বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুক্তাঙ্গন

তুরস্ক থেকে আমরা কী শিক্ষা পেলাম

প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ ইয়ামিন খান
গত ১৫ জুলাই সংঘটিত  তুরস্কের সামরিক অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করে দিয়েছে সাধারণ জনগণ। তুরস্কে ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করতেই সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা করা হয়েছিল। সেদিন মধ্যরাতে তুরস্কের সেনাবহিনীর একটি অংশ হঠাৎ করেই অস্বাভাবিকভাবে সেনা ছাউনি থেকে বেরিয়ে এসে ভারী অস্ত্রশস্ত্র ও ট্যাংক সহকারে বসফরাস দ্বীপ, কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো দখল করে নেয়। আঙ্কারাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে গুলিবর্ষণের শব্দ শুনতে পাওয়া যায় এবং খুব নিচ দিয়ে হেলিকপটার ও জঙ্গি বিমানগুলো উড়তে থাকে।
কারফিউ জারি করে শহরের রাস্তায় রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে সাজোয়া যান এবং ট্যাঙ্ক। এক পর্যায়ে সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পিস কাউন্সিলের অধীনে রাষ্ট্র পরিচালনার ঘোষণাও প্রদান করে। এই ঘটনার শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে লক্ষ লক্ষ জনতা। তারা জীবনবাজি রেখে সশস্ত্র সেনা সদস্যদের মুখোমুখি হয় এবং রাজপথ দখল করে নেয়। অনেককে ট্যাঙ্কের সামনে শুয়ে পড়তেও দেখা যায়। তারা জীবনবাজি রেখে অভ্যুত্থানকারী সেনা সদস্যদের সাথে লড়াই করেছে, সেনা সদস্যসহ নিহত হয়েছে ২৬৫ জন। সাধারণ জনগণ অভ্যুত্থানকারীদের পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। এখন সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে।
আর এভাবেই গণপ্রতিরোধের মুখে ব্যর্থ হলো সামরিক অভ্যুত্থান। একটি প্রাকৃতিক নিয়ম হলো জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তরি সামনে পৃথিবীর কোনো অপশক্তি টিকতে পারে না। এটাই তুরস্কের জনগণ প্রমাণ করলো। কারণ সেখানকার জানবাজ জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সর্বোচ্চ নেতৃতে¦র প্রতি দ্বিধাহীন, শর্তহীন, প্রশ্নহীন আনুগত্য প্রদর্শন করেছিল বিধায় অভ্যুত্থানকারীরা দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
আমাদের এই জন্মভূমি বাংলাদেশ, যা আমরা ১৯৭১ সালে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছিলাম, সেই দেশটিকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা ইরাক-সিরিয়া-আফগানিস্তান বানাতে উঠে-পড়ে লেগেছে। সম্প্রতি গুলশানের রেস্তোরাঁ এবং শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলা দেশকে অস্থিতিশীল করার ইঙ্গিত বহন করে। এতে করে আমাদের এই দেশ সা¤্রাজ্যবাদী পরাশক্তিদের চক্রান্তে পড়েছে বলেই আলামত পাওয়া যাচ্ছে। সুযোগ পেলে তারা উড়ে আসবে এবং এই দেশ এবং দেশের সম্পদ দখল করে নিবে। এটাই তাদের হীন উদ্দেশ্য। কিন্তু আমরা ১৬ কোটি বাঙালি কী পারি না তুরস্ক থেকে শিক্ষা নিয়ে জনগণের ঈমানি চেতনা ও ঐক্যের শক্তিকে রাষ্ট্রের পক্ষে ব্যবহার করতে?
আমরা কী পারি না এমন ঐক্যবদ্ধ জানবাজ জনতা গড়তে যারা সর্বোচ্চ নেতৃত্বের হুকুমের সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গিদের বরিুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। আর এটা করতে হলে রাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষসহ পুরো জাতিকে  এক আল্লাহর তওহীদ তথা সত্য ও ন্যায়ের উপর দ-ায়মান হতে হবে। আর  তাই আসুন, আমরা তুরস্ক থেকে শিক্ষা নিয়ে ১৬ কোটি বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হই।
ষ লেখক : পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা থেকে

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন