গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে এক শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। মিলন হোসেন ৮ বছর আগে কোটালীপাড়া এস এন ইনস্টিটিউশনের বিজ্ঞান বিভাগে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। একাধিক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাধিকবার শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় তার বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ গত বুধবার কলেজ পড়–য়া ওই বিদ্যালয়টির এক সাবেক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন ওই শিক্ষক। বিষয়টি ওই ছাত্রী তার অভিভাবকদের জানায়। ছাত্রীর অভিভাবক ঘটনাটি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আতিকুজ্জামান বাদলকে জানান। আতিকুজ্জামান বাদল গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের জরুরি সভা ঠেকে শিক্ষক মিলন হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এই সভা থেকে ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়।
আতিকুজ্জামান বাদল বলেন, মিলন হোসেন এ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই একাধিক ছাত্রীকে উত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়ে একাধিকবার শালিস বৈঠক করা হয়েছে। মিলন হোসেন মেধাবী শিক্ষক হওয়ার কারণে এতোদিন তাকে বিদ্যালয়ে রেখেছি। তাকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু সে সংশোধন হয়নি। তাই তাকে আমরা সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সে দোষি প্রমাণিত হলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, আমার মেয়েকে শিক্ষক মিলন দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে জানিয়েছি। এসএসসি পাশ করা এক ছাত্রী বলেন, নির্বাচনী পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার কথা বলে স্যার মিলন হোসেন আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমি বিষয়টি কয়েকজন শিক্ষককে জানিয়েছিলাম। শিক্ষকগণ তখন মান সম্মানের দিকে তাকিয়ে আমাকে চেপে যেতে বলেছিলেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, মিলন হোসেনের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে শিক্ষক সুলভ কোনো আচরণ করেন না। এছাড়া তার বিষয়ে আমার আর বেশি কিছু বলার নেই।
শিক্ষক মিলন হোসেন বলেন, ভালো শিক্ষক হিসেবে এলাকায় আমার একটি সুনাম রয়েছে। আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য আমাকে সময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তবে তিনি ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার কথা অস্বীকার করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ধরণের খারাপ শিক্ষক বিদ্যালয়ের রাখা ঠিক নয়। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি যে প্রতিবেদন দেবে তার প্রেক্ষিতে আমরা মিলন হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন