কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা
সুন্দরবনের ডিমালয় থেকে অবাধে মাছ আর কাঁকড়া শিকার চলছে। এভাবে অভায়ারণ্য সুন্দরবন খ্যাত খাল থেকে মাছ কাঁকড়া শিকার চলতে থাকলে অন্য সময়ের মধ্যে সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলো মাছ ও কাঁকড়া শূন্য হয়ে পড়বে। সুন্দরবনের কর্মরত জেলে শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর গ্রামের শাহিনুর গাজী, দলিল মোল্যা, চুনকুড়ি গ্রামের অমল, রহিম ফকির জানান, বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ নদী এবং সাগর থেকে সুন্দরবনে পেটিকাটা, ঝিঙেবাড়িয়া, কাছিকাটা, দ্যারগাং, পোড়াকাটলা ছোট ছোট খালে ডিম ছাড়ার জন্য অবস্থান নেয়। সরকারিভাবে অভায়ারণ্য এলাকায় জেলেদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও পুষ্পকাটি, লটাবেকি বন কর্মকর্তাদের নৌকা প্রতি ১হাজার টাকা এবং বনদস্যুদের নৌকা প্রতি ৬হাজার টাকা দিয়ে ২/৩ শত জেলে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে। জেলেরা আরও জানায় সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী কদমতলা কোবাদক ও কৈখালী স্টেশন থেকে সাদা মাছ ও কাঁকড়া ধরার পাশ নিয়ে জেলেরা বনে প্রবেশ করে। এ সুযোগে তারা বনের মধ্যে টহল ফাঁড়ির বন কর্মকর্তাদের সাথে অলিখিত চুক্তিতে অভায়ারণ্য এলাকায় ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা লুকিয়ে নিষিদ্ধ পাটা জাল, কারেন্ট জাল সহ ডায়াজিনন, রিপকর্ড, ফাইটার, মার্শাল ও ক্যারাটে জাতীয় কীটনাশক নিয়ে যায়। জেলেরা জোয়ার লাগার কিছু আগে কীটনাশক চিড়া, ভাত বা অন্য কিছুর সঙ্গে মাখিয়ে ডিমালয়ে খালের পানিতে ছিটিয়ে দেয়। এর পর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এবং কাঁকড়া সে বিষের তীব্রতায় নিস্তেজ হয়ে পানিতে ভেসে ওঠে। আর সেগুলো পাটজাল এবং কারেন্ট জাল দিয়ে খুব সহজে কুড়িয়ে নৌকায় তোলা হয়। তিনি আরও বলেন দাদন ব্যবসায়ীদের দ্রুতগামী ট্রলারে বরফ দিয়ে শত শত মন ভেটকি, ভাঙ্গাল, মেদ, চরখোদা, পার্শ্বে, পাঙাশ, সিলেট, চাকা চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ এনে উপজেলার কলবাড়ি এবং সোনার মোড় আড়তে জমা করা হয়। সেখান থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করা হয়। সুন্দরবনের ছোট ছোট খালগুলোতে কীটনাশক ছিটানোর পানি পান করে সুন্দরবনের মায়াবী হরিণ এবং বাঘসহ নানা প্রাণী মারা যাচ্ছে। এ বিষয় সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা এসিএফ কেরামত আলী মল্লিক ইনকিলাবকে জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি যদি এরকম কোন জেলে জঙ্গলের মধ্যে পাওয়া গেলে তাদের প্রতি আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন