শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শুধু অসুস্থতা নয়, আতঙ্কও সংক্রামক

মহামারীর শেষ : কবে, কীভাবে-০১

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২০, ৯:০২ পিএম | আপডেট : ৯:১৪ পিএম, ১২ মে, ২০২০

১৪৪৫ সালের একটি সিসিলিয়ান দেয়ালচিত্র। ১৩০০ শতাব্দির মাঝামাঝিতে বø্যাক ডেথ প্লেগ ইউরোপের জনসংখ্যার কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশকে হত্যা করেছিল। সূত্র: সংগৃহীত


গোটা বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীতে মানুষের মৃত্যু মিছিল ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। মিলছে না কোনো প্রতিষেধক। নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সংক্রমণ। কোথায় এর শেষ, বলতে পারছেন না কেউই। বিশ্বব্যাপী মহামারীর এই আবহে আতঙ্কিত মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে বার বার, কোভিড-১৯ মহামারীটি কখন শেষ হবে এবং কীভাবে?

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিবেদনটি ৫ পর্বে উপস্থাপন করা হবে। আজ থাকলো ১ম পর্ব :
ইতিহাসবিদরা বলছেন যে, একটি সংক্রামক মহামারী একাধিক উপায়ে শেষ হতে পারে। তবে প্রশ্ন হ’ল, এটি কে বা কাদের উছিলায় শেষ হতে পারে এবং কে বা কারা এর সমাপ্তি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিতে পারে? ইতিহাসবিদদের মতে, মহামারীর সমাপ্তি সাধারণত দুটি প্রকারে হয়ে থাকে: চিকিৎসাগতভাবে, যখন সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার হ্রাস পায় এবং সামাজিকভাবে, যখন এই রোগ সম্পর্কে ভীতি হ্রাস পায়।
জনস হপকিন্সের চিকিৎসার ইতিহাসবিদ ড. জেরেমি গ্রিন বলেছেন, ‘মানুষ যখন জিজ্ঞাসা করে, ‘কখন শেষ হবে?’, তারা সামাজিক সমাপ্তিটি সম্পর্কে জানতে চায়।’ অন্য কথায়, সমাপ্তি আসে রোগ নির্মূল হয়ে যাওয়ার কারণে নয়, বরং মানুষ ভীত জীবন যাপনে ক্লান্ত হয়ে যায় এবং রোগের সাথে বসবাস করা শিখে যায়, সেকারণে।
হার্ভার্ডের ইতিহাসবিদ অ্যালান ব্র্যান্ডট বলেছেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, ‘আমরা অর্থনীতি খোলার বিষয়ে বিতর্কে দেখেছি, তথাকথিত সমাপ্তি নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনেক প্রশ্ন উঠেছে, যা চিকিৎসা এবং জনস্বাস্থ্যের তথ্যের ভিত্তিতে নয়, বরং সামাজিক-রাজনৈতিক মাধ্যমে।’
এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ দোরা ভার্গা মন্তব্য করেন যে, শেষগুলি খুব, খুব অসংলগ্ন হয়। তিনি বলেন, ‘পিছনে তাকালে, আমাদের একটি দুর্বল আখ্যান রয়েছে। কার উছিলায় মহামারীটি শেষ হতে পারে এবং কে এর ঘোষণা দিতে পারে?’
ভয়ের পরিক্রমায় : এমনকি মহামারীর অসুস্থতা ছাড়াই মহামারীর ভয় দেখা দিতে পারে। ডাবলিনের রয়্যাল কলেজ অফ সার্জনস’র ড. সুসান মারে ২০১৪ সালে আয়ারল্যান্ডের গ্রামীণ হাসপাতালে সহকর্মরত অবস্থায় প্রথম এ রকমটি দেখেছিলেন।
পূর্ববর্তী মাসে পশ্চিম আফ্রিকার ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ ইবোলা মহামারীতে মারা গিয়েছিল। এটি একটি ভয়াবহ রোগ যা অত্যন্ত সংক্রামক এবং বেশিরভাগ সময়ই প্রাণঘাতী। মহামারীটি হ্রাস পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল এবং আয়ারল্যান্ডে কোনো সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি, তবুও জনসাধারণের ভয় ছিল চোখে পড়ার মতো।
ড. মারে সম্প্রতি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনের একটি নিবন্ধে স্মরণ করেন, ‘রাস্তায় এবং ওয়ার্ডগুলিতে মানুষ উদ্বিগ্ন।’ তিনি বলেন, ‘ভুল রঙের ত্বক আপনাকে বাসে বা ট্রেনে সহযাত্রীদের নজরদারিতে রাখার জন্য যথেষ্ট। আপনি একবার কাশি দিন এবং দেখবেন তারা আপনার কাছ থেকে দ‚রে সরে পড়বেন।’
ডাবলিন হাসপাতালের কর্মীদের সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে সতর্ক করা হয়েছিল। এতে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল যে, তাদের কাছে সুরক্ষামূলক সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। (চলবে)

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন