করোনা মহামারীর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি আদায়ে চাপ দেয়া হচ্ছে অভিভাবকদের। অন্যদিকে ফি আদায় না হলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। উভয় পক্ষই বিষয়টি বিবেচনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানিয়েছে। করোনাকালীন এই সময়ে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি আদায় এবং পরিশোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অভিভাবক উভয় পক্ষকেই মানবিক আচরণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। যতটা সম্ভব শিক্ষার্থীদের বেতন ছাড় দেয়ার জন্য স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান তিনি।
কনিবার (২৭ জুন) এডুকেশন রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত ‘করোনায় শিক্ষার চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
দীপু মনি বলেন, বড় একটা সমস্যা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি দেওয়া নিয়ে। ফি না পেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শিক্ষকদের কি করে বেতন দেবে? আর শিক্ষকরা তো অধিকাংশই বেতনের উপর নির্ভরশীল। কেউ কেউ টিউশনি করাতেন, এখন তো সব বন্ধ। কারণ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা এক রকম নয়। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজেদের কিছুটা হলেও আগামী ক’মাস চলার মতো, কোনোভাবে চলার মতো সামর্থ্য আছে তাদেরকে অনুরোধ করব ফি’কে কিস্তিতে হোক বা কিছুদিন বাদ দিয়ে পরে নেওয়া হোক, সেটি করতে পারেন ভালো। না হলেও দেখেন কতটা ছাড় দেওয়া যায়, সেটা চেষ্টা করবেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা খারাপ, তারা অন্যান্য ঋণের জন্য চেষ্টা করতে পারেন, আমরাও সে ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারি।
অভিভাবকদেরও উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদেরও কিছু ছাড় দিতে হবে, কারণ কিছু না কিছু বেতন তো দিতে হবে। আপনার সন্তান পড়াশোনা করছে, এখন প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে মানে তো সেই বেতন বন্ধ করে দেওয়া যায় না। যেমন আপনি হয়ত কাজে যেতে পারছেন না, কাজ বন্ধ আছে, কিন্তু আপনি কি তার জন্যে বেতন চাইবেন না? সরকারি হলে তো পুরো বেতনই পাচ্ছেন, সরকারি না হলে হয়ত বেতন কম দিচ্ছে, এখানেও আপনার সন্তানের ফি যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে দেওয়া উচিত। যেসব অভিভাবক এই সঙ্কটে আর্থিক সমস্যায় পড়ে সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন দিতে পারছেন না, তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রী।
দীপু মনি বলেন, যদি আপনার সামর্থ্য না থাকে সেক্ষত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারাও যদি কিছুটা ছাড় দিতে পারে, কিছুটা কিস্তিতে নিতে পারে, যতদূর সম্ভব উভয় পক্ষকেই আসলে মানবিক আচরণ করতে হবে। কারণ এটি এমন একটি সময় যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনের কথা ভাবব, তেমনি আমাদের কিন্তু টিকে থাকবার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমার যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এরপর আপনার সন্তানটিকে আপনি কোথায় ভর্তি করাবেন? সেটি সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের দুশ্চিন্তা নিশ্চয়ই। এজন্য নিজেদেরও চলতে হবে। এর মধ্যে যতটা সম্ভব আমাদের উভয় পক্ষকে ছাড় দিয়ে এবং মানবিক আচরণ করে এই দুর্যোগের সময়টা আমাদের পার করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন