ্তাহে চারটি আপেল খান, তাঁর বাচ্চার অ্যাজমা হওয়ার ঝুঁকিও অর্ধেকে নেমে আসে।
ওলকপি- ওলকপি দেখতে ওলকচুর মতো গোলাকার, তাই ওলকপি বলে। ওল বড় হয়, কিন্তু ওলকপি আকারে ছোট হয়। এটা স্বাদে মধুর, উষ্ণবীর্য মলমূত্র নিষ্কাষক। তবে হজমে দেরি হয়। কফনাশক, বাতকারক ও পিত্ত প্রকোপক। ওলকপি প্রমেহ, শ্বাসকষ্ট কফ ও কাশির জন্য উপকারী। সহজে হজম হয়। কৃমিনাশক। যারা স্কার্ভি রোগে ভুগছে, তাদের ওলকপি খাওয়া ভালো।
ডা: মাও: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিস্ট
মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন