বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার প্রভাব পড়েছে সিরাজগঞ্জ তাঁত পল্লীতেও। থমকে গেছে তাঁত পল্লী। থমকে গেছে প্রাণচাঞ্চল্য। নেমে আসছে তাঁতপল্লীর ভিন্ন চিত্র। ইতোমধ্যেই করোনার প্রভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেশ কিছু তাঁত কারখানা।
সরজমিনে জেলার তাঁত পল্লীতে গিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর, বেলকুচি, শাহাজাদপুর, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ কাজীপুর ও সদর উপজেলার দেড় লাখের বেশি ইঞ্জিন চালিত ও হস্ত চালিত তাঁতে তিন লাখ শ্রমিক জড়িত আছে। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে উৎপাদিত উন্নত মানের শাড়ি-লুঙ্গি দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারতসহ বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি হচ্ছে। করোনা প্রভাবে তাঁতীরা কারখানা বন্ধ করতে শুরু করেছেন। আর যে সব তাঁত কারখানার মহাজনেরা বন্ধ করতে চাচ্ছেন না, সে সব কারখানার শ্রমিকেরাই আতঙ্কে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। কথা হয় বেলকচি উপজেলার তামাই গ্রামের শ্রমিক সাঈদ মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, দেশ বিদেশে করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে দেখেছি। তাই নিজেকে বাঁচাতে কাজ বন্ধ রেখে বাড়িতে আছি। তিনি আরও বলেন, কাজ বন্ধ করায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
শাহজাদপুর পোরজনা গ্রামের তাঁত শ্রমিক আনিছুর রহমানান বলেন, চার ছেলে মেয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই তাঁতের কাজ করি। তাঁতের কাজ করেই সংসার ও ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া করাতাম। কিন্তু এই ভাইরাসের কারনে মালিক তাঁত বন্ধ করে দিয়েছে। সংসার ও ছেলে মেয়ে নিয়ে এখন বিপদে আছি।
টাংগাইলের ভুয়াপুর থেকে আসা তাঁত শ্রমিক আনিছ বলেন, এই মহামারীতে বাইরে না থাকা ভাল। তাই কাজ বন্ধ করে চলে যাচ্ছি। পরিস্থিতি ভাল হলে আবার কাজে যোগদান করব। গোপলপুর গ্রামের টাঙ্গাইল তাঁত বাজার কারখানার মালিক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, বিশ্বে করোনাভাইরাসের কারনে সরকার মিল কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ঘোষণা করলে আমরা কারখানা চালু করব বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ হ্যান্ডলুম পাওয়ারলুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান বদি জানান, এই মহামারীতে তাঁতীরাও পরিস্থিতির শিকার। জেলার তাঁতীরা তাঁত কারখানা বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে বেশির ভাগ তাঁতী ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন