ইসলামপুর (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা
ইসলামপুরে জোরপূর্বক তালাকনামা ফরমে স্বাক্ষর নেওয়ার মামলায় কাজীসহ (নিকাহ্ রেজিস্টার) ৬ জনকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন জামালপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক। গত রোববার অভিযুক্ত আসামিরা আদালতে জামিনের প্রার্থনা করলে সংশ্লিষ্ট বিচারক মো. আল আমিন ওই আদেশ দেন। জানা যায়, জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় মোজাম্মেল হোসেন নামে এক যুবকের বিবাহিত স্ত্রীকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যে জোরপূর্বক তালাকনামায় স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগে জামালপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের পোড়ারচর বটচর গ্রামের আব্দুল হাই এর ছেলে মোজাম্মেল হোসেন গত ১৬ ডিসেম্বর ইসলামপুর বাজার থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে রওনা দেন। বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছিলে ৮-১০ লোক তাকে মোটরসাইকেল যোগে এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মিপূর্বক চোখ বেঁধে অপহরণ করে। এরপর অজ্ঞাত নামক স্থানে আটকিয়ে রেখে একই গ্রামের মামু আলীর ছেলে জতা ম-লের মেয়ে জরিনা ওরফে হাছিনা খাতুনকে বিয়ে করতে চাপ দেয়। মোজাম্মেল ওই মেয়েকে বিয়ে করতে অস্বীকার করলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে মোজাম্মেল হোসেনের পায়ের আঙ্গুল ভেঙে যায়। আহতবস্থায় মোজাম্মেল হোসেনের স্ত্রী মিতাকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যে তার কাছে তালাকনামা ফরমে স্বাক্ষর নিয়ে উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্টার (কাজী) শফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় জতা ম-লের মেয়ে হাছিনার সাথে ২০ লাখ টাকা দেনমোহর ধরে বিয়ের কাবিননামা তৈরি করে। তিন দিন পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার সময় মোজাম্মেলকে জতা ম-লের বাড়িতে নিয়ে আসলে সে কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মোজাম্মেল বাদী হয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর জামালপুরের ইসলামপুর আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে সংশ্লিষ্ট বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডি জামালপুরকে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। মালার তদন্ত কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় আসামিরা দোষীসাবস্ত মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। ওই মামলায় জতা ম-ল, তার ভাই আজাহার ও মেয়ে হাছিনাসহ আসামি করা হয়েছে একই এলাকার চিক্কারুর ছেলে ফকির আলী ও সুরুজ্জামান, আজাহারের ছেলে লিটন, স্থানীয় (নিকাহ্ রেজিস্টার) কাজী শফিকুল ইসলামকে। গত রোববার আসামিরা জামিনের প্রার্থনা করলে আদালতে একমাত্র হাছিনার জামিন মঞ্জুর করে বাকিদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন