করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত শহিদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে সংযুক্ত হয়েছে আরও ৯টি ভেন্টিলেটর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসে পৌঁছে এগুলো হাসপাতালে। শুক্রবার থেকে শুরু হবে ভেন্টিলেটরগুলো স্থাপনের কাজ। তবে এগুলো চালু করতে আরও ১০/১২ দিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেশে করোনা সংক্রমণের পর সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। করোনা সন্দেহভাজন রোগীদের এই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে। ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে ভেন্টিলেটরসহ দুটি আইসিইউ ইউনিট রয়েছে। তবে সিলেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া একমাত্র রোগীই বুধবার উন্নত চিকিৎসার জন্য পারিবারিক সিদ্ধান্তে ঢাকা যান। এর মধ্যে দিয়ে সিলেটে করোনা আক্রান্তদের সিলেটের চিকিৎসা ব্যবস্থার তলানীর খবর বেরিয়ে পড়ে। ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হয় শামসুদ্দিন হাসপাতালের সক্ষমতা। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার আরও ৯টি ভেন্টিলেটর যুক্ত হলো এ হাসপাতালে। শামসুদ্দিন হাসপাতালে আইসিইউ এবং ভেন্টিলেটর পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত লোকবল না থাকারও অভিযোগ ওঠেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ভেন্টিলেটর পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লোকবল প্রস্তুত করা হচ্ছে। সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সুশান্ত মহাপাত্র জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য নেগেটিভ প্রেশারের ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়। নতুন আসা ভেন্টিলেটরগুলো নেগেটিভ প্রেশারের। তবে নতুন ভেন্টিলেটর এলেও এই হাসপাতালে নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট। ফলে কয়েকটি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডারকে একত্রে করে একটি ভেন্টিলেটরে কানেকশন দেওয়া হচ্ছে। এরকম ৪টি সিলিন্ডার সিস্টেম দিয়ে শামসুদ্দীন হাসপাতালে ২টি ভেন্টিলেটর স্থাপন করা হয়েছে। একই পদ্ধতিতে বাকী ৯টি ভেন্টিলেটরও স্থাপন করা হবে। এব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, ভেন্টিলেটর অপারেট করার জন্য প্রশিক্ষণ দিচ্ছি আমরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সাধারণত রোগী দেখে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা দিয়ে যান। মনিটরিংয়ে একজন চিকিৎসক থাকেন। কিন্তু সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আমাদের নার্সিং স্টাফরা থাকেন। আমরা নার্সিং স্টাফদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন নার্সকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। আমরা ক্রমান্বয়ে সবাইকে আইসিইউ ম্যানেজমেন্টে প্রশিক্ষণ প্রদান করবো। কারণ কার কখন কোথায় প্রয়োজন হয় বলা মুশকিল। তিনি বলেন, শামসুদ্দিন হাসপাতালে সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হচ্ছে এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট নেই। এখন ভেন্টিলেটরে যে অক্সিজেন আসে তার পরিমাণ সাধারণ রোগীকে যে অক্সিজেন দেওয়া হয় তার চেয়ে অনেক বেশি। যার জন্য এখানে ৫ থেকে ৬টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডারকে একত্রে করে একটি ভেন্টিলেটরে কানেকশন দেওয়া হচ্ছে। ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ভেন্টিলেটর চালানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সিলিন্ডার আমরা মজুদ করেছি। এখন সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর পরিবেশ নেই। সার্বিক পরিস্থিতি প্রতিকূল । সেকারনে বিকল্প ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে ভেন্টিলেটর সক্রিয় করার ব্যবস্থা করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন