আম্পান’র ক্ষতির রেশ ধরে মাত্র পনের দিনের ব্যবধানে দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের শাক-সবজির অগ্নিমূল্য সাধারন মানুষের দূর্ভোগকে অনেকগুন বাড়িয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে দেশের দক্ষিণাঞ্চল সহ সবজির মূল উৎস দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগানের ব্যপক ক্ষতি হওয়ায় সপ্তাহখানেক ধরে সরবারহ ঘাটতিও বেড়েছে। ফলে গত কয়েকদিনে গ্রীষ্মকালীন সব ধরনের শাক-সবজির দামও বেড়েছে দ্বিগুন থেকে ৩গুন পর্যন্ত। খুচরা সবজি বিক্রেতাদের দাবী তারা রাত ৩টার সময় আড়তে গিয়েও সবজি কিনতে পারছেন না। যাও মিলছে তা পাইকারি ৫০ টাকা কেজির নিচে নয়।
ফলে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের খুচরা বাজারে এখন ৬৫-৭০ টাকা কেজির নিচে কোন সবজি মিলছে না। পটল, কড়লা, কাকড়োল-এর কেজি খুচরা ৬৫-৭০ টাকা। দিন কয়েক আগেও এসব সবজি ছিল ২৫Ñ৩০ টাকা কেজি। কাঁচা পেপেও ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রী হচ্ছে। তবে এসব সবজিরই সরবারহ ঘাটতি মারাত্মক। আম্পানে যশোর, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর এলাকায় সবজি বাগানের মারাত্মক ক্ষতির কথা জানিয়ে বরিশালের পাইকারী বাজারের আড়তদাররা বলছেন, ঐসব এলাকা থেকে সরবারহ ঘাটতির কারনে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। আর বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবজি বাগানের ক্ষতি হয়েছে যথেষ্ঠ। ফলে স্থানীয়ভাবে সবজির যোগানেও ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক আম্পানে দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলায় কৃষি খাতে ক্ষতির পরিমান প্রায় ৫শ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে সবজির যোগানে ঘাটতির কারনে দামও বেড়েছে লাগামছাড়া ভাবে। এমনকি লাউ সহ বেশকিছু সবজির সরবারহ বন্ধই হয়ে গেছে। সবজির সাথে শাকের দামও আকাশ চুম্বি। দিন দশেক আগে যে লাল শাকের আঁটি ছিল ১২-১৫ টাকা, এখন তা ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রী হচ্ছে। লাউ শাক, কলমি শাক থেকে শুরু করে সব ধরনের শাকের দামও আকাশচুম্বি।
ফলে নি¤œবিত্ত ও নি¤œÑমধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর দূর্দশা আরো এক ধাপ বেড়েছে। ইতোমধ্যে বর্ষা দক্ষিণাঞ্চলের দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে। বর্ষা মাথায় নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌশুমী বায়ু দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপক’লে পৌছে গেছে। আগামী সপ্তাহখানেকের মধ্যে তা দক্ষিণাঞ্চলে পৌছে বর্ষার স্বাভাবিক বিস্তার ঘটাবে। ফলে খুব সহসা আর গ্রীষ্মকালীন সবজির স্বাভাবিক যোগান আশা করা যায়না বলে জানিয়ে পাইকারী বাজারের আড়তদারগন বলছেন, ‘বাজারে সবজীর দাম স্বাভাবিক হতে অনেক সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন