মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

দামুড়হুদায় আগাম পাট কাটা শুরু ন্যায্যমূল্য না পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা

প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে

দামুড়হুদায় আগাম পাট কাটা শুরু হয়েছে। হাট-বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে নতুন পাট। মহাজন-ফড়িয়ারা আনন্দে থাকলেও দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা পাট চাষিদের। জানা গেছে, বেশ ক’বছর ধরে দামুড়হুদার কৃষকরা প্রতিকূল আবহাওয়াসহ কাঙ্খিত বাজার দর না পেয়ে লোকসানগ্রস্ত হওয়ায় অনেকে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয় কৃষি বিভাগ। গত বছর সরকার পাটের হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে সেইসাথে পরিবেশ রক্ষায় পাট উৎপাদন ও পলিথিন, সিন্থেটিকের পরিবর্তে পাটের ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য বাজারজাত করতে পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহারের উপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করে আইন পাস করে। প্রশাসনিকভাবে আইনের প্রয়োগ শুরু করায় মানুষ পাটের তৈরি ব্যাগ ব্যবহারের প্রতি উৎসাহিত হতে শুরু করে। ফলে দেশে কাঁচা পাটের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গত মৌসুমে পাটের বাজার দরও বেড়ে যায়। তারই ফলশ্রুতিতে বেশ ক’বছর পর চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে প্রায় দেড়গুণ পরিমাণ জমিতে পাটের আবাদ করে এলাকার কৃষকরা। মৌসুমের শুরু থেকেই পরিমিত বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের গাছও ভালো হয়েছে। সেইসাথে রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণও কম। বর্তমানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাট পচানো নিয়ে পাটচাষিদের তেমন একটা দুশ্চিন্তা নেই। অনেকেই পাট কেটে ওই জমিতে ধান লাগানোর জন্য আগাম বোনা পাট কাটা শুরু করেছেন।
ইতেমধ্যেই হাট-বাজারেও কিছু কিছু নতুন পাট আসতে শুরু করেছে। তবে পাটের ছাল ভালোভাবে পুরু হতে এখনো সময় লাগবে। তাই উপযুক্ত সময়ে পাট কাটলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন পাটচাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমি। সেক্ষেত্রে অর্জিত হয়েছে ১০ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমি। যা গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর বেশি। উপজেলার পাটচাষি গোপালপুর গ্রামের শরিফ উদ্দীন বলেন, জমির ভুট্টা তুলে পাট বপনের জন্য ২ বিঘা জমিতে চাষ দিয়ে রেখেছিলাম। মৌসুম শুরুর আগেই আগাম বৃষ্টিপাত হওয়ায় জমিতে জো আসার সাথে সাথে পাট বুনানি করেছিলাম। মাটিতে জো থাকায় চারাও ভালো গজায়। এরপর থেকেই বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাটের গাছও ভালো। ফলনও ভালো হবে আশা করছি। ছয়ঘরিয়া গ্রামের পাটচাষি আজিজুল বলেন, কয়েক বছর পাটের আবাদ করে দাম ভালো না পওয়ায় লোকসান হয়েছে। গত বছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করে ভালো বাজারদর পেয়েছিলাম। তাই এবার ৪ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। তবে বাজারদর নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। কারণ, গত তিন মাসে প্রতি মণ পাটের দর কমেছে সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। তাই পাট পুরাপুরিভাবে ওঠা পর্যন্ত বাজারদর ভালো না পেলে চাষিরা আবারো লোকসানগ্রস্ত হয়ে পাটের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। উপজেলার দর্শনা মোকামের পাট ব্যবসায়ী হাজী আ. রহমান জানান, কয়েকদিন থেকে দু’চার মণ করে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ নতুন পাট ১৬শ’ থেকে সাড়ে ১৬শ’ টাকায় কেনা-বেচা হচ্ছে। তবে মাস দুয়েক আগে প্রতি মণ পুরনো পাট সাড়ে ২৩শ’ থেকে ২৪শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন