সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে রোববার (১৯ জুলাই) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকল শেয়ারবাজার। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেকোনো মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম) উঠে যেতে পারে-এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে শেয়ারবাজারে টানা বড় উত্থান হয়েছে। ওই টানা উত্থানে দাম বাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর এখন কিছুটা মূল্য সংশোধন হচ্ছে। তারা বলছেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারবাজারের প্রকৃত গতিপ্রকৃতি নষ্ট হচ্ছে। তারপরও বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়া ঠিক হবে না। আরও একটু সময় নিয়ে ফ্লোর প্রাইসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
এ বিষয়ে ডিএসই’র এক সদস্য বলেন, এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান বলেছেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে কথা বলে যতদ্রুত সম্ভব ফ্লোর প্রাইসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছে শিগগির ফ্লোর প্রাইস উঠে যাবে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়েছে।
তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে শেয়ারবাজার প্রকৃত চিত্র হারিয়েছে। এটা ঠিক আছে। তবে ফ্লোর প্রাইসের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। আস্তে আস্তে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসছে। এই মুহূর্তে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নিলে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই আপাতত ফ্লোর প্রাইস না উঠিয়ে আরও একটু সময় নেয়া উচিত। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসলে বাজারের গতি এমনিতেই বাড়বে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৫০ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ ৬ পয়েন্ট কমে ৯৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দিম কমেছে ৭৮টির। আর ২০০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সূচকের এই পতনের দিনে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৩৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
টাকার অংকে ডিএসইতে সবথেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ৯ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, গ্রামীণফোন, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ১৫৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৮টির, কমেছে ৫০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮১টির।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন