গত ২রা মার্চ খাগড়াছড়ির রামগড় সীমান্ত দিয়ে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক জোর পূর্বক বাংলাদেশে পুশ-ইন চেষ্টা, ১লা এপ্রিল রামগড় সীমান্তের থানাঘাট এলাকা দিয়ে এক পুরুষ মানসিক ভারসাম্যহীনকে পুশ-ইনের চেষ্টা এবং এর ৫দিনের মাথায় একই ব্যক্তিকে মাটিরাঙ্গা সীমান্তে পুনরায় পুশ-ইনের চেষ্টা ব্যর্থ হবার পর এবার নিজ দেশের এক বৈধ নাগরিককে দেশে ঢুকার অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিএসএফ।
সূত্র মতে, আজ (১৩ মে) বুধবার দুপুর আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে রামগড় ব্যাটালিয়ন (৪৩ বিজিবি) এর অধীনস্থ লাচারীপাড়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ২২১৮/৬-আরবি এর দিক দিয়ে ফেনী নদী অতিক্রম করে গোপাল চক্রবর্তী(৫৫) নামের এক ভারতীয় নাগরিক নিজ দেশে প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় বিএসএফ সদস্যরা তাকেভারতে প্রবেশে বাঁধা দেয়। গোপাল চক্রবর্তীর কাছে থাকা ভারতীয় পাসপোর্টের সূত্রে জানা যায়, তিনি দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুমস্থ মানিকগড় এলাকার বাসিন্দা দেবেন্দ্র চক্রবর্তী ও চন্দ্রবাসী চক্রবর্তী পুত্র। তার ভারতীয় পাসপোর্ট নং- R-5844098, ভিসার মেয়াদ-০১ জানুয়ারি ২০২০ হতে ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত।
এসময় বিষয়টি বিজিবির নজরে আসলে তাৎক্ষনিক দুপুর দেড়টার দিকে লাচারীপাড়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ২২১৮/৬-আরবি এর নিকট উভয় দেশের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে একটি স্পট পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিজিবি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে তাদের দেশের নাগরিককে ফেরত নেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হলে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ উল্লেখিত ভারতীয় নাগরিকের সকল বৈধ কাগজপত্র (ভারতীয় পাসপোর্ট ও ভিসা) থাকা সত্ত্বেও তাকে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় বারবার তাকে ভারতীয় কাগজপত্রসহ বিএসএফের কাছে উপস্থাপন ও উল্লেখিত ভারতীয় নাগরিকও বিএসএফ’কে অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাকে ভারতে ফেরত নেয়া হয়নি।
পরবর্তীতে বিএসএফ কর্তৃক উল্লেখিত ভারতীয় নাগরিককে ফেরত না নেয়ায় বিজিবি কর্তৃক তাকে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের চেষ্টার দায়ে রামগড় থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছে বিজিবি।
ভারতীয় নাগরিক গোপাল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তিনি তি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের মহুরীঘাট এলআইসিপি এবং বাংলাদেশের বিলোনিয়া ল্যান্ড পোর্ট ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। একজন ব্রাক্ষণ হওয়ায় তিনি তিনি বিভিন্ন জায়গায় পুজা করানোর জন্য বাংলাদেশে এসেছেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানকালীন তিনি তার আত্মীয়ের বাড়ী (স্ত্রীর বড়বোনের বাড়ী) হাজিরপাড়া, নোয়াখালীতে অবস্থান করেছেন।
রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ মো, সামসুজ্জামান জানান- ভারতীয় নাগরিককে বিজিবি কর্তৃক থানায় হস্তান্তরের ঘটনা স্বীকার করে জানিয়েছেন, উক্ত ব্যক্তির পাসপোর্ট অনুযায়ী তিনি এখনো বাংলাদেশে বৈধ। তার বাড়ি রামগড়ের ওপারে সাব্রুমে হওয়ায় এবং করোনা পরিস্থিতিতে ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় তিনি রামগড় সীমান্ত দিয়ে নিজ দেশে ফেরত যাবার চেষ্টা করেছিলেন, তবে বিএসএফ তাকে ফেরত নেয়নি। এমতাবস্থায় তাকে বিলোনিয়া ল্যান্ড পোর্ট ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন