শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

দোয়ারাবাজার-বাংলাবাজার সড়ক যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ এক যুগেও হয়নি সংস্কার

প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এএফএম ফারুক-চান মিয়া, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে

সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী অবহেলিত একটি উপজেলা হচ্ছে দোয়ারাবাজার। এখানে সীমান্তবর্তী এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের ৫নং সাব-সেক্টর ও স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর হিসেবে ঐতিহাসিক স্থান বাঁশতলার হকনগরকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে নয়নাভিরাম মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ। এখানে বাঁশতলাসহ সীমান্তবর্তী অঞ্চল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি হিসেবে সর্বমহলে ব্যাপক সুখ্যাতি রয়েছে। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থার চরম দৈন্যদশায় এ সুখ্যাতি এখন ধরে রাখা যায়নি। একমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থার চরম দুর্ভোগের কারণে পর্যটন শিল্পেও ধস নেমেছে। জানা গেছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে কাঁচা-পাকা, ছোট-বড় ও গ্রামীণ রাস্তাঘাটসহ প্রায় দেড় শতাধিক রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে সব রাস্তাই দীর্ঘদিন থেকে সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে প্রতিটি রাস্তা এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। এসব রাস্তায় যানবাহন ছাড়া হেঁটেও চলাচল করতে পারছে না সাধারণ মানুষ। ২০০১ সালে দোয়ারাবাজার-বাংলাবাজার (ব্রিটিশ) সড়ক পাকাকরণ করা হলেও এ যাবৎ কোন সংস্কার কাজ হয়নি। উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উপজেলা সদরসহ সারাদেশের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম প্রাচীন ব্রিটিশ সড়কটি। এভাবে সংস্কারবিহীন অবস্থায় যুগের পর যুগ পড়ে আছে ছাতকের নোয়ারাই-বাংলাবাজার সড়ক। ১৯৯১ সালে সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের সহযোগিতায় নোয়ারাই-বাংলাবাজার সড়ক পাকাকরণ হয়। এখনও এটি সংস্কার হয়নি। এ ছাড়া নোয়ারাই-নরসিংপুর রাস্তায় এখন যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কারবিহীন থাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে কৃষি জমির সাথে মিশে গেছে। এ রাস্তার সিংগেরকাছ গ্রামের কাছে একটি কালভার্টের এপ্রোচে মাঠি ভরাট হয়নি প্রায় ৫ বছর থেকে। এভাবে দোয়ারাবাজার-বগুলা সড়ক, নরসিংপুর-বাংলাবাজার, নরসিংপুর-চাইরগাঁও, বাংলাবাজার-বগুলা, বালিউরা-নরসিংপুর, চৌমুনা-বেরীগাঁও, দোহালিয়াবাজার-গুরেশপুর, দোহালিয়াবাজার-শিবপুর, দোহালিয়াবাজার-গাংচর-মেন্দা, দোহালিয়াবাজার-ধর্মপুর-মেন্দা, দোহালিয়াবাজার-পা-ারগাঁও-শ্রীপুর, বড়কাপন-পা-ারখাল-আজমপুর, পা-ারখান-শ্রীপুর, আমবাড়ী-কাটাখালী, দোয়ারাবাজার-লক্ষীবাউর-ছাতক, ছাতক-দোহালিয়া-সুনামগঞ্জ, দোহালিয়াবাজার-পানাইল-মঙ্গলপুর, দোয়ারাবাজার-লক্ষীপুরসহ প্রায় দেড় শতাধিক সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে দেড় থেকে দুই ফুট গভীর গর্ত হওয়ায় যানবাহন চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। ১ ঘণ্টার রাস্তা যেতে সময় লাগছে ৩ ঘণ্টা। অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। উপজেলার উল্লেখযোগ্য রাস্তাগুলো বিএনপি কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন পাকাকরণ করায় আ’লীগ সরকার এগুলো সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। জানা গেছে, আমবাড়িবাজার-কাটাখালীবাজার হয়ে ছাতকের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। সুনামগঞ্জ থেকে কাটাখালী পর্যন্ত ১৫ কি. মি. ইতোমধ্যেই সওজ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী ইকবাল আহমদ জানান। তবে কাটাখালী থেকে ছাতক পর্যন্ত এলজিইডির অধীনে রয়েছে। এ রাস্তা নিয়ে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় একাধিকবার আলোচনা হলেও কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। সুনামগঞ্জ থেকে দোয়াবাজারের আমবাড়িসহ প্রতিটি রাস্তার করুণ অবস্থা লক্ষ করা যাচ্ছে। এদিকে নোয়ারাই-নরসিংপুর রাস্তা সংস্কারের দাবিতে গত ১০ জুলাই নরসিংপুর বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এভাবে উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। সুনামগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আমিন বলেন, ১৫ কি. মি. রাস্তা সওজে হস্তান্তর করা হলেও শহর এলাকার ১৩০০ মিটার গত বছরে মেরামত করা হয়। দোয়ারাবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আলী বীর প্রতীক বলেন, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপজেলার সব রাস্তা মেরামতের প্রস্তাব রেখেছি। আশা করি সরকারি বরাদ্দ আসবে। অবহেলিত জনপদের মানুষদের বঞ্চনা ও কান্নার আওয়াজ জনপ্রতিনিধি/সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কি কখন পৌঁছবে?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Yusuf Un Nobi Babu ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:৩১ পিএম says : 0
উন্নয়নের নমুনা
Total Reply(0)
Md Mamun ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:৩১ পিএম says : 0
ডিজিটাল ভাই
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন