কামাল হোসেন, শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ৪৬০ সড়কের বেশির ভাগই চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। ছোট-বড় খানাখন্দে ভরে গেছে এসব সড়ক। কোনো কোনো সড়কের পুরো পিচকাপের্টিং উঠে গেছে। আবার কোনো সড়কের দু’পাশ থেকেই ধসে গেছে। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েও চলাচল করছে মানুষ। জানা গেছে, সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত ও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় সড়কগুলোর এ বেহাল দশা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার মধ্যে সব চাইতে বেহাল অবস্থা ইসরাইল মোড় থেকে ধাইনগর সড়কে। ৮ বছরেও ১২ কিলোমিটারের এ সড়কের কোন সংস্কার হয়নি। এই সড়কটি বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ’র। এই রুটে চলাচলকারীরা জানান, ১২ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক পার হতে মিশুক ও ভুটভুটিতে সময় লাগে প্রায় একঘণ্টা। অথচ সড়কটি ভাল থাকলে সময় লাগত মাত্র ১৫-২০ মিনিট। সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত এনামুল হক তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলেছিলেন, নির্বাচনে বিজয়ী হলে সর্ব প্রথম শিবগঞ্জ-ধাইনগর রাস্তা উন্নয়ন করা হবে। কিন্তু তার দায়িত্ব পালনের সময় কাল পেরিয়ে গেলেও তিনি এই সড়কের কোনো উন্নয়ন করেননি। সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের আগে সব নেতারাই রাস্তার উন্নয়ন করে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বিজয়ী হওয়ার পর রাস্তার উন্নয়ন তো দূরের কথা এলাকায় তাদের দেখায় মিলে না। বর্তমানে ওই রাস্তার অবস্থা এতোটাই খারাপ যে, মানুষ পায়ে হেঁটেও চলাচল করতে পারছে না। এই রাস্তাটি বিএমডিএ’র নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও কর্তৃপক্ষ কোন খোঁজ রাখে না। বিএমডিএয়ের স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, ওই সড়ক ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। উক্ত সড়কটির ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৗশলীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, এই সড়কটি ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করতে হবে। কেননা ওই সড়কটিতে নতুন মাটি তোলার পরপরই পাকাকরণের কাজ করার ফলেই বর্তমানে রাস্তার বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এলাকাবাসী বর্তমান স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম রাব্বানীর কাছে রাস্তাটি উন্নয়ন করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও রাস্তাটি জরুরি ভিত্তিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে নতুনভাবে রাস্তার নির্মাণ অথবা সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দের দাবি জানান ধাইনগর ইউনিয়নবাসী। অপরদিকে শিবগঞ্জ-বিনোদপুর, সোনামসজিদ-বড়গাছী, কানসাট-বিনোদপুর সড়কের অনেক স্থান ভেঙে গেছে এবং খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কানসাটের নতুন বাজার থেকে লহলামারী বাজার পর্যন্ত সড়কেরও বেহাল দশা। দূর্লভপুর বাজার থেকে চামারহাট পর্যন্ত সড়কও যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শান্তিমোড় থেকে চাঁদপুর বাজার, খড়কপুর থেকে কয়লা দিয়াড় বাজার পর্যন্ত সড়কের ছোট-বড় গর্তের কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরের আওতাধীন উপজেলায় ৪৬০টি সড়ক রয়েছে। এসব সড়কের বেশির ভাগই যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এসব সড়কের কোন কোন রাস্তার দুই পাশ ভেঙে গেছে। আবার কোন রাস্তার মাঝখান ভেঙে বড় বড় খাদে পরিণত হয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মকবুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, টানা বর্ষণের ফলে অনেক রাস্তা ভেঙে গেছে। ভাঙা রাস্তাগুলো বর্ষার পরে পর্র্যায়ক্রমে মেরামত করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন