পঞ্জিকার হিসাবে গ্রীষ্মকালের অবসান হয়নি। এ বছরের গ্রীষ্ম ঋতু তার তাপদাহের তেমন তীব্র তেজ দেখাতে পারেনি। করোনাকালে প্রকৃতির ‘সদয় ও সহনীয়’ আচরণে বিচ্ছিন্ন কিছু এলাকা ও দিন বাদে পুরো গ্রীষ্মকাল অতিবাহিত হতে চলেছে প্রশান্তির মেঘের ছায়া, বৃষ্টির ধারা, হিমেল বাতাস ও স্নিগ্ধতায়। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ সপ্তাহেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু অর্থাৎ বর্ষাকাল এ মুহূর্তে বাংলাদেশে একটু আগেভাগেই এসে গেলো। দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে ১৫ জুন নাগাদ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুমালা আগমনের কথা জানানো হয়। ১৫ জুন আষাঢ়ের পয়লা দিবস।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগ হয়ে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে বর্ষার মৌসুমী বায়ুমালা। এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। আসছে সপ্তাহে বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধির পূর্বাভাস রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে যে সুস্পষ্ট লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে সেটি যদি ঘনীভ‚ত হয় এবং মৌসুমী নিম্নচাপে পরিণত হয় তাহলে সারাদেশে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ, কোথাও কোথাও সাময়িক অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) আবহাওয়া সতর্কবাতায় আবহাওয়াবিদ মো. আফতাব উদ্দিন জানান, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের সমুদ্র উপক‚লের কাছাকাছি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। একই সাথে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের সমুদ্র উপক‚লীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সমুদ্র উপক‚ল উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থারত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপক‚লের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। গভীর সমুদ্রে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য আবহাওয়াগত অবস্থা অনুক‚লে রয়েছে।
আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া সহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
উত্তরঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ কেটে যেতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরও অগ্রসর হতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন