এ বছরের হজযাত্রা বাতিলে সউদী আরবের সিদ্ধান্তে মুসলমানরা হতাশা প্রকাশ করেছেন, তবে দেশটি করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়াই করায় অনেকেই এটিকে প্রয়োজনীয় বলে মেনে নিয়েছেন। রিয়াদ গত সোমবার বলেছে যে, দেশটিতে ইতোমধ্যে কেবলমাত্র হজের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে এবং তা হবে ‘অত্যন্ত সীমাবদ্ধ’। আধুনিক সউদী ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিদেশি হজযাত্রীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ পদক্ষেপটি কিছু সময়ের জন্য অনিবার্য বলে মনে হয়েছিল এবং বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে তা হজযাত্রা বাতিল করে দিয়েছিল। তবে এ ঘোষণা এমন মুসলমানদের হতাশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে যারা বিশাল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে এবং দীর্ঘকাল অপেক্ষার পর হজে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন।
‘বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার ৬৮ বছর বয়সী কামারিয়াহ ইয়াহিয়া বলেছেন, ‘এ মাসের গোড়ার দিকে তার দেশের নাগরিকদের হজ্জযাত্রা নিষেধ করা হয়। ‘আমি বছরের পর বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আমি কী করতে পারি? এটি আল্লাহর ইচ্ছা - এটিই নিয়তি’।
হজযাত্রীদের খেদমতে নিয়োজিত ইন্দোনেশিয়ার প্রায় আড়াইশ এজেন্সীর প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল বলেছে, তারা বুঝতে পেরেছেন যে, জুলাইয়ের শেষের দিকে নির্ধারিত পাঁচ দিনের এই অনুষ্ঠানটি এই মুহূর্তে ‘খুব ঝুঁকিপূর্ণ’ হবে। তবে হজ ও ওমরাহ আয়োজক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিয়াম রেসফাদি বলেছেন, তার দলের কিছু সদস্য ‘কর্মচারীদের ছাঁটাই করা বা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন - কয়েক মাস ধরে তাদের কোনও আয় হয়নি’।
সক্ষম ব্যক্তিদের জীবদ্দশায় কমপক্ষে একবারে হজ্জ পালন করতে হয়। এবার উন্মুক্ত রাখলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের একটি বড় উৎস হিসাবে পরিণত হতে পারে।
হজ এজেন্সিগুলির এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ হাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে ‘অনেক লোক ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন’ তবে এটি সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো নয়, বেশিরভাগ বাংলাদেশি হজযাত্রী প্রবীণ এবং তারা কোভিড-১৯ এর ঝুঁকিতে আছেন’।
প্রতিবেশী ভারতে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী বলেছিলেন যে, ২০২০ সালে ২ লক্ষাধিক লোক হজ্জের জন্য আবেদন করেছিলেন এবং তারা হজযাত্রার জন্য জমা হওয়া অর্থের পুরোটা ফেরত পাবেন। সউদী আরবের হজ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, হজযাত্রা ইতোমধ্যে সউদীতে অবস্থানরত বিভিন্ন জাতীয়তার লোকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে, তবে তারা কোনও সংখ্যা নির্দিষ্ট করেনি।
হতাশা সত্তে¡ও কিছু মুসলমান ইতোমধ্যে ২০২১ সালের অপেক্ষায় রয়েছেন এবং তারা আশা করেন, সে বছর হজযাত্রা করতে সক্ষম হবেন। ইন্দোনেশিয়ার ইয়াহিয়া বলছিলেন, ‘আমি এখনও আশা করছি যে, পরের বছর হজ করতে যাব, এবং দোয়া করব যেন ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকি’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন