এমএ ছালাম, মহাদেবপুর (নওগাঁ) থেকে
নওগাঁর মহাদেবপুরে ভরা বর্ষা মৌসুমেও নদীনালা এবং খালবিলে মাছ না থাকায় শত শত জেলে পরিবার জাল-দরি ও নৌকা নিয়ে বেকার অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। তাদের জাল-দরি-নৌকা সবই রয়েছে, কিন্তু মাছ নেই নদীনালা, খালবিল ও জলাশয়গুলোতে। এতে বেকার হয়ে পড়া জেলে পরিবারগুলোর দিন যাচ্ছে খেয়ে না খেয়ে। বাজারে মাছের দাম ভাল থাকলেও নদী এবং জলাশয়গুলোতে মাছ না থাকায় এসব পরিবার ঠিকমত আয় করতে পারছে না। নদীনালা এবং খালেবিলে সারাদিন জাল-দরি ও নৌকা নিয়ে ছুটে বেড়ালেও সংসার চালানোর মত মাছ তারা পাচ্ছে না। ফলে উপজেলার প্রায় ৩ শতাধিক জেলে পরিবার বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কেউ ডাল-ভাতের তাগিদে খ-কালীনভাবে অন্যকোন পেশায় আত্মনিয়োগ করে কোন রকমে সংসার চালাচ্ছেন। উপজেলার দোহালী, ফরমানপুর, মহিষবাথান, রামচরণপুর, লক্ষণপুর ও শিবগঞ্জসহ বিভিন্ন গ্রামে রয়েছে ৩ শতাধিক জেলে পরিবার। এরা সকলেই বংশানুক্রমে এ পেশার সাথে জড়িত। এক সময় আত্রাই নদী, বিলমোহাম্মদপুর বিল, শামুককাল বিল, ফরমানপুর বিল, সাতবিলা বিল, বড়বিলা বিল ও লক্ষণপুর বিলসহ ছোটবড় অগণিত খালবিল ও জলাশয়ে এসব জেলেরা মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ওইসময় এসব নদীনালা এবং খালবিলে পর্যাপ্ত পরিমাণ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে ওইসব খালবিল এবং জলাশয়ে পানি থৈথৈ করলেও তাতে মাছ নেই। আবার বেশিরভাগ খালবিল এবং জলাশয় মাটি দিয়ে ভরাট করে বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এ কারণে এ উপজেলায় দেশীয় প্রজাতির মাছের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এখন হাতেগোনা যে কয়টি খালবিল ও জলাশয় রয়েছে সেগুলোও মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। উপজেলার মৎস্যজীবীদের মধ্যে দ্বীপক হালদার কানু হালদার, তপন হালদার, প্রদীপ হালদার, মানিক হালদার ও সিধু ওড়াও জানায়, এখানকার একমাত্র আত্রাই নদীসহ অন্যান্য খালবিল ও জলাশয়গুলোতে এ ভরা মৌসুমেও মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। আবার এসবের বেশিরভাগ জায়গা মাটি ভরাট করে বসতবাড়ি নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রভাবশালীরা গড়ে তোলায় এসব জলাশয়ের আয়তন কমে মাছশূন্য হয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্যান্য পেশায় কর্মরত হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন