চুরির অপবাদ সইতে না পেরে রামগড় উপজেলার পৌর এলাকার মাষ্টার পাড়া গ্রামের উলাপ্রু মারমা(সুমন)-৩২, নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে।
সে মাষ্টার পাড়া গ্রামের মৃত চাইলাপ্রু মারমার ৪ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। এ ঘটনা ঘটে(১৬ মে) শনিবার সন্ধ্যায়। স্থানীয় ও পরিবার সদস্যরা এ প্রতিনিধিকে জানান- উলাপ্রু মারমা(সুমন) রামগড় উপজেলার পৌর এলাকার মাষ্টার পাড়া গ্রামে বিধবা মায়ের সাথে থাকতেন। সে রামগড় খাদ্য গুদামে দীর্ঘদিন ধরে মাষ্টার রুলে ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করতেন।
গত ১৬ মে সন্ধ্যায় রামগড় খাদ্য গুদামের ওসিএলএসডি আসাদুজ্জামান ভূঁইয়ার সাড়ে ৪ লাখ টাকা চুরির অভিযোগসহ মারধর করেন বলে জানা গেছে। এ অপমান সইতে না পেরে উলাপ্রু মারমা উরফে সুমন বিষপান করে আত্মহত্যা করেন।
এদিকে রামগড় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু মারমা এ প্রতিনিধিকে বলেন- গত ১৬ মে সন্ধ্যায় রামগড় খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া তার ছোটভাইকে টাকা চুরির দায়ে গালমন্দ করার পর অবস্থা খারাপ দেখে আমাকে খবর দেয়। এসে দেখি তার ছোট ভাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে আর বলছে দাদা আমি স্যারের টাকা চুরির বিষয়ে কিছুই জানিনা বলে বারবার একি কথা বলে যাচ্ছে। পরে দেখি কিছুক্ষন পর বমি করছে, তার সাথে ঔষধের গন্ধ বের হচ্ছে। তাৎক্ষণিক সন্ধ্যা ৭টা দিকে রামগড় হাসপাতালে ভর্ত্তি করায় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার (১৭মে) দুপুরে ১২টায় মারা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ রামগড় হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তদন্ত অফিসার এস আই আনোয়ার। এ রিপোট লেখা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি হাসপাতাল মর্গ থেকে লাশ এখনো রামগড়ে এসে পৌছায়নি।
আত্মহত্যা কথাসহ চুরি হওয়া টাকার উৎস খোজতে গিয়ে সরেজমিনে পাওয়া তথ্যমতে -নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন পূর্বকার খাদ্য পরিদর্শকগন প্রতি কেজি চাউল এর কোয়ালিটি বাবদ ১টাকা পঞ্চাশ পয়সা করে কর্তন করতো। কিন্তু বর্তমানের খাদ্য পরিদর্শক যোগদানের পর থেকে প্রতি কেজি চাউলের কোয়ালিটি বাবদ ৩টাকা হারে কর্তন করা হচ্ছে বলে জানান।
ব্যবসায়ীগন প্রতিবাদ জানালেও পাইনি কোন প্রতিকার।
উল্লেখ্য- যে গুচ্ছ গ্রামের কার্ড দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের কাছে বন্ধক থাকায় ব্যবসায়ীরা ঐ কার্ডের (রেশন কার্ড) বিপরীতে গুচ্ছগ্রামের চাউল উত্তোলন করতে হয় বলেও জানান।
এবিষয়ে রামগড়ের ওসিএলএসডি আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া নিকট কিছের টাকা, কোন উৎস থেকে এলো টাকা, রেশন কার্ড, টাকা চুরি ও নিহতের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন কিছু বলতে রাজি হননি।
এ দিকে রামগড় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। ডাক্তারী রিপোর্ট পেলে পরবর্তীত্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ মো: সামসুজ্জামান।
এদিকে রামগড় খাদ্য কর্মকর্তার অফিসে হঠাৎ সাড়ে ৪ লাখ টাকা কোথা থেকে এলো বা কি করে চুরি হলো এনিয়ে চলছে নানান কথা। কেউ কেউ বলছে এর রহস্যকি জানতে অনেকের আগ্রহের অপেক্ষায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন