শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

৪ মাস বেতন পান না কুষ্টিয়া চিনিকলের সহস্রাধিক শ্রমিক-কর্মচারী

মানবেতর জীবন যাপন

এস এম আলী আহসান পান্না | প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০২০, ৩:৫২ পিএম

প্রায় চার মাস বেতন পান না কুষ্টিয়া চিনিকলের সহস্রাধিক শ্রমিক কর্মচারী। এতে অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে এসব শ্রমিক কর্মচারী পরিবারের জীবন। চিনিকল কর্তৃপক্ষ বলছে, সদর দপ্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আর বেতনের দাবিতে চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, প্রায় ৪ মাস বেতন না পাওয়ায় কঠিন সময় পার করছেন চিনিকলের সকল শ্রমিক কর্মচারী। অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে তাদের জীবন। আগের তিনমাসের বেতন পাননি, চলতি মাসের বেতনও অনিশ্চিত।

এভাবে মাসের পর মাস বকেয়া কুষ্টিয়া চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন। কবে বেতন পাবেন, কবেই বা তাদের পরিবারের সদস্যদের মুখে আহার জুটবে তা অনিশ্চিত চিনিকলে কর্মরত সহস্রাধিক শ্রমিক কর্মচারীর।
কুষ্টিয়া চিনিকলের হিসাব বিভাগের কর্মচারী মোক্তার হোসেন জানান, আগের ৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শুধু মাত্র বেতনের ওপর নির্ভরশীল সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে রয়েছি।

ধার দেনা করে আগের মাসগুলো কোনমতে চালালেও বর্তমানে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।
চিনিকলের কারখানা বিভাগের শ্রমিক ফরহাদ হোসেন বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতির বাজার, তার ওপর প্রায় ৪ মাস বেতন না থাকায় ভীষণ কষ্টে রয়েছি। সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। তার ওপর রয়েছে সন্তানদের পড়ালেখার খরচ যোগানো। কবে বেতন পাবো তার নিশ্চয়তা নেই। সামনে রমজান মাস আসছে।

বেতন নিয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের দুঃশ্চিন্তার অন্ত নেই। কবে নাগাদ বেতন হবে এমন প্রশ্ন হরহামেশায় শুনতে হয় চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দকে। উপায় না পেয়ে সকল শ্রমিক কর্মচারীদের স্বার্থ বিবেচনায় সোমবার সকালে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয় শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ।

চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক হোসেন জানান, আমরা শ্রমিক কর্মচারীরা ভীষণ অর্থ কষ্টে রয়েছি। প্রায় ৪মাস বেতন না পাওয়ায় দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি আমরা। কবে বেতন পাবো তারও নিশ্চয়তা নেই। তাই বাধ্য হয়েই প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি।

চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান আনিচ বলেন, শ্রমিক কর্মচারীদের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। প্রায় ৪ মাস তারা বেতন পান না। পরিবারের লোকজনও কষ্টে রয়েছেন। কবে তাদের মুখে হাসি ফুটবে জানি না। তবে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে যাতে করে দ্রুত বেতন পরিশোধ করা হয়।

কুষ্টিয়া চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সরওয়ার মুর্শেদ জানান, চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীসহ আখচাষীদের পাওনা পরিশোধে সদর দপ্তরকে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে করোনা সংক্রমণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের স্বার্থে ৫ হাজার কোটি টাকার যে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তা থেকে অন্তত ৫ কোটি টাকা যদি চিনিকলের আখচাষী তথা চিনিকলের শ্রমিকদের স্বার্থে দেয়া যায় সেই লক্ষে সদর দপ্তরে লিখিত পাঠিয়েছি। আমার বিশ্বাস আখচাষী তথা শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনাদি পরিশোধ করা হবে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন জানান, কুষ্টিয়া চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ও আখের পাওনা বাবদ চিনিকল শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। সেটি দ্রুতই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন