লোহাগড়া (নড়াইল) উপজেলা সংবাদদাতা
আসন্ন লোহাগড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ২ বিদ্রোহী প্রার্থীসহ আওয়ামী লীগের ৩ জন এবং বিএনপির ১জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা হলেন লিপি খানম (নৌকা), আশরাফুল আলম (বিদ্রোহী), শরিফুল ইসলাম (বিদ্রোহী) ও এডভোকেট নেওয়াজ আহম্মদ ঠাকুর (ধানের শীষ)। এদিকে তৃণমূলের মতামত ছাড়া মাঠ পর্যায়ের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামে পরীক্ষিত নেতাদের মধ্য থেকে মনোনয়ন না দেয়ায় ক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা স্থানীয় পৌর আওয়ামী লীগ অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। ২০০৩ সালে লোহাগড়া পৌরসভা গঠনের পর থেকে অদ্যবদি বিএনপির নেতা নেওয়াজ আহমেদ ঠাকুর মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে পরিচিত লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন সঠিক না হওয়ায় এবং দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে প্রতিবারই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় মেয়র পদটি আওয়ামী লীগের হাত ছাড়া হয়ে যায়। এবারও লোহাগড়া পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ৭ জন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী দলীয় মনোনয়নপত্র ক্রয় করেন। তারা হলেন লোহাগড়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল আলম, থানা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক মনজুরুল করিম মুন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য শরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক ও প্রাক্তন ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মশিয়ুর রহমান, প্রাক্তনসহ সভাপতি মুন্সী আলা উদ্দিন এবং প্রাক্তন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী লিপি খানম ও নাজমুল করিম বাবু। আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মেয়র পদটি উদ্ধারে সম্ভাব্য ৭ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে একক প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে কোন সমঝোতা না হওয়ায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নেন লিপি খানম। গত রোববার ঢাকায় অনুষ্ঠিত দলের এক সভায় দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। আর দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। গত মঙ্গলবার সকালে মনোনয়ন বঞ্চিতদের সমর্থকরা পৌর আওয়ামী লীগের লক্ষীপাশাস্থ অফিসে তালা ঝুঁলিয়ে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, স্থানীয় ভোটারদের কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত এবং ঢাকায় অবস্থানকারী এনজিও কর্মী লিপি খানমকে মনোনয়ন দেয়ার ফলে দলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে দলের বৃহৎ একটি অংশ গত দুইবারের নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এবং দীর্ঘদিন মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষিত যুবলীগ নেতা আশরাফুল আলমকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক প্রাপ্ত প্রার্থী লিপি খানম বলেন, আমি ইডেন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রলীগ নেত্রী ছিলাম। লোহাগড়া পৌরসভায় বিএনপির মেয়র থাকায় রাস্তাঘাট চলাচলের অযোগ্য, পৌর ভবন নাই, কোন উন্নয়নমূলক কাজ হয় নাই। আমি সাধারণ মানুষের পাশে থেকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে চাই। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন লোহাগড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গত ২৭ জুন লোহাগড়া পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। আগামী ৭ আগস্ট ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন