গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দিতে এলাকার মৎস্য উৎপাদনের জন্য মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। পুকুর সংস্কার না করার কারণে পানি শুকিয়ে যায়। ভবনগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার আড়কান্দিতে মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার নির্মাণ করা হয়। ১৯৭৬ সালে এডিপির সহায়তায় হ্যাচারির কার্যক্রম শুরু হয়। সরকারিভাবে স্থানীয় চাষীদের রেণু পোনার চাহিদা পূরণের চেষ্টা করা হয়। এ হ্যাচারি এলাকার মৎস্য চাষিদের চাহিদা পূরণে পোনা সরবরাহ করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে। ১৯৯৭ সালে ব্যক্তিমালিকানায় ১৫ বছরের জন্য লিজ প্রদান করা হয়। লিজ প্রদানের পর থেকেই ধীরে ধীরে খামারটির অবকাঠামো নষ্ট হতে থাকে। একপর্যায়ে হ্যাচারি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তখন খুড়িয়ে খুড়িয়ে কার্যক্রম বিহীনভাবে চলতে থাকে। ২০১২ সালে লিজের মেয়াদ শেষ হওয়ার ফলে সরকারের অনুকূলে আসে। এরপর বৃহত্তর ফরিদপুর মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়। প্রায় ১০ একর জমিতে নির্মিত খামারের ছোট-বড় ৭টি পুকুর রয়েছে। পুকুরগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার না করার কারণে পানি শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়। ফলে মাছ চাষে কাঙ্খিত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ খামারে দায়িত্ব পালনে ৫টি পদ থাকলেও ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন ও অফিস সহকারী মফিজ উদ্দিন দায়িত্ব পালন করছেন। ক্ষেত্র সহকারী, অফিস সহায়ক ও হ্যাচারি পরিচায়ক পদ শূন্য রয়েছে। খামারের পুকুরের পানি শুকিয়ে যায়, অবকাঠামো জরাজীর্ণ, বিদ্যুৎ নেই, পানি সঙ্কট, অফিস ও আবাসন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হয়। জরাজীর্ণ বাসস্থান ও অফিস হওয়ার কারণে এখানে কোনো কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হলেও সে অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যায়। এ খামারের হ্যাচারি থেকে সরকার বছরে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা আয় নির্ধারণ করলেও নানা সমস্যার কারণে প্রতি বছর লোকসান গুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে, এলাকার মৎস্য উন্নয়নে কাঙ্খিত সুফলে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এলাকার মৎস্য চাষিরা দ্রুত মৎস্য বীজ খামারটি সংস্কারসহ চালুর দাবি জানিয়েছেন। খামারটি চালু হলে এলাকার মৎস্য উৎপাদনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। উপজেলা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন জানান, খামারের পুকুরের পানি শুকিয়ে যায়, অবকাঠামো জরাজীর্ণ, বিদ্যুৎ নেই, পানি সংকট, অফিস ও আবাসন ভবন ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হয়। দ্রুত অফিস ও আবাসন সমস্যা সমাধানসহ পুকুরগুলো সংস্কারপূর্বক মৎস্য বীজ খামার চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিষয়টি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল হক জানান, মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার সচলের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে পুকুরগুলো খননের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। খামারটি পূর্ণ চালুর জন্য ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত এ উদ্যোগ কার্যকর হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন