শরীয়তপুর সংবাদদাতা
প্রবল বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে শরীয়তপুর জেলার ১৬ ইউনিয়নের ৫০টি গ্রাম। সেই সাথে পদ্মার ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় নদী পাড়ের মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছে। বেকার হয়ে পরেছে খেটে খাওয়া দিনমজুর পরিবারের মানুষেরা। গত শরিবার বন্যার পানিতে ডুবে জাজিরার নাওডোবায় ও বড়কান্দিতে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা, পূর্ব নাওডোব, পালেনচর, বড়কান্দি, কুন্ডেরচর, বিলাশপুরসহ ৭টি ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রাম। নড়িয়া উপজেলার বন্যাকবলিত ইউনিয়ন হলো মোক্তারেরচর, ঘড়িষার, কেদারপুর, চরাত্রা ও নওয়াপাড়া। এসকল ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম বন্যার পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। বন্যার পানি প্রবেশ করায় জাজিরা উপজেলার ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নড়িয়া উপজেলার ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। নড়িয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আরো অন্তত ২০টি বিদ্যায় বন্ধ হয়ে যাবে। এ দিকে পদ্মা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে জাজিরা, নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে। জাজিরার বড়কান্দি, পালেরচর ও কুন্ডেরচর ইউনিয়নের আরো তিন শতাধিক পরিবার ভাঙ্গনের ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরভাগা ও উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের ২শ’ পরিবার তাদের বসত ঘর সরিয়ে নিয়েছে। পদ্মার ভাঙ্গনে হারিয়ে গেছে উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্টেশন বাজার, এসডিএস নির্মিত বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, দুইটি মসজিদসহ বেশ কিছু বাড়ি-ঘর। বন্যার পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন ফসলের বীজতলা। এছাড়াও আগাম শাক সব্জির বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ দিকে বন্যার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে আজ রবিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হোসাইন খান এর সভাপতিত্বে জেলা দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটির সভা হয়েছে। সভায় জানানো হয়, আনুষ্ঠানিক ত্রাণ কার্যক্রম শুরু না হলেও ৪ লক্ষ নগদ টাকা, ৫০ টন চাল ও শুকনো খাবার ক্রয়ের জন্য ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসক ছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিভিল সার্জন ডা. মোঃ মসিউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মোঃ কবির হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যানগন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন