কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) উপজেলা সংবাদদাতা
কাপ্তাই উপজেলার সর্বত্র মাদকদ্রব্য ও ইয়াবার রমরমা বাণিজ্য। হাত বাড়ালেই ইয়াবা পাওয়া যাচ্ছে। যুব সমাজ দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা গাঁজার রমরমা বাণিজ্য চলছে। প্রশাসনের তেমন কোন নজরদারি চোখে না পড়লেও কাপ্তাই উপজেলার স্থানীয়দের উদ্যোগে এ সকল মাদক ব্যবসায়ীদের খোঁজখবর নিয়ে মাদক আটকের পরে উত্তম-মাধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সরেজমিন দেখা যায়। কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা রাইখালী, ডংনালা, ফেরিঘাট, মিশন এলাকা, চন্দ্রঘোনা পোস্ট অফিস, কলাবাগান, কয়লার ডিপো, ছাদেকের ঘোনা, মাস্টার কলোনী, বারঘোনা, পোট্রল পাম্প, কলেজ গেইট, বড়ইছড়ি, তম্মুপাড়া, শিলছড়ি, শীতার পাহাড়, বালুরচর, চিৎমরম, ব্যাংঙছড়ি, লগগেট, টুইন টাওয়ার, লগগেইট কুড়–ম, নতুনবাজার পশ্চিমপাড়া ঢাকাইয়া কলোনী, পোট্রল পাম্ম এলাকা, স্বর্ণ টিলা, বিএফ আইডিসি টিলা, ফরেস্ট এলাকা, নৌবাহিনী রোড এলাকা, নতুন রাস্তা আগর বাগান এলাকা, শিল্প এলাকা, জাকির হোসেন স’মিল এলাকা, জেটিঘাট, প্রজেক্ট পুরাতন বাজার ও ব্রিকফিল্ড এলাকাসহ এ সকল ৩৬টি স্পটে প্রতিদিন চলছে ইয়াবা, গাঁজা ও কোন কোন ক্ষেত্রে পাহাড়ি মদের ব্যবসা। গত দু’মাসে কাপ্তাই বিজিবি, কাপ্তাই থানা, পুলিশ ফাঁড়ি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বেশ কিছু মাদকদ্রব্য ইয়াবা আটক করে। এবং তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করার পর সাজা দেওয়া হয়েছে। এদিকে কাপ্তাই বিজিবি গত মাসে চন্দ্রঘোনা বড়খোলা পাড়া অভিযান চালিয়ে ১৩০ লিটার চোলাইমদ উদ্ধার করে। কাপ্তাই থানার বিভিন্ন কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে গত দুমাসে বিপুল পরিমাণ চোলাই মদ ও ইয়াবা উদ্ধার করেছে বলে জানা যায়। এদিকে কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গত দুমাসে অভিযান চালিয়ে ৫-৭ জনকে ইয়াবা ও মাদক সেবনকারীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক বছর, ছয় মাস ও এক মাস করে করাদ- দিয়েছে বলে এস আই কামরুল উল্লেক করেন। কাপ্তাই এলাকার উপরোক্ত স্পর্টগুলোতে প্রতি দিন-রাত চলছে মাদক ক্রয়-বিক্রয়। অনেক সচেতন অভিভাবক তাদের স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছেলেদের নিয়ে প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটছে। এ নেশার জগত হতে কিভাবে ছেলেদের বাঁচানো যায়। ইতোমধ্যে নেশায় আশক্ত হয়ে বিপথে যাওয়ার দরুণ অভিভাবক ২ জনকে পুলিশের মাধ্যমে সোপর্দ করে জেলে দিয়েছে বলে অভিভাবকগণ উল্লেখ করেন। এদিকে কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাট, রাইখালী প্রতিদিন ইয়ারা, গাঁজা ও পাহাড়ি মদের রমরমা বাণিজ্য চলছে। গত কিছুদিন পূর্বে চন্দ্রঘোনা ফেরিঘাট হতে সিএনজি এক চালককে ইয়াবাসহ আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরে রাতে রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এলাকার সচেতন মহল জানান, প্রতিদিন এ চন্দ্রঘোনা, রাইখালী, ফেরিঘাট হতে প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে ফ্রি স্টাইলে মাদকদ্রব্য পাচার হলেও রহস্যজন কারণে নীরব রয়েছে প্রশাসন। তারা এর সঠিক জবাব চাই বলে উল্লেখ করেন। কাপ্তাইয়ে ১৯ জুলাই ২০১৬, এক মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা ও গাঁজা নিয়ে আসার পথে অন্য আর মাদক চক্রের লোক আগর বাগান নিয়ে গিয়ে সিএনজি চালক ও ওই মাদক ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ও ইয়াবা নিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে। এদিকে কাপ্তাই উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নুর উদ্দিন সুমন বলেন, যে হারে ইয়াবা, গাঁজা আর মদের নেশায় যুব সমাজ, ছাত্ররা ধ্বংস হচ্ছে অতিশয় এর কোন বিহিত ব্যবস্থা না নিলে রোধ করা কঠিন হয়ে যাবে। এখন হাত বাড়ালেই ছোট ছোট ছেলেদের নিকট নেশার ট্যাবলেট ইয়াবা পাওয়া যায়। ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, আমরা আর সহজে পুলিশের নিকট দিব না, নেশাখোরদের ধরে সাজা দিয়ে মাদকদ্রব্য জনগণের সামনে ধ্বংস করে ফেলা হবে বলে উল্লেখ করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে নতুনবাজার পশ্চিম পাড়া এলাকায় বাদশা নামের এক ইয়াবা সেবনকারীকে হাতে নাতে আটক করে। পড়ে সাজা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এবং দুই পিস ইয়াবা তাৎক্ষণিক ধ্বংস করে দেওয়া হয়। তিনি উল্লেখ করেন, কাপ্তাই একজন মাদক সম্রাট রয়েছে সে গোপনে থেকে এ ব্যবসা করছে। প্রশাসন তার নাম জানলেও রহস্যজন করণে আটক হচ্ছে না। সবসময় ধোঁয়াসায় রয়ে যাচ্ছে। পুশিল প্রশাসন এ ব্যাপার আরো দায়িত্ববান হলে মাদক নির্মূল করা সহজ হবে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন। না হয় অচিরেই যুব সমাজ ধ্বংস হবে বলে মত প্রকাশ করেন সকলে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন