রমজানকে সামনে রেখে
অর্থিকভাবে লাভবান হলেও বিক্রি নিয়ে শঙ্কায়
শতাধিক কৃষক
সুগন্ধি জনপ্রিয় পুদিনা পাতা। ঔষধি পাতা হিসেবেও প্রাচীনকাল থেকেই পরিচিত। পুদিনা চাষে কৃষকরা অর্থিকভাবে অনেক লাভবান হলেও করোনা শক্রমন ও লকডাউনের ফলে আসন্ন রমজানে পুদিনা পাতা বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় উপজেলার ১শ’ এর বেশি কৃষক। তবে পুদিনা পাতায় অনেক উপকারিতা ও অন্যান্য উপাদান রয়েছে। যা অনেকের অজানা। এর মধ্যে প্রচুর পরিমান অ্যান্টি, অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ক্যান্সার, হৃদরোগসহ আরো ভংঙ্কর রোগ থেকে মানুষকে বাঁচাতে পারে। এ পাতায় ব্যবহারে গলার ক্ষত প্রতিরোধ করে, দাঁত ও মাড়ির ক্ষত সারিয়ে তোলতে সাহায্য করে। এছাড়া পুদিনার চা শরীরের নির্দিষ্ট অংশের উপর কাজ করতে পারে এবং শ্বাসতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী পুদিনা। এসবকে মাথায় রেখে পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে উপজেলার ভাটিয়ারী, সলিমপুর, সোনাইছড়ি ও কুমিরায় ১৫ হেক্টর জমিতে ব্যাপকভাবে পুদিনার চাষ করেছেন কৃষক। তবে আশানুরোপ বিক্রি করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে চরম শঙ্কায় পরেছেন তারা। তবুও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাধা অতিক্রম করে পুদিনার চাষ করেন তারা। তারই ধারাবাহীকতায় এবারও ভাটিয়ারী খাদিমপাড়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রমজানকে সামনে রেখে পাহাড়ি এলাকা জুড়ে দিনরাত পরিশ্রম করে সুগন্ধি জনপ্রিয় পুদিনার চাষ করেছেন পুদিনার সফল চাষি হিসেবে পরিচিত মো. ফরিদুল আলমের পুত্র কৃষক মো. শিবলু।
তিনি জানান, আসন্ন রমজানে পুদিনার চাহিদাকে মাথায় রেখে প্রতিবছরের মত চলতি বছরও বাণিজ্যিকভাবে পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৯০ শতক জায়গায় পুদিনার চাষ করেছেন তিনি। এতে শ্রমিক ও বিভিন্ন বাবদ তার খরচ পরেছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। বাজার দর ভাল হলে তিনি প্রায় ৪/৫ লাখ টাকার পুদিনা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে সারাদেশে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে পড়েছে। তাই লকডাউনের ফলে বাইর থেকে পাইকার না আসলে আমাদের চাষকৃত পুদিনা ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যেতে পাড়ে। আমার মত অনেকেই লাখ লাখ টাকা খরচ করে রমজানে বিক্রির উদ্দেশ্যে পুদিনার চাষ করেছেন। কিন্তু সকল কৃষক এখন দুশ্চিনতাই দিন অতিবাহীত করছেন। এখানে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ঝন্টু কুমার নাথ বলেন, এখানকার পাহাড়ি ভূমি এবং পাহাড়ের ঢালুতে গুণে ভরা ঔষধি উদ্ভিদ পুদিনা পাতা চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন।
এবারও অধিক লাভের আশায় শুধু ভাটিয়ারী খাদেমপাড়া এলাকায় অন্তত ৬ হেক্টর পাহাড়ের ঢালুতে বাণিজ্যিকভাবে পুদিনার চাষ করেছেন ৪০/৫০ জন কৃষক। প্রতিবছর বিশেষ করে রমজান মাসকে সামনে রেখেই পুদিনা চাষ করে থাকেন। এতে বার্ষিক লাখ লাখ টাকা আয় করে চলেছেন তারা। পুদিনা চাষিদের ফলন বৃদ্ধিতে পরামর্শ দিয়ে আসছি। কফ সর্দি-জ¦র ও কুষ্ঠ রোগের জন্য পুদিনা পাতা উপকারী। এছাড়া পুদিনা পাতা সেদ্ধকরে বেটে মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে পায়ের গোদের উপকার হয়। সবরকম গুণই পুদিনা পাতায় রয়েছে।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসার আল মামুন রাসেল বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৫ হেক্টর জায়গায় ১০৫ কৃষক ঔষধি উদ্ভিদ পুদিনা পাতার চাষ করেছেন। সারাবছর পুদিনার চাষ হলেও বিশেষ করে প্রতিটি রমজানেই সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে থাকে পুদিনার। পুদিনা পাতার গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবেনা।
বহুল প্রাচীনকাল থেকেই পুদিনা পাতার ব্যবহার করে চলেছে মানুষ। বর্তমানে কৃষক পুদিনা পাতা চাষে অর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি প্রচুর কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হচ্ছে। প্রতিবছর এখান থেকে পুদিনা ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় নিয়ে যায় আগত পাইকার। কারণ কৃষক পরিবার রমজানে পুদিনা বিক্রি করবে বলে আশায় বসে আছেন।
স্থানীয় ভাবে পুদিনার অনেক চাহিদা থাকলেও লকডাউনের ফলে বাইর থেকে পাইকার সীতাকুন্ডে আসতে না পাড়লে তাইলে কৃষক বিপাকে পড়তে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন