ইনকিলাব ডেস্ক : লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে লক্ষাধিক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এসব এলাকায় ত্রাণের জন্য হাহাকার করছেন বন্যাদুর্গত মানুষ।
কুড়িগ্রামে ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা : কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ব্রীজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানির তোড়ে ৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে গেছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদী অববাহিকার ৪০টি ইউনিয়নের ২৫০ গ্রামের ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। ১০০টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
এদিকে দুর্গত এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গেছে দিনমজুরদের কাজ-কর্ম। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো: আব্দুল মোত্তালিব জানান, বন্যা কবলিতদের জন্য ৯২ মে. টন চাল ও ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
লালমনিরহাটেও অবনতি, ত্রাণ নেই
লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা : লালমনিরহাটের কুলাঘাট, রাজপুর ও খুনিয়াগাছ ইউপির ১৬টি চর গ্রাম, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন, আরজী ছালাপাক, চন্ডিমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী এবং তুষভা-ার ইউনিয়নের ২১টি চর গ্রামের হাজার হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তারা কোনো ত্রাণসামগ্রী পাননি। দ্রুতই ত্রাণ সামগ্রী পঠিয়ে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আলম। আর ত্রাণ সহযোগিতার চেয়ে দ্রুত নদীভাঙন কমাতে ব্যবস্থা নেয়ায় দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সুন্দরগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতাঃ : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। চরাঞ্চলের পানিবন্দি লোকজন সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। একটি ইউনিয়নে ত্রান বিতরণ করা হয়েছে। ৬/৭টি মেডিকেল টিম পানিবন্দিদের মাঝে ওষুধ বিতরণ করেছেন।
জানা গেছে, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরগঞ্জের চরাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পরে কয়েক হাজার পরিবার। গত ৫ দিন থেকে লোকজন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের বাড়ি ও আশে-পাশে পানিতে ভরে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় কাজে বের হতে পারছেন না। বাড়ি হতে বের হতে হলে নৌকার প্রয়োজন। অনেকেই খুবই জরুরী কাজে নৌকায় করে পারাপার হচ্ছেন। গতকাল এডিসি (রিভিনিউ) শফিকুল ইসলাম ও ইউএনও (ভারঃ) হাবিবুল আলম কাপাসিয়া ইউনিয়নের বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে ৬/৭টি মেডিকেল টিম বিভিন্ন চরে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বিতরণ করেন। এছাড়া তারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাটশালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বন্যার্তদের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও স্যালাইন বিতরণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন