এমএস এমরান কাদেরী, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) থেকে
বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন এলাকার সড়কগুলোর নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সামান্য বৃষ্টিতে ক্ষত-বিক্ষত এসব সড়ক দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। জানা যায়, একদিকে উপজেলার আভ্যন্তরীণ সড়কগুলো সংস্কারের অভাবে এমনিতেই নাজুক অবস্থা, এর উপর বিগত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে এসব সড়কের অস্তিত্বই এখন বিলীন হওয়ার পথে। সরকারি এক হিসেব মতে, উপজেলার ২৯১ কিলোমিটার কাঁচা, ১৪০ কিলোমিটার আধাপাকা ও ৫৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা রয়েছে বলে দাবি করা হলেও স্থানীয় বিভিন্ন এলাকাঘুড়ে এর ব্যতিক্রম হিসাব পরিলক্ষিত হয়েছে। সরকারি খাতায় পাকা রাস্তাগুলোর বিটুমিন আর আধাপাকা রাস্তাগুলোর ইট- সুড়কি উঠে গিয়ে সড়কজুড়ে এখন বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে তাতে কাদাপানিতে একাকার হয়ে আছে। অপরদিকে কাঁচা রাস্তাগুলোর বেশিরভাগই ইতোমধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পথে এসে ঠেকেছে। এমনকি উপজেলা সদর ও পৌর সদরের অনেক সড়কের অবস্থা এখন শোচনীয় হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কগুলো কাদা-পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে লেখালেখি অনেক হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই যেন কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙানো যাচ্ছে না। এসব সড়ক দিয়ে যাতায়াতে পথচারীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, সড়কগুলোর নামে সরকারি খাতে টিআর, কাবিখা-কাবিটা, কিংবা অন্যান্য খাত হতে সরকারি বরাদ্দ কিংবা অনুদান ঠিকই আছে, কিন্তু সুষ্ঠু তদারকি কিংবা যথাযত নজরদারির অভাব অথবা তদারকির কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে গোপন চুক্তির হিসাব মতে, হালুয়া-রুটির ভাগ-ভাটোয়ারার ফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। কোনো কোনো ঠিকাদার সড়ক বা রাস্তায় লোক দেখানো সামান্য কাজ চালালেও অনেক ক্ষেত্রে বরাদ্দের পুরো টাকাটাই হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ সংক্রান্ত বেশকিছু অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লাল ফিতায় বন্দি হয়ে পড়ে থাকলেও এ যাবৎ কারো বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা তা কেউ জানে না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। সরকারি খাতায় নাম আছে বরাদ্দও হচ্ছে নিয়মিত, কিন্তু সড়কগুলো দিয়ে ভালোভাবে গাড়ি চলাচল করবে দূরে থাক মানুষ পর্যন্ত চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। নির্বাচনের সময় এসব সড়ক নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে প্রার্থীদের দর কষাকষি হয়। শর্ত ওঠে ভোট দেবেন রাস্তা নতুন করে তকতকে ঝকঝকে করে দেব। কিন্তু নির্বাচনে জিতে বেমালুম সব ভুলে যান। লোক দেখানো সামান্য কাজ হলেও এতে জনগণের ভোগান্তি বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া এখানকার সড়কগুলোর অবস্থা দিন দিন চরম পর্যায়ে পৌঁছালেও উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ বা এলজিইডি বোয়ালখালী দফতরের কোনো খবরই নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন