শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

এবার বাংলালিংক এয়ারটেলে অডিট

এসএমপি নীতিমালা লঙ্ঘনে জিপিকে নোটিশ দেবে বিটিআরসি ১০০ কোটি টাকা বিটিআরসিতে জমা

ফারুক হোসাইন : | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

অডিট (নিরীক্ষা) ইস্যুতে গ্রামীণফোন ও রবিকে আদালতে যেতে হয়েছে। আদালতের নির্দেশনায় ইতোমধ্যে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসিতে দুই হাজার কোটি টাকা দিয়েছে গ্রামীণফোন। যার সর্বশেষ কিস্তির এক হাজার কোটি টাকা গতকাল মঙ্গলবার বিটিআরসির কাছে হস্তান্তর করেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান। ৫ মাসে ১৩৮ কোটি টাকা দেবে রবি। এই দুই অপারেটরের অডিটের পর এবার বাংলালিংক ও এয়ারটেলের অডিট শুরু করেছে বিটিআরসি। কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মিত্র বলেন, গ্রামীণফোন ও রবির অডিটের পর আমরা এখন বাংলালিংক ও এয়ারটেলের অডিট শুরু করেছি। দীর্ঘদিনে মাত্র দুটি কোম্পানির অডিট করা হলেও এখন ধীরে ধীরে অন্যান্য কোম্পানিগুলোর অডিট করা হবে এবং কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক।

বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, নানা রকম ঝক্কি-ঝামেলা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েও বড় দুই অপারেটরের অডিটের ইস্যুতে সাফল্য পেয়েছে কমিশন। ফলে তারা এবার গ্রাহক বিচারে তৃতীয় বৃহত্তম ও এক সময়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম অপারেটর বাংলালিংক এবং রবির সাথে একীভূত হয়ে যাওয়া অপাটের এয়ারটেলের অডিট করবে। কমিশন গত ডিসেম্বরে বাংলালিংকের অডিটর নিয়োগে দরপত্র আহবান করে। এত সব মিলে আট নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়। যাচাই বাছাই শেষে এখন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আর্থিক প্রস্তাব চাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। একইভাবে অডিটর নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে এয়ারটেলে।

অপারেটর দুটি কমিশনের নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করেছে কিনা, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে কিনা অডিটের মাধ্যমে এসব বিষয় যাচাই করবে সংস্থাটি। এই অডিট কার্যক্রম পরিচালনা এবং অডিট ফার্ম নিয়োগের সকল কার্যাবলী সম্পন্ন করার জন্য অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ি কোন অপারেটর কমিশনের নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য নিরীক্ষা করানোর বিধান রয়েছে। এরই আলোকে ইতোমধ্যে গ্রামীণফোন ও রবির অডিট সম্পন্ন হয়েছে। একইভাবে বাংলালিংক ও এয়ারটেলের ইনফরমেশন সিস্টেম তথা রাজস্বের বিষয় নিয়ে অডিট সম্পন্ন করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অপারেটরের রাজস্ব ফাঁকি এবং সরকারের রাজস্ব নিশ্চিত করাই এই অডিটের মূল লক্ষ্য বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এর আগে বাংলালিংকে অডিট করতে ২০১১ সালে অডিটর নিয়োগ দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু মাঝপথে এসে অডিটর কাজ করবে না বলে জানায়।ওই সময় অডিটর বদলে নতুন কোম্পানিকে দায়িত্ব দিলেও তারাও এক পর্যায়ে অডিট করতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে অডিট প্রতিষ্ঠান আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোম্পানি কখনোই এর সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। পরে ২০১৭ সালে আবারও বাংলালিংকের হিসাব অডিটের উদ্যোগ নেয় বিটিআরসি। অডিটর বাছাই করতে গিয়েও সময় বেশি চলে যাওয়ায় এক পর্যায়ে তা বাতিল করে দেয় কমিশন।

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ: সম্প্রতি করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে গ্রামীণফোন তার সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (এসওএফ) থেকে ১০০ কোটি টাকার বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্যাকেজ ঘোষণা করে। এর মধ্যে ২৫ হাজার চিকিৎসকের জন্য ১ টাকায় ১ জিবি ইন্টারনেট, ১০ কোটি মিনিট ফ্রি ও নির্দিষ্ট কলরেট। এই ঘোষণার ফলে অপারেটরটি সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) হিসেবে যেসব নীতিমালা মেনে চলা দরকার ছিল তা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে বাকী তিন অপারেটর। গ্রামীণফোন এসএমপি নীতিমালা লঙ্ঘন করে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে জানিয়ে তারা লিখিতভাবে বিটিআরসিতে অভিযোগ জমাও দিয়েছেন। এ বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মোঃ জহুরুল হক বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভাইস-চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি গ্রামীণফোনকে নোটিশ দেবে এবং ১৫ দিনের মধ্যে তার জবাব দেবে। সেই জবাব পাওয়ার পর কমিটি প্রয়োজন হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

গ্রামীণফোন নীতিমালা লঙ্ঘন করছে, ছোট অপারেটরদের ক্ষতি করছে এবং এসওএফের অর্থে প্রচারণা চালাচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে ইয়াসির আজমান বলেন, তারা প্রতিবছরই এসওএফ ফান্ড থেকে বিভিন্ন খাতে সহায়তা করে থাকেন। তবে প্রচারণা চালানো হয়নি। এবার এটি করা হয়েছে যাতে অন্যরা উদ্বুদ্ধ হয়। আর মার্কেট নষ্ট করা বা ছোট অপারেটরদের ক্ষতি করার কোন ইচ্ছে গ্রামীণফোনের নেই।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন