শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

উপকূলবাসীর প্রাণের দাবি

টেকসই বাঁধ

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

দিনে নদীর ভাটা আটকালেও রাতের জোয়ারে ভেসে যায় উপকূলীয় অঞ্চলের বাঁধ। প্রকৃতির এ যেন ভাঙা গড়ার খেলা। আম্পানে খুলনা সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের কয়েক হাজার মৎস্য ঘের ভেঙে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আর গত বুধবার রাতে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে বাকি বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি গাছপালা ২০-২৫ মিনিটে তছনছ করে দেয়।
বিধ্বস্ত উপক‚লবাসীর ত্রাণের চেয়ে প্রাণের দাবি টেকসই বাঁধ নির্মাণ। খেয়ে না খেয়ে বাঁচতে চায় কিন্তু চায় দ্রুত বাঁধ মেরামত। কোন আশ্বাসের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় না এই জোয়ার ভাটায় বাঁধ ভাঙার খেলায়।
সেনা সদস্য ও পাউবো কয়েকটি স্থানে সহযোগিতা করলেও অধিকাংশ বেড়িবাঁধে হাজার হাজার নারী পুরুষ বেঁচে থাকার সংগ্রামে নিজেরাই এক একজন যোদ্ধার মত কাজ করছেন। দিন রাত এ এক স্বেচ্ছাশ্রমের মহা কর্মকান্ড।
খুলনা সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের কয়েক হাজার মৎস্য ঘের ভেঙে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা জেলায় ৯৬ কোটি ৭২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা, সাতক্ষীরায় ১৭৬ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ও বাগেরহাটে প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া খুলনা বিভাগে ৩১টি উপজেলা ৬৪ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার টাকার সাদা মাছ, ১৮৮ কোটি ৮ লাখ টাকার চিংড়ি মাছ, ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকার সাদা মাছের পোনা ও ১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার চিংড়ি মাছের পোনা, ১ কোটি ৮৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকার কুচিয়া ও কাকড়া এবং ১০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার উপক‚লীয় এলাকার বাঁধ ধসে গেছে ৫৪ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। লক্ষাধিক মানুষ এসব বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৮৪ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপক‚লীয় এলাকায় বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু করেছেন গ্রামবাসী। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে এবং সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে জানান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক।
সূত্রমতে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে উপক‚লের অধিকাংশ বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে চারিদিকে শুধু থৈ থৈ করছে। ঈদের দিন থেকে শুরু করে এখনও বাঁধ মেরামতে সময় পার করছেন আইলা ও আম্পানে ক্ষতবিক্ষত হওয়া উপক‚লবাসী। করোনায় নেই উপার্জন, তার উপর আম্পানের প্রভাবে আশ্রয়হীন খুলনার উপকূলের লাখো মানুষ। তাইতো ম্লান তাদের এবারের ঈদ আনন্দ।
পাউবো’র খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ইনকিলাবকে বলেন, বাঁধ আটকানোর চেষ্টা চলছে। টেকসই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য গত বছর কয়েকটি মেগা প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। এগুলো আলোর মুখ দেখলেই উপকূলবাসীর দুঃখ অনেকাংশে লাঘব হতো। এই মুহূর্তে জোড়াতালি দেয়া ছাড়া আমাদের হাতে আর কিছু নেই।
খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে কয়রায় বেশি ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত অনেক স্থানেই বাঁধ সংস্কার করেছি। তবে প্রতিবার জোয়ারের পানির চাপে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। চেষ্টা করছি সকল বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার করার। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন