ঈশ্বরদীতে করোনা পরীক্ষার নামে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূল হোতা আবদুল ওহাব রানা (৪০) নামে একজন গ্রেফতার হয়েছে। সে ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের চর রুপপুর নলগাড়ী গ্রামের জাামাত আলীর ছেলে ও রুপপুর মেডিকেয়ার নামক একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী। এই চক্রের অপর ২ সদস্য হলো ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাঃ আবু সাঈদ (৪৫)ও নাটোরের বরাইগ্রাম উপজেলার নাটাবাড়ীয়ার আরশেদ আলী সরকারের ছেলে সুজন আহাম্মেদ (৩৩)।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ সেখ মোঃ নাসীর উদ্দীন জানান, উল্লেখিত ব্যাক্তিরা যোগসাজশ করে গত ৬ জুলাই থেকে ৭জুলাই পর্যন্ত রুপপর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১শ ৭০জন শ্রমিকের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে। পরীক্ষা বাবদ প্রত্যেকের কাছ থেকে গ্রহণ করা হয় ৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে টাকার পরিমান দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা। সংগ্রহকৃত নমুনার মধ্যে ৫০ জনের রিপোর্টও জানিয়ে দেয়া হয়। তাদের ভাষায় নমুনাগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে ব্রাম্মনবাড়ীয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ফলাফল সব গুলোই ন্যাগেটিভ এসেছে । বাঁকি গুলোও পরীক্ষার জন্য রুপপুর মেডিকেয়ারে মজুদ রয়েছে। আসলে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুয়া। মূলতঃ রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের শ্রমিক কর্মচারী হিসেবে চাকরি করতে হলে বর্তমানে করোনা ন্যাগেটিভ সার্টিফিকেট জমা দেয়া বাধ্যতামূলক তাই ঐ প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি ভুয়া সার্টিফিকেট না দিয়ে ভুয়া নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার নাটক করেছে যোগ সাজসে এবং ধারাবাহিক ভাবে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখে কোটি টাকার বানিজ্য করার ফাঁদ পেতে ছিল। গোপন সূত্রের মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে ঈশ্বরদী থানার সাব -ইন্সপেক্টর মোঃ ফিরোজ হোসেন উর্ধতন কর্মকর্তা কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে সংগীয় ফোর্সসহ গতকাল ৮ জুলাই রাত সাড়ে ১০টায় মেডিকেয়ার এর স্বত্বাধিকারী প্রতারক চক্রের হোতা আবদুল ওহাব রানাকে গ্রেফতার করে ঈশ্বরদী থানায় নিয়ে আসে। রাতভর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে রানা প্রতারণার সকল তথ্য সঠিক বলে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত রানা আরও জানায় যে করোনা পরীক্ষা করার কোন বৈধ অনুমতি তাদের নেই। এটি অসৎ উদ্দেশ্যেই তারা করেছে। এব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার মামলা নং ১৩তাং ৮/৭/২০ ধারা ৪১৮/৪১৯/৪০৬/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়েছে। ধৃত আসামীকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই প্রতারক চক্রের হোতা গ্রেফতার ও সকল তথ্য ফাঁস হওয়ায় রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারী প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন