শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যাক ডেটে ৪জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই নিয়োগে প্রায় ৪০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, স্থানীয় লোকের দানের মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে পান্ডুল উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুনামের সাথে স্কুলটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৮৭সালে স্কুটিতে শাখা খোলার মাধ্যমে স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা দাঁড়ায় ২১জনে। এরইমধ্যে স্কুলের ৮জন শিক্ষক অবসর গ্রহণ করে শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩জনে। পরবর্তীতে জনবল কাঠামো সংশোধন করে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১২ জন শিক্ষক শিক্ষকতা করতে পারবেন। কিন্তু সরকারের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম আঞ্চলিক দাবানল পত্রিকায় সহকারি শিক্ষক (মৌলভী) ১জন, গণিত বিষয়ে-১জন, ব্যবসায় শিক্ষায় ১জন এবং সমাজ বিজ্ঞানে ২জন শিক্ষক নিয়েগের বিজ্ঞপ্তি দেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পর শুরু হয় নিয়োগ বাণিজ্য। সে সময় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শ্যমল সরকার, আব্দুল জব্বার, আব্দুল জলিলের লিখিত অভিযোগে জানা যায় এই নিয়োগে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে ৪০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। অভিযোগে আরও জানা গেছে তাদের স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। তাছাড়া শ্রেণি শাখা শিক্ষক নেয়ার এখতিয়ার কর্তৃপক্ষের নেই। এ ব্যাপারে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের স্কুল পরিদর্শক রবীন্দ্র নারায়ণ জানান, কোন শাখা খোলার অনুমতি ঐ বিদ্যালয়ে দেয়া হয়নি। এদিকে ভুক্তভোগি সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে আবেদনকারী ইয়াকুব আলী জানান, তিনি কোন ইন্টারভিউ কার্ড পাননি। চাকরি পাওয়ার আশায় সভাপতি রেজাউল করিমের সাথে ৮ লাখ টাকায় রফাদফা হয়। ইয়াকুব আলীর কপালে চাকরিতো জোটেইনি বরঞ্চ তার পাওনা টাকাও পায়নি। পান্ডুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাফ্ফর হোসেন মিয়া জানান, রাজশাহী বোর্ড ২০০২ সালে তার স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ২জন, ৭ম শ্রেণিতে ১জন, অষ্টম শ্রেণিতে ১জন, নবম শ্রেণিতে ১জন, দশম শ্রেণিতে ১জন করে শ্রেণি শাখায় ৬জন শিক্ষক সহ ১৮জন শিক্ষক শিক্ষকতা করতে পারবেন। অবসর গ্রহণের কারণে শিক্ষক সংখ্যা ১৩তে নেমে আসলে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম ৪জন শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। তবে শিক্ষক নিয়োগে টাকা পয়সার লেনদেনে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে তিনি দাবি করেন। নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি এবং কবে হবে তা তার জানা নেই। ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া যথাযথ নিয়মে হয়েছে। নিয়োগে কোন প্রকার দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন