মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসন নীরব
মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে
দুপচাঁচিয়া উপজেলায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই বিভিন্ন হাট-বাজারে নিষিদ্ধ ও ভয়াবহ ক্ষতিকর পিরানহা মাছ অবাধে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পিরানহা মাছ বিক্রির পরিমাণ কম হলেও তা বিক্রি হচ্ছে, লোকজন অবাধে কেনাকাটাও করছে। সরকারিভাবে চাষ নিষিদ্ধ এবং দেশীয় মাছের জন্য চরম ক্ষতিকর আফ্রিকায় রাক্ষুসে পিরানহা মাছের ডিম উৎপাদন ও চাষ অব্যাহত রয়েছে। অধিক মুনাফার আসায় এক শ্রেণি মৎস্য ব্যবসায়ী মৎস্য বিভাগের সাথে আঁতাত করে ক্ষতিকর এ পিরানহা মাছের চাষ করে তা বাজারজাত করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণেই “রূপচাঁদা নাম দিয়ে ব্যাপক হারে পিরানহা মাছ বেচা-কেনা হলেও মৎস্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসন রয়েছে নীরব। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক পুকুরে রূপচাঁদা নামের আড়ালে রাক্ষুসে ও ক্ষতিকর পিরানহা মাছের ডিম উৎপাদন এবং উৎপাদিত মাছ বিভিন্ন হাটবাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে দুপচাঁচিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, ক্ষতিকারক এই মাছটি দেশের অন্যান্য স্থানের মত দুপচাঁচিয়া উপজেলায় উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ সম্পূর্ণভাবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এরপরও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বেশকিছু মাছ ইতিপূর্বে আটক করে পরে তা নিধন করা হয়। তিনি আরও জানান, ক্ষতিকর নিষিদ্ধ এই পিরানহা মাছ সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলার সদরসহ পৌরসভা ও জিয়ানগর, চামরুল, গুনাহার, গোবিন্দপুর, তালোড়া ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে প্রচার চালানো হয়েছে। যদি কেউ এই ভয়ানক পিরানহা মাছ উৎপাদন ও বেচাকেনা করে তার বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে ১৬ অনুচ্ছেদে শাস্তির বিধান সম্পের্কে সচেতন করা হয়। এর পরও কিছু অর্থলিপ্সিু অসৎ মৎস্য ব্যবসায়ী তাদের নিজের পুকুরে এসব ভয়ানক পিরানহা মাছ গোপনে চাষ করে বাজারজাত করছেন বলে তিনি স্বীকার করেন। আগামীতে এই মাছ উৎপাদনকারীদেরক পুকুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হবে বলে তিনি জানান। এদিকে পিরানহা মাছ বাজারজাতকারী কয়েকজন জানায়, তারা উৎপাদকের কাছ থেকে মাছ পেয়ে বাজারে বিক্রি করে। তবে সেই পরিমাণ অতীব নগণ্য। যারা মাছ উৎপাদন করছে তারা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন মাছগুলোর সাথে পিরানহা মাছ ও ব্যবসায়ীদের নিতে বাধ্য করছে। ব্যবসায়ীরা পিরানহা মাছ নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলে এই মাছ চাষিরা ব্যবসায়ীদের কাছে মাছ বিক্রয় বন্ধের হুমকি দেয়। অনেকটা বাধ্য হয়েই মাছ বাজারজাতকারীরা ভয়ানক এই পিরানহা মাছ ক্রয় করছে। এ দিকে কয়েকটি সূত্র থেকে জানা যায়, ভয়ানক পিরানহা মাছ মানুষ যদি খায় তবে আতঙ্কের কিছু নেই কিন্তু পিরানহা মাছ এমন একটি মাছ যারা দেশী প্রজাতির মাছ ও অন্যান্য মাছকে সহজেই খেয়ে ফেলে। ফলে এই ক্ষতিকর পিরানহা মাছ চাষ অব্যাহত থাকে ও খাল-বিল নদী নালায় ছড়িয়ে পড়ে তবে ভবিষ্যতে খাল বিলে নদী তবে দেশি মাছসহ অন্যান্য কোন মাছই আর না থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণেই ভয়াবহ ক্ষতিকর এই পিরানহা মাছ চাষ ও বাজারজাত করণে প্রশাসনের আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সচেতন মহল অভিমত ব্যক্ত করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন